কলকাতা: রাজভবনের বিবৃতি নিয়ে রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাত এবার রাস্তায়। রাজভবনের সামনে প্রতিবাদ কর্মসূচি শুরু করলেন প্রাক্তন উপাচার্যরা। তাঁরা জড়ো হয়েছেন তৃণমূল আমলে নিযুক্ত উপাচার্যদের সংগঠন দ্য এডুকেশনিস্ট ফোরামের সদস্যরা। আজ রাজভবনের উত্তর গেটের সামনে প্রতিবাদে সামিল হয়েছেন তাঁরা। তাঁদের  অভিযোগ, রাজ্যের উচ্চ শিক্ষাব্যবস্থার বিরুদ্ধে অরাজকতাকে উন্মুক্ত করে দিয়েছেন আচার্য। উচ্চশিক্ষা সংক্রান্ত পাস হওয়া বিল নিয়ে অসাংবিধানিকভাবে নিষ্ক্রিয়তা দেখাচ্ছেন রাজ্যপাল, (Bengal Governor) অভিযোগ এডুকেশনিস্ট ফোরামের। (Vice-Chancellors Clash)


আজ এই প্রতিবাদ কর্মসূচীতে সামিল হয়েছিলেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্যরা, হাজির ছিলেন সুবোধ সরকারও। এবিপি আনন্দকে তিনি বলছেন, 'আমি আলাদাভাবে কোনও কথা বলতে চাই না, মিটিং করতে চাই।' রাজ্যপালের আচরণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাবেন তাঁরা। একটি মিটিং করতে চান তাঁরা রাজ্যপালের সঙ্গে। মিটিংয়ের শেষেই জানা যাবে ফলাফল। 


আজ এই প্রতিবাদে সামিল হয়েছেন ওমপ্রকাশ মিশ্রও। রাজভবনের সামনে রাস্তায় বসে পড়ে প্রতিবাদ দেখাচ্ছেন তাঁরা। প্রাক্তন উপাচার্যদের সঙ্গে রয়েছেন বর্তমান বেশ কিছু উপাচার্যেরাও।


উপাচার্য নিয়োগ বিতর্কে আগেই মুখ খুলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। (Mamata Banerjee) তিনি বলেছিলেন,  'হঠাৎ মধ্যরাতে যাদবপুরের উপাচার্য বদল হয়ে গেল। একজন প্রাক্তন বিচারপতিকে করে দেওয়া হল রবীন্দ্রভারতীর উপাচার্য। পুরো ব্যবস্থাকে অচল করে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। কোনও বিশ্ববিদ্যালয় যদি রাজ্যপালের কথা শুনে চলে আমি অর্থনৈতিক বাধা তৈরি করব। দেখব রাজ্যপাল কীভাবে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বেতন দেন। আমরা চ্যালেঞ্জ করছি। আমরা বিল পাঠাচ্ছি উনি ফেরত পাঠাচ্ছেন না। সংবিধান অনুসারে এটা উনি করতে পারেন না। আর্থিক বিল ছাড়া আর কিছু রাজ্যপাল ফেরত পাঠাতে পারেন না।'


এরপরেই হুঁশিয়ারি দিয়েই মমতা বলেছিলেন, 'দরকার হলে আমি রাজভবনের সামনে ধর্না দেব। শিক্ষাব্যবস্থাকে আমি ধ্বংস হতে দেব না। আমরা আইনের পথেও যাব, আশা করি আইন সুবিচার দেবে। জোর করে আমাদের আটকানো যাবে না। বাংলাকে নিয়ে অকারণ খেলা চলবে না। শিক্ষকদের বেতন বন্ধ হলে উনি দেবেন ?' প্রশ্ন তোলেন মমতা।


মুখ্যমন্ত্রী এদিন আরও বলেছিলেন, 'বিধানসভা পর্যন্ত রাজ্যপাল ডাকতে দেন না। ওনার মনে রাখা দরকার রাজভবনের টাকাও আমার রাজ্যের মানুষ দেয়। ভয় কেউ পাবেন না। উনি অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটার দেবেন কিন্তু মাইনে তো দিতে পারবেন না। প্রাক্তন উপাচার্যদের বলছি আপনারাই থাকবেন, কার কী করার আছে আমরা দেখছি। অন্যায়ের বিরুদ্ধে আন্দোলনে সবাই আমাদের পাশে থাকবেন।' ব্রাত্য বসু গতকাল স্পষ্ট বলেছেন, ' আচার্য অর্থাৎ রাজ্যপাল সংবিধান মানছেন না। বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও বিধি আচার্য লঙ্ঘন করতে পারেন না। বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন লঙ্ঘন করছেন রাজ্যপাল। ইন্ডিয়া জোটকে এরা ভয় পাচ্ছে। এদের মনে হচ্ছে ইন্ডিয়া জোট বিপদে ফেলতে পারে।'


আরও পড়ুন: Anirban Bhattacharya: বল্লভপুরের পরে 'পক্ষীরাজের ডিম', ফের রূপকথার গল্প শোনাবেন অনির্বাণ-শ্যামল