রুমা পাল, কলকাতা: এখনও থমথমে সন্দেশখালি। এবার সেখানে যাচ্ছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। সন্দেশখালি নিয়ে ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকারের কাছ থেকে রিপোর্ট তলব করেছেন তিনি। এবার কেরল সফর কাটছাঁট করে রাজ্যে ফিরে আসছেন। সোমবারই সন্দেশখালি যাচ্ছেন রাজ্যপাল। সন্দেশখালি নিয়ে কেন্দ্রীয় সশস্ত্র পুলিশ বাহিনী এবং কেন্দ্রের চিফ ভিজিল্যান্স কমিশনের সঙ্গেও কথা হয়েছে রাজ্যপাল। (CV Ananda Bose)


রাজভবন সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ কলকাতায় ফিরছেন রাজ্যপাল। এর পর সটান সন্দেশখালির উদ্দেশে রওনা দেবেন তিনি। শনিবার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী রাজভবনে গিয়েছিলেন। সেখানে কার্যত হুঁশিয়ারির সুরেই তিনি রাজ্যপালকে সন্দেশখালি যেতে বলেছিলেন। শুভেন্দু জানিয়েছিলেন, রাজ্যপালকে সন্দেশখালি যেতে হবে, নইলে সন্দেশখালিতে জারি করা ১৪৪ ধারা লঙ্ঘন করবেন তাঁরা। (Sandeshkhali Situation)


সন্দেশখালি নিয়ে ইতিমধ্যেই কড়া বার্তা দিয়েছেন রাজ্যপাল। রাজ্য সরকারের কাছ থেকে রিপোর্টও চেয়ে পাঠিয়েছেন তিনি। এবারও রাজ্যপাল জানিয়েছেন, বাংলায় হিংসা এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোই লক্ষ্য। গতকাল রাজ্যপালকে ২৪ ঘণ্টার ডেডলাইন দিয়েছিলেন শুভেন্দু। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ১৪৪ ধারা প্রত্যাহার, ইন্টারনেট চালুর দাবি তুলেছিলেন। রাজ্যের পুলিশকে দিয়ে না হলে কেন্দ্রীয় বাহিনী নামানোর কথা বলতে শোনা যায় তাঁকে। তার পরই কেরল সফর কাটছাঁট করে সন্দেশখালি যাওয়ার সিদ্ধান্ত রাজ্যপালের।


আরও পড়ুন: Dev vs Shankar: দেবের সংঘাতের জের! ঘাটালে পদ গেল শঙ্করের, তারকা সাংসদের কালীঘাটগমনের পরই সিদ্ধান্ত


সোমবারই সন্দেশখালি যাওয়ার কথা শুভেন্দুর।  ৫০ জন বিজেপি বিধায়ককে নিয়ে সন্দেশখালি অভিযানে যাবেন তিনি। প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ককে গ্রেফতারির প্রতিবাদে, কাল সন্দেশখালি ১ এবং ২ নম্বর ব্লকে ১২ ঘণ্টা বনধের ডাক দিয়েছে বামেরাও। বিনা কারণে সন্দেশখালির প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক নিরাপদ সর্দারকে গ্রেফতার করার অভিযোগ উঠছে। সেই নিয়ে নতুন করে অশান্ত হয়ে উঠেছে পরিস্থিতি। 


রবিবার সন্দেশখালি অভিযানে গেলে আটকানো হয় DYFI নেত্রী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়-সহ সিপিএম নেতা-নেত্রীদের। প্রথমে ন্যাজাটে ব্যারিকেড করে তাঁদের আটকানোর চেষ্টা হয়। বাম নেতা-নেত্রীরা ব্যারিকেড ভেঙে ফেরিঘাটের দিকে এগিয়ে গেলে ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। পুলিশের সঙ্গে বচসায় জড়ান মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়, কনীনিকা ঘোষ, কলতান দাশগুপ্তরা। ইতিমধ্যেই সন্দেশখালি থানার ৮টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। গতকাল সন্দেশখালি যাওয়ার পথে, ধামাখালি থেকে ৬ কিলোমিটার দূরে রামপুরে আটকে দেওয়া হয় বিজেপি প্রতিনিধিদলকে।  


সিপিএমের অভিযোগ, মিথ্য়ে মামলায় ফাঁসানো হয়েছে তাঁদের নেতা নিরাপদকে। রবিবার সন্ধেয়, টাউন হল থেকে বসিরহাট থানা পর্যন্ত মিছিল করে সিপিএম। এর পর বসিরহাট থানার সামনে দীর্ঘক্ষণ চলে অবস্থান বিক্ষোভ। আগামী কালও কর্মসূচি রয়েছে তাদের। সবমিলিয়ে সোমবার সন্দেশখালির দিকেই নজর আটকে রাজনৈতিক মহলের।