ঋত্বিক প্রধান, পূর্ব মেদিনীপুর : জীবনের যাঁতাকলে পরিযায়ী শ্রমিকরা।  করোনা পরিস্থিতিতে কাজ হারিয়ে বাড়ি ফিরে অনেকে ভেবেছিলেন, আর ভিন রাজ্যে যাবেন না। সঞ্চয়ের টাকায় ছোটখাটো ব্যবসা শুরু করার কথাও ভাবতে শুরু করেছিলেন কেউ কেউ। কিন্তু এখন বন্যা পরিস্থিতিতে অনেকেরই ঘর বাড়ি ভেসে গেছে। 


ওলোটপালোট হয়ে গেছে সব পরিকল্পনা। পরিযায়ী শ্রমিকরা ভেবে পাচ্ছেন না, জমানো স্বল্প টাকায় মাথা গোঁজার ঠাঁই সারাবেন, নাকি ব্যবসা করবেন? জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, পূর্ব মেদিনীপুরের পটাশপুর বিধানসভা কেন্দ্রের প্রায় ২০ হাজার বাসিন্দাই পরিযায়ী শ্রমিক। তাঁদের অনেকেই গ্রাম পঞ্চায়েতের কাছে সাহায্যের প্রত্যাশী।  


স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক জানিয়েছেন, অনেকেরই বাড়িঘর ভেসে গেছে। গ্রাম পঞ্চায়েতগুলিকে বলা হয়েছে তথ্য সংগ্রহ করতে।  স্বনির্ভর প্রকল্পের মাধ্যমে তাঁদের জন্য কী করা যায়, তাও ভাবতে বলা হয়েছে। যদিও, এ নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি।  


বিজেপির কাঁথি সাংগঠনিক জেলার সভাপতি অনুপ চক্রবর্তী জানালেন , ' অনেকে বাড়ি ঘর হারিয়ে ত্রাণশিবিরে রয়েছেন। এঁদের নিয়ে কোনমও ভবানাচিন্তা করা হয়নি, বরং দলবাজি করা হয়েছে। মোদিজির আত্মনির্ভর ভারতের অনেক প্রকল্প রয়েছে যাতে এদের স্বনির্ভর করা যেত। রাজ্যকে অনুরোধ করব এ বিষয়ে ভাবতে। ' 


এ বিষয়ে পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক জানিয়েছেন, এই পরিযায়ী শ্রমিকদের ১০০ দিনের জব কার্ড করে কাজ দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে। 

কেলেঘাইয়ের বাঁধ ভাঙায়, পূর্ব মেদিনীপুরের পটাশপুর ১ ও ২ নম্বর ব্লকের লক্ষাধিক মানুষ সপ্তাহ দুয়েক ধরে জলবন্দি। জল সামান্য নামলেও, দুর্ভোগ কাটছে না পটাশপুরের পঁচেট এলাকার বাসিন্দাদের। প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে আর মাটির বাড়িতে থাকতে চাইছেন না কেউ। অগত্যা আবার ঠিকানা... ত্রাণ শিবির। ভেঙে পড়ার মুখে একের পর এক বাড়ি। অভিযোগ, পানীয় জল ঠিকমতো না পাওয়ায় বাড়ছে পেটের রোগ। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে মঙ্গল ও বুধবার উপকূলবর্তী পূর্ব মেদিনীপুরের ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। রবিবার থেকে বৃষ্টি শুরু হওয়ায় সিঁদুরে মেঘ দেখছেন পটাশপুরের বাসিন্দারা।