অরিত্রিক ভট্টাচার্য, কলকাতা: এবার প্রাথমিকে চালু হচ্ছে সেমিস্টার ব্যবস্থা (Primary Semester System)। আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে চালু হচ্ছে ক্রেডিট বেসড সেমিস্টার ব্যবস্থা। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ সূত্রে খবর, প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত বছরে ২টি করে সেমিস্টার হবে। জুনে প্রথম সিমেস্টার, ডিসেম্বরে দ্বিতীয় সিমেস্টার। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের দেওয়া প্রশ্নেই হবে পরীক্ষা। মার্কশিটে থাকবে ক্রেডিট পয়েন্ট।
প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের তরফে জানানো হয়েছে, ক্রেডিট বেসড সেমিস্টার সিস্টেম চালু হচ্ছে। মার্কশিটে প্রাপ্ত নম্বরের পাশাপাশি থাকবে ক্রেডিট পয়েন্টও। সেমিস্টার ব্যবস্থার মাধ্যমে পরীক্ষা হবে। বছরে হবে দুটো সেমিস্টার। প্রথম ৬ মাসের পড়াশোনার ভিত্তিতে জুনে একটা পরীক্ষা এবং তারপরের ৬ মাসের পড়াশোনার ভিত্তিতে ডিসেম্বরে আরেকটি পরীক্ষা। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের আওতায় যে কটি বিদ্যালয় রয়েছে, তাদের প্রশ্নপত্র তৈরি করবে বোর্ড। ১ জানুয়ারি ২০২৫ থেকেই এই নতুন ব্যবস্থা চালু হচ্ছে।
সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতার জন্য ছোট থেকেই এরাজ্যের পড়ুয়াদের তৈরি করার লক্ষ্যেই এই খোলনলচে বদল বলে দাবি করলেন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি গৌতম পাল। জাতীয় শিক্ষা নীতির ওপর ভর করে NCERT-র একটি কারিকুলাম ফ্রেমওয়ার্ক অনুযায়ী চলবে গোটা প্রক্রিয়া। পর্ষদের সভাপতি জানিয়েছেন, "২০২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকেই চালু হচ্ছে নতুন পদ্ধতি। প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত হবে সেমিস্টার পদ্ধতিতে পরীক্ষা। জুন মাসে হবে প্রথম পরীক্ষা। প্রতি ক্লাসেই দুবার করে হবে পরীক্ষা।''
কিন্তু কী এই ক্রেডিট বেসড সিমেস্টার ব্যবস্থা? কীভাবে গোটা বিষয়টি পরিচালনা করা হবে? পর্ষদের ঘোষণা অনুযায়ী, প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণির পড়ুয়াদের প্রত্যেকের নামে ইউনিক আইডেন্টিফিকেশন নম্বর তৈরি করা হবে। স্কুলে ওই পড়ুয়া কোন বিষয়ে কতক্ষণ ক্লাস করছে তার উপর ভিত্তি করে দেওয়া হবে ক্রেডিট পয়েন্ট। পাশাপাশি কোকারিকুলার অ্যাক্টিভিটির ওপরও থাকবে পয়েন্ট। গোটা রাজ্যের প্রাথমিক স্কুলগুলিতে একটি প্রশ্নপত্রেই পরীক্ষা হবে, যা তৈরি করে দেবে পর্ষদ। মোট ১০০ নম্বরের পরীক্ষার মধ্যে ৬০ নম্বর থাকবে লিখিত পরীক্ষায়। বাকি ৪০ নম্বর থাকছে পড়ুয়ার সামগ্রিক পারফরমেন্সের ওপর ভিত্তি করে।
পর্ষদের দাবি, দেশের মধ্যে প্রাথমিক শিক্ষাক্ষেত্রে এই ক্রেডিট বেসড সেমিস্টার পদ্ধতি প্রথম চালু হল এ রাজ্যেই। গৌতম পাল জানিয়েছেন, "২০০৯ রাইট টু এডুকেশন আইন অনুসারে পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত ‘নো ডিটেনশন’ পলিসি আছে। প্রথম থেকে দ্বিতীয় শ্রেণিতে গোটা শিক্ষাবর্ষে ৮০০ ঘণ্টা কাটাতে হবে। তৃতীয় থেকে পঞ্চম শ্রেণিতে গোটা শিক্ষাবর্ষে ১০০০ ঘণ্টা। প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে সিঙ্গল সেমিস্টারে ৩৭৬ ঘণ্টা করে ও তৃতীয় থেকে পঞ্চম সিঙ্গল সেমিস্টারে ৪৬০ ঘণ্টা কাটাতে হবে।'' সর্বভারতীয় ক্ষেত্রেও সিমেস্টার এই ক্রেডিট পয়েন্ট গ্রহণযোগ্যতা পাবে বলেও জানিয়েছে পর্ষদ। আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে পুরনো সিলেবাসেই নতুন পদ্ধতি চালু হলেও, পর্ষদের দাবি, ২০২৬ থেকে সিলেবাসে বেশ কিছু বদল আনা হবে।
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।
আরও পড়ুন: Fraud Case: অভিষেকের নাম করে তোলাবাজির চেষ্টার অভিযোগ, পুলিশের জালে তিন