কলকাতা: অশান্ত বাংলাদেশ থেকে অনুুপ্রবেশের সংখ্যা বাড়ছে। বাংলাদেশ সীমান্তকে ব্যবহার করে পাকিস্তান ভারতে নাশকতামূলক কাজকর্মে ইন্ধন জোগাচ্ছে বলেও মিলেছে ইঙ্গিত। এমন পরিস্থিতিতে রাজ্যের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। গোয়েন্দাদের চিন্তা বাড়াচ্ছে দুই দেশের কাঁটাতারহীন সীমান্তও। সীমান্ত এলাকায় নিরাপত্তায় যে খামতি রয়েছে, তা মেনে নিলেন রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার। (India-Bangladesh Border)


রবিবার দুপুরে সাংবাদিক বৈঠক করেন ডিজি রাজীব কুমার। সেখানে তিনি বলেন, "বাংলাদেশের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গে দীর্ঘতম সীমান্ত। প্রতিবেশি দেশের অস্থিরতার সুযোগ নিয়ে এ রাজ্যে সমস্যা তৈরি হতে দেব না আমরা। যারা সমস্যা তৈরির চেষ্টা করবে, তাদেরই গ্রেফতার করা হবে। সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেক কিছুই ছড়াচ্ছে। কিন্তু আমাদের শান্ত থাকতে হবে। সাধারণ মানুষ যদি কোনও তথ্য পান, আমাদের দিন। রাজ্যে শান্তি বজায় রাখতে সবরকম পদক্ষেপ করা হচ্ছে।" (Kolkata News)


এই বছর বাংলাদেশ থেকে আসা ৩০০ জন অনুপ্রবেশকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। রুজু হয়েছে ৮০টি মামলা। অনুপ্রবেশে সাহায্য়ের অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন ৫০ জন ভারতীয়। ভুয়ো পাসপোর্ট কারবারিদের খোঁজ মিলেছে যেমন, তেমনই অস্ত্রশিক্ষা হওয়া জম্মু ও কাশ্মীরের জঙ্গিও গ্রেফতার হয়েছে এ রাজ্যে। এমন পরিস্থিতিতে রাজ্যের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন বিরোধীরা। রাজ্য পুলিশের ভূমিকারও সমালোচনা করা হচ্ছে। 


সেই নিয়ে এদিন রাজীব জানান, বাংলার এসটিএফ-এর তথ্য়ের ভিত্তিতেই জম্মু ও কাশ্মীরের জঙ্গিকে গ্রেফতার করা হয়। এসব কথা জনসমক্ষে বলতে চান না তাঁরা। কিন্তু গত কয়েক দিনে এত কিছু বলা হয়েছে যে আজ বলতে বাধ্য হচ্ছেন। ডিজি জানান, উগ্রপন্থার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে পশ্চিমবঙ্গ এবং কলকাতা পুলিশের ট্র্যাকরেকর্ড সবচেয়ে ভাল। একমাত্র পশ্চিমবঙ্গ এবং অন্ধ্রপ্রদেশই উগ্রপন্থীদের রাজ্য থেকে বের করে দিতে সফল হয়েছে, আর কোনও রাজ্য না। 


পড়শি দেশ বাংলাদেশের পরিস্থিতি অস্থির। কিন্তু সেটাকে ব্যবহার করে যদি এ রাজ্যে কেউ সমস্যা সৃষ্টি করতে চান, এখানকার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির নষ্ট করতে চান। রাজ্য এবং দেশের জাতীয় নিরাপত্তা নষ্ট করতে দেওয়া যাবে না বলে জানান তিনি। 


বাংলাদেশ সীমান্তের দীর্ঘ এলাকা এখও কাঁটাতারহীন। এবিপি আনন্দের ক্যামেরাতেও বিষয়টি ধরা পড়েছে। সীমান্তের নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। এদিন সেই প্রসঙ্গে ডিজি জানান, সীমান্ত রক্ষার দায়িত্ব সীমান্তরক্ষী বাহিনী। সেখানে খামতি রয়েছে। সীমান্ত পেরিয়ে চলে আসছেন যাঁরা, তা নিয়ে যা তথ্য হাতে আসছে, সেই সব বিএসএফ-কে দেওয়া হয়েছে। এব্যাপারে মানুষের কাছ থেকেও তথ্য আসে। কিন্তু সব তথ্য মানুষের সামনে তুলে ধরা সম্ভব নয়, গোপনীয়তা বজায় রাখতে হয় বলে জানান রাজীব। 


নাশকতার ছড়ানোর লক্ষ্যে পশ্চিমবঙ্গকে করিডর হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে বলে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। সেই প্রসঙ্গে ডিজি জানান, পশ্চিমবঙ্গে তিন দেশের সীমান্ত। দেশের কোথাও যেতে গেলে পশ্চিমবঙ্গ ছাড়া উপায় নেই। ডিজির বক্তব্য়, "আমাদের উপর আস্থা রাখুন। আমরা দেখছি। কেউ কেউ দেখাতে চাইছেন, আমরা কিছু করছি না বলে। আমরা কিছু বলতে চাইছিলাম না। কিন্তু পরিস্থিতি দেখে বলতে বাধ্য হচ্ছি।"