কলকাতা :  মৌখিক পরীক্ষা না দিয়েই কীভাবে মেয়ের চাকরি  স্কুলে? মন্ত্রী পরেশ অধিকারীকে ( Paresh Chandra Adhikary ) জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট ( Calcutta HC) ।  হাইকোর্টের নির্দেশের পরেই মেয়েকে নিয়ে কলকাতা আসার জন্য রওনা দেন পরেশ অধিকারী। সঙ্গে ছিলেন মেয়েও। মঙ্গলবার তিনি মেয়েকে নিয়ে ট্রেনেও ওঠেন। অন্যদিকে. ফোন করেও মন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পারার দাবি সিবিআই সূত্রে। 



কোথায় পরেশ 
কিন্তু বুধবার ঘটল এক অবাক কাণ্ড। পদাতিক এক্সপ্রেস নির্ধারিত সময়ে কলকাতায় পৌঁছলেও, দেখা মিলল না মন্ত্রী পরেশ অধিকারী ও তাঁর মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারীর। একাদশ-দ্বাদশে শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে কাঠগড়ায় রাজ্যের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারী। তাঁর মেয়ের নিয়োগে দুর্নীতির ( teacher recruitment scam) অভিযোগে সিবিআইয়ের কাছে মন্ত্রীকে হাজিরার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। গতকাল কোচবিহারের মেখলিগঞ্জের বাড়ি থেকে জলপাইগুড়ি রোড স্টেশনে এসে পদাতিক এক্সপ্রেসে চড়েন সকন্যা মন্ত্রী। আজ সকাল ৬টা ৪৫-এ শিয়ালদা স্টেশনের ১৩ নম্বর প্ল্যাটফর্মে পৌঁছায় পদাতিক এক্সপ্রেস। ট্রেন অ্যাটেন্ড্যান্ট জানান, H1 কামরার নম্বর C কুপে ছিলেন পরেশ অধিকারী ও তাঁর মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারী। কিন্তু মাঝপথে তাঁরা ট্রেন থেকে নেমে যান বলে ট্রেন অ্যাটেন্ড্যান্টের দাবি।
কোনও কোনও সূত্রের খবর, তিনি মেয়েকে নিয়ে নেমে গিয়েছেন বর্ধমানে। তবে কি সকন্যা সড়ক পথে আসবেন মন্ত্রী ? নাকি আসবেন না ? নাকি অন্য কোনও ভাবনা ? বলবে সময়ই। 


ফরওয়ার্ড ব্লক ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন পরেশ অধিকারী

২০১৮ সালে ফরওয়ার্ড ব্লক ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন পরেশ অধিকারী। অভিযোগ, তার কয়েকদিনের মধ্যেই SSC’র তালিকায় তাঁর মেয়ের নাম উঠে যায়। সেই বছরই নভেম্বরে, চাকরিতে যোগ দেন পরেশ অধিকারীর মেয়ে অঙ্কিতা। যে নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগের প্রেক্ষিতে, সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। এবিষয়ে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, "তিনি সুবিধাবাদী রাজনীতি করার জন্য তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়েছিলেন। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে চুক্তি হয়েছিল। পরেশ অধিকারী বলেছিলেন আমার মেয়েকে চাকরি দিতে হবে। মেয়ের নাম ওয়েটিং-এ ছিল না। এই অভিযোগ তো সবাই করেছে। আমিও করেছি। দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করা বিচারপতি আইনি সিলমোহর দিলেন। এটা একেবারেই প্রমাণিত সত্য।''


বিতর্কের সূত্রপাত কী করে?


অভিযোগ, রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষক নিয়োগের জন্য স্কুল সার্ভিসের মেধা তালিকাকে কেন্দ্র করে শুরু হয় বিতর্ক। কলকাতা হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল, স্কুল সার্ভিসে নিয়োগের ক্ষেত্রে আগে মেধা তালিকা প্রকাশ করতে হবে। পিডিএফ ফরম্যাটে মেধা তালিকা প্রকাশ করা বাধ্যতামূলক। পরবর্তীতে এসএসসি-র ওয়েবসাইটে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের তফসিলি জাতির জন্য সংরক্ষিত আসনের ওয়েট লিস্টে দেখা যায় ববিতার নাম চলে গিয়েছে দ্বিতীয় স্থানে। প্রথম স্থানে রয়েছে পরেশ অধিকারীর মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারীর নাম। উল্লেখযোগ্য হল, এক দিন আগে পর্যন্ত তালিকায় নামই ছিল না অঙ্কিতার।  অন্যদিকে, ওয়েটিং লিস্টে ২০ নম্বরে থাকা ববিতা সরকারের নাম চলে যায় ২১ নম্বরে। অভিযোগ, প্রত্যেকে চাকরি পেলেও ববিতা সরকার চাকরি পাননি। ‘মেধা তালিকায় নাম নেই, কী করে চাকরি পেলেন মন্ত্রী-কন্যা?’ শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে হাইকোর্টে মামলা দায়ের হয়।