কলকাতা: রাজ্যে একদিনে করোনা আক্রান্ত (Covid Positive) ফের ২৪ হাজারের কাছে! গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে নতুন করে করোনা সংক্রমিত (Corona Affected) হয়েছেন ২৩,৪৬৭ জন। রাজ্যে করোনায় একদিনে রেকর্ড ২৬ জনের মৃত্যু। দৈনিক সংক্রমণ-মৃত্যুতে রাজ্যে শীর্ষে কলকাতা।
কলকাতায় একদিনে ৬ হাজার ৭৬৮ জন সংক্রমিত। কলকাতায় একদিনে করোনায় ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। উত্তর ২৪ পরগনায় একদিনে ৪ হাজার ৭২৮ জন সংক্রমিত। পাশাপাশি সেখানে একদিনে করোনায় ৪ জন প্রাণ হারিয়েছেন। দক্ষিণ ২৪ পরগনায় একদিনে আক্রান্ত হয়েছেন ১ হাজার ৩৪৯ জন। ২ জনের মৃত্যু হয়েছে সেখানে।
পাশাপাশি সরকারি বুলেটিন অনুযায়ী হাওড়ায় একদিনে করোনায় ১ হাজার ২৮৯জন সংক্রমিত, ৪ জনের মৃত্যু। হুগলিতে একদিনে করোনায় ১ হাজার ৩৩৫জন সংক্রমিত, ৪ জনের মৃত্যু। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে করোনামুক্ত হয়েছেন ৮১৩৯ জন। আজ রাজ্যে সক্রিয় করোনা রোগীর সংখ্যা ১৫,৩০২ জন।
করোনার জেরে বিপর্যস্ত গোটা বিশ্ব। এরইমধ্যে বিশ্ব স্বাস্থ্য় সংগঠন (WHO) তাদের সাম্প্রতিকতম অতিমারী রিপোর্টে জানিয়েছে, গত সপ্তাহে সারা বিশ্বে নতুন করে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ৫৫ শতাংশ বেড়েছে। মঙ্গলবার রাতে জারি এই রিপোর্টে রাষ্ট্রপুঞ্জের এই স্বাস্থ্য় সংস্থা জানিয়েছে যে, গত সপ্তাহে প্রায় ১৫ মিলিয়ন অর্থাৎ দেড় কোটি মানুষ নতুন করে করোনা সংক্রমণের শিকার হয়েছে। এই সময় পর্বে ৪৩ হাজারের বেশি করোনা আক্রান্তর মৃত্যু হয়েছে। যদিও রিপোর্ট অনুসারে, মৃতের সংখ্যা স্থির রয়েছে। অন্যদিকে, আফ্রিকা ছাড়া সারা বিশ্বের বেশিরভাগ দেশেই করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। এক্ষেত্রে আফ্রিকায় কোভিড কেসের সংখ্যা প্রায় ১১ শতাংশ কমেছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংগঠনের মহা নির্দেশক টেড্রোস আধনোম ঘেব্রিয়েসাস বলেছেন, গত সপ্তাহে সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্তর সংখ্যা প্রায় দেড় কোটি। যা এক সপ্তাহে আক্রান্তের সংখ্যার নিরিখে এখনও পর্যন্ত সর্বোচ্চ। সারা বিশ্বে সংক্রমণের ক্ষেত্রে ডেল্টার পরিবর্তে দাপট দেখাচ্ছে করোনার নয়া ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন। বেশিরভাগ সংক্রমণ হয়েছে ওমিক্রন থেকে। ওমিক্রনের কারণে যাঁরা আগেও আক্রান্ত হয়েছেন, তাঁরাও ফের আক্রান্ত হচ্ছেন। অন্য দিকে, করোনা টিকা নেওয়ার পর করোনার নয়া ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রনের সংক্রমণ ঘটছে।
পরিসংখ্যান থেকেই স্পষ্ট, কতটা দ্রুত ছড়াচ্ছে করোনা সংক্রমণ। ১ ডিসেম্বর আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৬ লক্ষ ৭৮ হাজার । আর এক মাসের মধ্যে অর্থাৎ ১ জানুয়ারি আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয় ১৭ লক্ষ ৭২ হাজার। গত ১২ জানুয়ারি এই সংখ্যা বেড়ে হয় ২৮ লক্ষ ৪৬। অর্থাৎ, মাত্র ১২ দিনে করোনা আক্রান্তর সংখ্যা বেড়েছে ৯ লক্ষ। শুধু তাই নয়, করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে সবচেয়ে বেশি দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ছিল গত ২২ এপ্রিল প্রায় ৯ লক্ষ। কিন্তু তৃতীয় ঢেউয়ে ১২ জানুয়ারিতেই আক্রান্তের সংখ্যা ২৮ লক্ষের বেশি। অর্থাৎ, গত ঢেউয়ের তুলনায় দৈনিক আক্রান্তের এই সংখ্যা তিন গুণ বেশি।
করোনা সংক্রমণ এভাবে লাফিয়ে বাড়ছে। এরইমধ্যে বিভিন্ন দেশে দ্রুত টিকাকরণ হচ্ছে। কিন্তু বাস্তব হল, বিশ্বের জনসংখ্যার একটা বড় অংশ একটি টাকার একটি ডোজও পায়নি। অন্যদিকে, প্যান আমেরিকান হেল্থ অর্গানাইজেশনও ওমিক্রনকে কোনওভাবেই হাল্কাভাবে না নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে। বলা হয়েছে, ওমিক্রনকে সাধারণ ফ্লু ভেবে বসার ভুল একেবারেই চলবে না। সতর্কতার সঙ্গে করোনা বিধি মেনে চলতে হবে।