উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায়, কলকাতা: রাজ্যের দুটি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজ্যপালের পরিবর্তে মুখ্যমন্ত্রীকে আচার্য করার তৎপরতা। বিধানসভার অধিবেশনে তা নিয়ে শাসক-বিরোধী তরজায় ঢুকে পড়ল কবিতার লড়াই। একদিকে বিজেপি বিধায়ক অসীম সরকার। বিপরীতে কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। 


রাজ্য বিধানসভার অধিবেশনে রাজনীতির তরজায় এবার লাগল ছন্দের ছোঁয়া। একদিকে হরিণঘাটার বিজেপি বিধায়ক অসীম সরকার। আরেকদিকে কৃষিমন্ত্রী ও তৃণমূল বিধায়ক শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। 


হরিণঘাটার বিজেপি বিধায়ক অসীম সরকার বলছেন, 
আজ আলোচনার বিশেষ অধ্যায় বাংলার দুটি কৃষি  বিশ্ববিদ্যালয়। তার উচ্চপদে সমাসীন রয় স্বয়ং রাজ্যপাল। 
তারই পরিবর্তন এনে মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী বসবেন সেই আসনে। সংসদীয় আইন মেনে ধরবেন তিনি হাল। 
রাজ্যপাল আর রাজ্যের সাথে বাদ বিষমবাদ হতে হতে দুইয়ের মধ্যে তিক্ততাতে ঘটেছে মুশকিল। 
সেই মুশকিলেরই আসান পেতে রাজ্যপালের ক্ষমতাই কেড়ে নিতে সংসদীয় রীতি মতে এনেছেন এই বিল।


এদিকে কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বলছেন, 
মহামান্য আপনি নিশ্চয় অসামান্য়। আইনবিদ হিসেবেও হয়তো অনন্য। 
কিন্তু বিচারবোধে খামতি চোখে পড়ে। সময় জ্ঞানের মুখোশ খুলে পড়ে।


রাজ্যপালকে সরিয়ে রাজ্যের সমস্ত সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে আচার্য পদে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বসানোর জন্য চলতি অধিবেশনেই বিল পাস হয়েছে বিধানসভায়। রাজ্যের দুটি স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়েও আচার্যর আসনে মুখ্যমন্ত্রীকে বসানোর তত্পরতা তুঙ্গে। শুক্রবার তা নিয়ে শাসক ও বিরোধী শিবিরের মধ্যে আলোচনার সময় জমে ওঠে কবিতার লড়াই! 


হরিণঘাটার বিজেপি বিধায়ক অসীম সরকার কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে আচার্য পদে মুখ্যমন্ত্রীর বিরোধিতা করতেই, ছন্দের মোড়কে পাল্টা কটাক্ষ ছুড়ে দেন কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। 


অসীম সরকার আবার বলেন,


রাজ্যের সাংবিধানিক যিনি প্রধান
এই বিলটির মধ্যে তার অপমান
আবার তিনি যদি স্বাক্ষর না দেন, এই বিল হবে অযথা। 
তিনি আরও পাবেন মনোকষ্ট। 
আমাদেরও সময় নষ্ট। একটা পথই আছে শ্রেষ্ঠ। 
আলোচনার দ্বারাই হতে পারে সব সমাধান, 
মধুর বাক্যের আদানপ্রদান। 
কারণ উভয়কেই এক সংবিধান মেনে চলতে হবে।


এর পাল্টা শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের জবাব


অনেকে বলা ওই পদটি শুধুই সাদা হাতি পোষা। 
কথায় কথায় যিনি করেন শুধু গোঁসা। 
শিশুর গোঁসা ভাঙাবে গোটা রাজ্যবাসী, 
ট্যুইটবাবুর গোঁসা ভাঙাতে তাঁকে করুন কাশীবাসী। 


অ্যান্টনি ফিরিঙ্গি ছবিতে ভোলা ময়রা আর ফিরিঙ্গি সাহেবের সেই লড়াই বাঙালি আজও ভোলেনি। অনেকে বলছেন, তারই ছোঁয়া যেন দেখা যাচ্ছে বাংলার আচার্য রাজনীতিতে।