সৌভিক মজুমদার, কলকাতা: পুরসভায় (Municipality Corruption Case) নিয়োগ-দুর্নীতি মামলায় বিচারপতি অমৃতা সিন্হার (Justice Amrita Sinha) দ্বারস্থ রাজ্য। ওই মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Justice Abhijit Ganguly)। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যায় রাজ্য। একসপ্তাহের অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিয়ে মামলা আবার হাইকোর্টেই পাঠায় সুপ্রিম কোর্ট। সেই মামলাতেই এবার বিচারপতি অমৃতা সিন্হার দৃষ্টি আকর্ষণ  করে রাজ্য সরকার। প্রসঙ্গত, বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের পর্যবেক্ষণকে হাতিয়ার করে সওয়াল করেন বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীরা। কুন্তল ঘোষের চিঠি মামলায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে জিজ্ঞাসাবাদ করা উচিত বলে মন্তব্য করেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। সেই মামলারও শুনানি সোমবার। 


আর যা...
দিনদুয়েক আগেই বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের কাছ থেকে প্রাথমিকে নিয়োগ সংক্রান্ত ২টি মামলা গিয়েছিল বিচারপতি অমৃতা সিন্হার বেঞ্চে। সৌমেন নন্দী এবং রমেশ মালিকের দায়ের করা মামলাদুটিই বিচারপতি অমৃতা সিন্হার এজলাসে যায়। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে মামলাদুটি সরানোর সিদ্ধান্ত নেন হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি। প্রাথমিকের নিয়োগ সংক্রান্ত ২টি মামলা বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বেঞ্চ থেকে সরানোর নির্দেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের দেওয়া সাক্ষাৎকারের তর্জমার সত্যতা বিচার করে নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় প্রথমবার হাইকোর্টে উঠেছিল অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় আদালতে বলেছিলেন, 'অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়-কুন্তল ঘোষকে খুব দ্রুত জিজ্ঞাসাবাদ করা উচিত সিবিআইয়ের'। এরপরই ১৩ এপ্রিল বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে মামলা হয়। সেই মোতাবেক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মামলায় স্থগিতাদেশের মেয়াদ বৃদ্ধি কথা জানায় সুপ্রিম কোর্ট। তাৎপর্যপূর্ণভাবে সেদিন এবিপি আনন্দে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সাক্ষাৎকারের প্রসঙ্গ ওঠে সুপ্রিম কোর্টে।১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২২-এ এবিপি আনন্দের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট সুমন দে-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারের একটি ৪ পাতার তর্জমা সেদিন কোর্টে পেশ করেন অভিষেকের আইনজীবী। এরপরই এবিপি আনন্দকে সাক্ষাৎকার নিয়ে হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলকে নির্দেশ দেয় আদালত। প্রধান বিচারপতি বলেন, সেই সাক্ষাৎকারে বিচারপতির বক্তব্য এবং মন্তব্য নিয়ে গোটা বিষয়টি তিনি জানাতে চান। সেই সাক্ষাৎকারের তর্জমার সত্যতা বিচার করেই প্রাথমিকের নিয়োগ সংক্রান্ত ২টি মামলা বিচারপতি গঙ্গোপাধ্য়ায়ের কাছ থেকে সরানোর নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। গত শুক্রবার রাতে সেই নির্দেশ নিয়ে মুখ খোলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্য়ায়। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন, আগামীদিনে দুর্নীতি সংক্রান্ত আরও মামলা তাঁর হাত থেকে সরিয়ে নেওয়া হতে পারে।পাশাপাশি, চাকরিপ্রার্থীদের প্রসঙ্গে বিচারপতি বলেন, আপনাদের বসে থাকার দিন, হয়তো আপনাদের মৃত্য়ুদিন অবধি হতে পারে। সোমবার এজলাসে বসে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্য়ায় বলেছিলেন, 'যে লড়াই শুরু হয়েছে , সে লড়াই চলবে। বিভিন্নভাবে লড়াই চলবে। আমি তো চিরকাল এখানে থাকবো না, কিন্তু লড়াই চলবে।' সেই সঙ্গে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্য়ায় এটাও পরিষ্কার বুঝিয়ে দেন, যে দুর্নীতি ইস্য়ুতে তিনি অবস্থান বদলাবেন না। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্য়ায়ের এজলাস থেকে প্রাথমিকের নিয়োগ দুর্নীতির মামলা সরানোর নির্দেশে কার্যত আক্ষেপের সুর ধরা পড়ে আন্দোলনকারী চাকরিপ্রার্থীদের অনেকের গলায়। 


আরও পড়ুন:চাকরিতে উন্নতির সম্ভাবনা কাদের ? কেমন যাবে আজকের দিন ?