কলকাতা: সুপ্রিম কোর্টে ফের পিছিয়ে গেল মহার্ঘ্য ভাতা বা ডিএ মামলার শুনানি। সেপ্টেম্বর মাসের শুরুতে ফের শুনানি হাওয়ার সম্ভাবনা। মঙ্গলবার শীর্ষ আদালতে মামলার শুনানি শুরু হওয়ার কথা ছিল। বিচারপতি সঞ্জয় কারোলের বেঞ্চে আইটেম নম্বর ৪ ছিল পশ্চিমবঙ্গের DA মামলা। সেই মতো আদালতের কার্যক্রমও শুরু হয়। কিন্তু রাজ্য সরকারের আইনজীবী কপিল সিব্বল জানান, আজ যে 'কম্বিনেশনে' আদালত বসেছে, তাতে DA মামলার শুনানি হতে পারে না। (Supreme Court)
এতদিন আদালতে DA মামলার শুনানি করছিল যে বেঞ্চে, আজ সেই বেঞ্চে কিছু রদবদল হয়। বিচারপতি কারোলের সঙ্গে আজ আদালতে বিচারপতি গোপাল সুব্রহ্মণ্যম ছিলেন না। পরিবর্তে উপস্থিত ছিলেন বিচারপতি মেহতা। এতে বিচারপতি কারোল জানান, আজ DA মামলার শুনানি করবেন না তাঁরা। আগামী কোনও সোম বা শুক্রবার শুনানি হবে। একেবারে প্রথমেই মামলার শুনানি রাখবেন তাঁরা। এতে সিব্বল জানান, ১০ তারিখের পর কোন একটা তারিখে শুনানি হলে ভাল হয়। (DA Case)
কিন্তু অনলাইন মাধ্যমে শুনানিতে উপস্থিত হওয়া বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য আরও আগে শুনানি চাইছিলেন। তিনি জানান, অনেকটা শুনানি হয়ে গিয়েছে। রাজ্যের বিষয়গুলির শুনানি বাকি রয়েছে। এতে কাছাকাছি কোনও তারিখে শুনানি হোক। এতে বিচারপতি সঞ্জয় কারোল জানান, ৮ তারিখ বিচারপতি সুব্রহ্মণ্য়মকে পাওয়া যাবে না। সেক্ষেত্রে কোনও সোম বা শুক্রেই শুনানি হবে। একেবারে প্রথমেই শুনানি হবে DA মামলার। সিব্বল দুপুর ২টো নাগাদ শুনানি হলে সকলের সুবিধা হবে বলে জানান। আপাতত যা তথ্য মিলছে, সেই অনুযায়ী, সেপ্টেম্বরের শুরুতে শুনানি হতে পারে।
এর আগে DA মামলার শুনানিতে যে বিষয়টি মূল আলোচ্য বিষয় হয়ে উঠেছিল, তা হল, DA আদৌ মৌলিক অধিকার কি না। রাজ্য সরকারের আইনজীবীরা জানান, মূল্যবৃদ্ধিকে সামনে রেখে সহানুভূতি থেকেই রাজ্য সরকারি কর্মীদের DA দেওয়া হয়। কিন্তু রাজ্য সরকারকে কেন্দ্রীয় সরকারের হারে DA দিতে হবে বলে কোথাও লেখা নেই। সেই নিয়ে রাজ্যের উপর চাপ সৃষ্টি করা যায় না। কারণ DA তাঁদের মৌলিক বা আইনি অধিকারের মধ্যে পড়ে না। দেশের ১৩টি রাজ্যে যে কেন্দ্রীয় হারে DA দেওয়া হয় না, সেই কথাও আদালতে তুলে ধরেন রাজ্য সরকারের আইনজীবীরা। ১০০ দিনের কাজ, আবাস যোজনার কোনও টাকাই যে কেন্দ্র দেয়নি, রাজ্যের আর্থিক অবস্থা যে তেমন নয়, সেকথাও তুলে ধরা হয়।
বিচারপতি কারোলও এ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। দু'পক্ষের আইনজীবীরাও কার্যত একমত হন এব্যাপারে। রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য আদালতে বলেন, "ওটা হাইকোর্টের একটি পর্যবেক্ষণ ছিল মাত্র। নির্দেশের মূল বিষয় সেটা ছিল না। আমাদের মতে, এটি একটি বলবৎযোগ্য অধিকার, যেটা দিতে বাধ্য রাজ্য সরকার।" এতে বিচারপতি কারোল বলেন, "তার মানে আপনারা দু'পক্ষই বলছেন, এটা মৌলিক অধিকার নয়?" সরকারি আইনজীবীরাও তাতে সম্মতি জানান। রাজ্য সরকারের কর্মীদের কিছু টাকা দেওয়া যায় কি না, তার জন্যও আদালত সওয়াল করে। রাজ্য ঋণ নিতে পারে কি না, উঠে আসে সেই প্রশ্নও। কিন্তু ঋণ নেওয়ার বিষয়টি সম্পূর্ণ ভাবেই যে রাজ্যের এক্তিয়ারের মধ্যে পড়ে, আদালেত সেকথা তুলে ধরা হয় বলে জানান আইনজীবী ফিরদৌস শামিম।