ওয়াশিংটন: যান্ত্রিক গোলযোগ বা আবহাওয়ার কারণে নয়, যাত্রী সমেত বিমান গুঁড়িয়ে দেওয়ারই নির্দেশ ছিল। ২০২২-এর ২১ মার্চ চায়না ইস্টার্ন এয়ারলাইন্সের বিমান দুর্ঘটনার তদন্তে উঠে এল এমনই তথ্য (China Eastern Airlines Plane)। ১২৩ জন যাত্রী এবং ৯ জন বিমান কর্মী মিলিয়ে মোট ১৩২ জনের মৃত্যু হয় ওই বিমান দুর্ঘটনায়। বিগত দু’মাস ধরে তা নমিয়ে কাটাছেঁড়া চলছে। তারই তদন্তে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এল।
মোট ১৩২ জনকে নিয়ে ভেঙে পড়ে বিমানটি
গত ২১ মার্চ কুনমিং থেকে গুয়াংঝৌ যাওয়ার পথে ভেঙে পড়ে চায়না ইস্টার্ন এয়ারলাইন্সের ৫৭৩৫ বিমানটি। চিনের (China) স্বতন্ত্র প্রদেশ গুয়াংচি ঝুয়াংয়ের পার্বত্য এলাকায় তীব্র গতিতে আছড়ে পড়ে বিমানটি। তার পর ২৭ মার্চ ককপিট ভয়েস রেকর্ডারটি উদ্ধার করা হয় ধ্বংসাবশেষ থেকে (Black Box)। দুর্ঘটনার আগের মুহূর্তে ককপিটের কথোপকথন জানতে, এপ্রিলের শুরুতে সেটি বেজিং থেকে পাঠানো হয় আমেরিকার ন্যাশনাল ট্রান্সপোর্টেশন সেফটি বোর্ডে।
সম্প্রতি ওই ভয়েস রেকর্ডার থেকে উদ্ধার হওয়া তথ্য চিনের হাতে তুলে দিয়েছে আমেরিকা। তার বিষয়বস্তু প্রকাশ বিশদে প্রকাশ করা না হলেও, তদন্তকারীদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য প্রকাশ করেছে আমেরিকার সংবাদমাধ্যম ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল। তদন্তকারী আধিকারিকদের উদ্ধৃত করে তারা জানিয়েছে, ইচ্ছাকৃত ভাবেই পার্বত্য এলাকায় ঢোকানো হয়েছিল বিমানটিকে। ককপিটের নির্দেশ অনুযায়ী, নীচু দিয়ে ওড়ানো হচ্ছিল। যে কারণে মিনিট খানেকের মধ্যেই মাঝ আকাশ থেকে প্রায় ২০ হাজার ফুট নীচে নামিয়ে এনে সজোরে নিক্ষেপ করা হয় খাড়া ঢালে।
আরও পড়ুন: Russia Ukraine War: পুতিনের যুদ্ধে মানবিক সঙ্কট, রাশিয়া ছাড়ার সিদ্ধান্ত ম্যাকডোনাল্ড’সের
চিন এবং আমেরিকার তদন্তকারীরা যৌথ ভাবে গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন। আমেরিকা থেকে তদন্তকারীরা দুর্ঘটনাস্থলও পরিদর্শন করেছে এসেছেন। দুর্ঘটনাগ্রস্ত বিমানটির নির্মাণ সংস্থা বা পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থা, কারও কাছ থেকেই এ নিয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও তথ্য মেলেনি। তবে তদন্তে এখনও পর্যন্ত যে তথ্য উঠে এসেছে, তাতে জানা গিয়েছে, দুর্ঘটনার আগে নিরাপদ উচ্চতা দিয়েই যাচ্ছিল বিমানটি। পরিস্থিতি স্থিতিশীল ছিল। আচমকাই একধাক্কায় ২০ হাজার ফুট নীচে নেমে আসে। আর এই গোটা বিষয়টিই ঘটে মাত্র এক মিনিটে।
আগেও ইচ্ছাকৃত ভাবে বিমান দুর্ঘটনা ঘটানোর নজির রয়েছে
দুর্ঘটনাগ্রস্ত বিমানটি বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স মডেলের বিমান ছিল। এর আগে, ২০১৮ এবং ২০১৯ সালে ওই মডেলের দু’টি বিমান দুর্ঘটনা ঘটে। সে বার দু’টি বিমানের নকশাতেই ত্রুটি ধরা পড়েছিল। এ বারেও তাই যান্ত্রিক গোলযোগের দিকেই শুরু থেকে জোর দেওয়া হচ্ছিল। কিন্তু ব্ল্যাক বক্সের রেকর্ডিং বিতর্কে হাওয়া জোগাল। এর আগে, ২০১৫ সালে ১৫০ জন যাত্রীকে নিয়ে ইচ্ছাকৃত ভাবে পাইলট আন্দ্রিয়াস লুবিৎজ জার্মানউইঙ্গসের ৯৫২৫ বিমানটির দুর্ঘটনা ঘটানো বলে জানা যায়।