কৃষ্ণেন্দু অধিকারী ও আবীর ইসলাম, কলকাতা : সিভিক ভলান্টিয়ারদের (Civic Volunteer) স্কুলে পড়ানোর বাঁকুড়া পুলিশের সিদ্ধান্ত ঘিরে এই মুহূর্তে রাজ্যজুড়ে তোলপাড় চলছে। এই অবস্থায়, আন্দোলনরত চাকরিপ্রার্থীরা (Agitating Job Aspirants) প্রশ্ন তুলছেন, কেন তাদের নিয়োগের ব্য়াপারে উদাসীন রাজ্য় সরকার (West Bengal Government) ?


যাঁদের কাজ পুলিশকে সাহায্য করা, সেই সিভিক ভলান্টিয়াররা যদি স্কুলে পড়ান, তাহলে মাসের পর মাস ধরে যে শিক্ষক চাকরিপ্রার্থীরা রোদ-জল-বৃষ্টি-পূজো-পার্বনে রাস্তায় পড়ে রয়েছেন, চাকরির দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন, তাঁদের কী হবে ? যে আন্দোলনকারীরা রাস্তায় পড়ে রয়েছেন নিয়োগের দাবিতে, তাঁদের তরফে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে, যে খবর নিয়ে। 


রাজ্যে বর্তমানে প্রাথমিক স্কুলের সংখ্যা ৬৫ হাজার ৮৪১। স্থায়ী শিক্ষক রয়েছেন ১ লক্ষ ৯৩ হাজারের বেশি। পার্শ্বশিক্ষক ও চুক্তি ভিত্তিক শিক্ষক রয়েছেন প্রায় ২১ হাজার। শিক্ষক ঘাটতি রয়েছে প্রায় ১৫ হাজার। সেই পদগুলিতে যোগ্য় শিক্ষক নেওয়ার পরিবর্তে, কেন কখনও অযোগ্য়দের তাতে নেওয়া হচ্ছে, আবার কখনও সিভিক ভলান্টিয়ারদের পড়ানোর জন্য় প্রকল্প ঘোষণা করা হচ্ছে ! কেন এই ছিনিমিনি খেলা! প্রশ্ন তুলছেন শিক্ষকরাও। এই পরিস্থিতিতে দ্রুত নিয়োগের আশ্বাস দিচ্ছেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু (Education Minister Bratya Basu)।


কেন্দ্র হোক কিংবা রাজ্য়, স্থায়ী সরকারি চাকরির সংখ্য়া দিনে দিনে কোনও ক্ষেত্রে সরাসরি, আবার কখনও কৌশলে কমিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে বারবার অভিযোগ উঠছে ! অসংখ্য় পদ দিনের পর দিন ফাঁকা। তাই নানা মহলে প্রশ্ন, যে হাজার হাজার তরুণ-তরুণী প্রতিদিন কলেজ-বিশ্ববিদ্য়ালয় থেকে পাস করে বেরোচ্ছেন, তাঁদের প্রতি সরকারের কি আর কোনও দায়বদ্ধতা নেই ? 


আরও পড়ুন- বাম আমলে নিয়োগ পাওয়া শিক্ষক ! পরীক্ষার্থীদের শুভেচ্ছা পোস্ট ঘিরে তোলপাড় সোশ্যাল


আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশকে সাহায্য করা, সিভিক ভলান্টিয়ারা কী করে সেই গুরু দায়িত্ব পালন করতে পারে ? এ নিয়ে রাজ্যজুড়ে তোলপাড়ের পর সিভিক ভলান্টিয়ারদের সরকারি প্রাথমিক স্কুলে পড়ানোর সিদ্ধান্ত আপাতত স্থগিত করেছে শিক্ষা দফতর (Education Department)। কিন্তু এমন একটা সিদ্ধান্ত নেওয়া হল কী করে? বিস্মিত শিক্ষাবিদরা।


শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি (Teacher Recruitment Scam) নিয়ে যখন উত্তাল রাজ্য়, তখন শিক্ষা নিয়ে কার্যত ছেলেখেলার এমন উদাহরণ, রাজনৈতিক মহলেও ঝড় তুলেছে। এমনিতেই সব বিষয় গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু ভারতীয় শিক্ষা ব্যবস্থায় অঙ্ক-ইংরেজির গুরুত্ব অপরিসীম। আর সেই দুই বিষয় পড়াতেই সিভিক ভলান্টিয়ারদের দায়িত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্তে হতবাক সকলেই।