কৃষ্ণেন্দু অধিকারী, কলকাতা: শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে তোলপাড় গোটা রাজ্য। তার মধ্যেই রাজ্যের জবাব তলব প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের (Primary Education)।  চিঠি দিয়ে জানতে চাওয়া হয়েছে,  ২০১১ সাল থেকে কাদের শিক্ষক পদে নিয়োগ করা হয়েছে? প্রাথমিক শিক্ষক পদে আজ পর্যন্ত কতজনকে নিয়োগ করা হয়েছে?  জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদ চেয়ারম্যানদের চিঠি দিল পর্ষদ (TET Scam)। আবেদনকারীর নাম থেকে কোন স্কুলে নিয়োগ, কোন বছরে নিয়োগ, এই সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য তলব করেছে পর্ষদ (Primary TET)। 


রাজ্যের কাছে জবাবদিহি প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের


প্রাথিমক শিক্ষক নিয়োগেও দুর্নীতির অভিযোগ উঠে এসেছে। তা নিয়ে শুরু হয়েছে তদন্তও। সেই আবহে পর্ষদের সচিবের তরফে জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যামনদের চিঠি দেওয়া হয়েছে। তাতে ২০১১ সাল থেকে কারা কারা চাকরি পেয়েছেন, তা জানাতে বলা হয়েছে। এই সংক্রান্ত একটি ফর্ম্যাটও তৈরি করে দিয়েছে পর্ষদ। তাতে আবেদনকারীর নাম, বাবা-মায়ের নাম, রোল নম্বর, কোন ক্যাটেগরিতে চাকরি, কোথায় বাড়ি, কোন স্কুলে নিয়োগ, সব তথ্য তুলে ধরতে বলা হয়েছে।


নিয়োগ নিয়ে দুর্নীতির একের পর এক অভিযোগে বিদ্ধ হয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। আদালতের নির্দেশে অপসারিত হয়েছেন পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য। এমনকি তাঁর নাগাল পাওয়া যাচ্ছ না বলে দাবি করে লুক আউট নোটিসও জারি করেছে সিবিআই। তার মধ্যেই যদিও মঙ্গলবার বিধানসভায় উপস্থিত হন মানিক। জানান, রবিবার সারাদিন নিজের নির্বাচনী কেন্দ্রেই ছিলেন তিনি। মঙ্গলবার বিধায়কের দায়িত্ব পালন করতে বিধানসভায় এসেছেন। এ যাবৎ তদন্তে পূর্ণ সহযোগিতা করে এসেছেন তিনি। 


একের পর এক অভিযোগে বিদ্ধ পর্ষদ


প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগেও দুর্নীতির অভিযোগ উঠে আসায়, নতুন রূপে পর্ষদকে ঢেলে সাজানো সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের পরিচালন কমিটিতে আসা ১১ জনই নতুন মুখ। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের নতুন সভাপতি করা হয়েছে কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ উপাচার্য গৌতম পালকে। দায়িত্ব নিয়ে, পর্ষদ পরিচালনা থেকে নিয়োগ, সব ক্ষেত্রে স্বচ্ছতার কথা বলতে শোনা যায় তাঁকে। বলেন, "কিছু লুকোবো না। কোনও সিদ্ধান্ত একা নেব না। প্রতিবছর টেট হবে।"


আরও পড়ুন: Manik Bhattacharya: সিবিআই-এর খাতায় তিনি 'বেপাত্তা', বিধানসভায় এলেন মানিক, বললেন, '১০০% সহযোগিতা করেছি'
 
তার পরেও যদিও নিয়োগের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন ২০১৪ ও ২০১৭-র চাকরিপ্রার্থীরা। ২০১৪-র টেট উত্তীর্ণ চাকরিপ্রার্থীদের দাবি, ২০২০ সালে নবান্নের ঘোষণা অনুযায়ী টেট উত্তীর্ণ ১৬ হাজার ৫০০ জনকে  ধাপে ধাপে নিয়োগ করার কথা বলা হয়। এখনও পর্যন্ত ১০ হাজার জন নিয়োগপত্র পেলেও, বাকিদের নিয়োগ হয়নি। অন্যদিকে ২০১৭ সালে ফের প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়।