সৌভিক মজুমদার, কলকাতা: কালিয়াগঞ্জে নাবালিকাকে ধর্ষণ (Kaliaganj Minor Incident) করে খুনের অভিযোগের মামলায় সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশ চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে (Division Bench) গেল রাজ্য সরকার।


কী হল?
আপাতত যা জানা যাচ্ছে, তা হল এই নিয়ে জোড়া মামলা দায়ের করেছে রাজ্য সরকার। একটি মামলায় অবসরপ্রাপ্ত অফিসারদের নিয়ে সিট গঠনের বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। আর গত কাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবার বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা স্বরাষ্ট্রসচিবের থেকে যে রিপোর্ট চেয়েছেন, তা নিয়ে দ্বিতীয় মামলাটি হয়েছে। আগামী সোমবার, প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চে, দু'টি মামলারই শুনানি রয়েছে। 


কী ঘটেছিল?
গত এপ্রিলে, কালিয়াগঞ্জে ওই নাবালিকা ছাত্রীকে ফোন করে কেউ ডেকে পাঠায়। বাবা-মাকে লুকিয়ে বিকালে সে বাড়ি থেকে বের হয়। রাতের দিকে বাড়িতে ফোন করে বলে, সে কালিয়াচকে এসেছে। সকালে ফিরবে। কালিয়াচকে তাঁর আত্মীয়ের বাড়ি রয়েছে। পরিবার ভেবেছিল, সে আত্মীয়ের বাড়িতে গেছে। কিন্তু পর দিন, সকালে মৃতদেহ উদ্ধারের খবর পায় পরিবার। এই ঘটনা ঘিরে তেতে ওঠে কালিয়াগঞ্জ। ৭ দিনের জন্যে সেখানকার একাংশে জারি হয় ১৪৪ ধারা। চেয়ারপার্সন প্রিয়াঙ্ক কানুনগো-র নেতৃত্বে মৃতের বাড়িতে আসেন জাতীয় শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশনের সদস্যরা। প্রায় ২ ঘণ্টা ধরে পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন তাঁরা। এদিকে নাবালিকাকে ধর্ষণ করে খুনের অভিযোগ ঘিরে অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে কালিয়াগঞ্জ। কখনও টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ, কখনও পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটবৃষ্টি চলে। পাল্টা লাঠিচার্জ ও কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে পুলিশ। র‍্যাফ নামিয়ে পরিস্থিতি সামাল দিতে হয়। যদিও ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে বিষক্রিয়ায় মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করেন পুলিশ সুপার। পুলিশের দেহ উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়ার ভাইরাল ছবি ঘিরে তোলপাড় হয়ে ওঠে গোটা রাজ্য। কালিয়াগঞ্জে আসেন জাতীয় তফশিলি কমিশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট অরুণ হালদারও। পুলিশ সাংবাদিক বৈঠকে বিষক্রিয়ায় মৃত্যুর কথা বললেও মৃতার পরিবারের তরফে সিবিআই তদন্তের দাবি তোলা হয়। সিবিআই তদন্তের দাবিতে হাইকোর্টে দায়ের হয় জনস্বার্থ মামলাও।  পাশাপাশি, মৃত নাবালিকার পরিবারকে নিরাপত্তা দেওয়ার আবেদনও জানান মামলাকারী। গত ১১ মে,মামলায় রাজ্য পুলিশের ভূমিকায় কার্যত অনাস্থা প্রকাশ করে, তদন্তে SIT গঠন করেন বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা। বিচারপতি যে ৩ জনের SIT তৈরি করে দেন, তাতে রাখা হয়, CBI-এর প্রাক্তন অ্য়াডিশনাল ডিরেক্টর উপেন বিশ্বাস, রাজ্য় পুলিশের প্রাক্তন IG পঙ্কজ দত্ত এবং কলকাতা পুলিশের তৎকালীন স্পেশাল সিপি (টু) দময়ন্তী সেনকে। কিন্তু হালেই কলকাতা পুলিশ থেকে রাজ্য পুলিশে বদলি করে দেওয়া হয় IPS অফিসার দময়ন্তী সেনকে। কলকাতা পুলিশের স্পেশাল কমিশনার (টু) থেকে দময়ন্তী সেনকে পাঠানো হয় রাজ্য পুলিশের ADG ট্রেনিং পদে। এরপরই রাজ্য সরকারের আইনজীবীকে উদ্দেশ্য করে বিচারপতি প্রশ্ন করেন, এবার কি CBI তদন্ত দিলে খুশি হবেন? SIT যাতে কাজ করতে না পারে, সেই চেষ্টা করছে রাজ্য সরকার, এমনটাও বলতে শোনা যায়।


আরও পড়ুন:নিমের পাতা রক্তের সুগার লেভেল কমতে সাহায্য করে! কীভাবে খাবেন?