কৃষ্ণেন্দু অধিকারী, কলকাতা: স্কুলের পোশাকে বিশ্ববাংলা লোগো (Biswa Bangla Logo) নিয়ে এ বার কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে অভিযোগ জানাবেন বলে হুঁশিয়ারি দিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। তাঁর অভিযোগ, স্কুলের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করছে রাজ্যের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানের (Dharmendra Pradhan) কাছে অভিযোগ জানাবেন তিনি।
রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্ত সামনে আসার পরই বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়েছে। রবিবার সেই নিয়ে ক্ষোভ উগরে দেন শুভেন্দুও। তিনি বলেন, “সরাসরি স্কুলের সিদ্ধান্তে হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে। স্কুলের নির্দিষ্ট পোশাকবিধি রয়েছে, নীল-সাদা, গেরুয়া-সাদা, সবুজ-সাদা। সেটা পরেই স্কুলে যেতে হবে। কেন্দ্রের শিক্ষা মিশনের টাকায় স্কুল চলছে। রাজ্য এটা করতে পারে মা। ধর্মেন্দ্র প্রধানের কাছে অভিযোগ জানাব আমি। অভিভাবকদেরও বলব, প্রয়োজনে আইনের আশ্রয় নিতে। স্কুলের অধিকারে হস্তক্ষেপ করা যাবে না।”
চলতি বছরে নতুন করে সরকারি এবং সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলে পড়ুয়াদের পোশাক দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। ইউনিফর্মে বিশ্ব বাংলার লোগো ব্যবহারের নির্দেশও দেওয়া হয়েছে (West Bengal School Uniform Row)।
স্কুলে এবার নীল-সাদা পোশাক। পড়ুয়াদের ইউনিফর্মে থাকবে বিশ্ববাংলার লোগো। সরকারের এই সিদ্ধান্ত ঘিরে তৈরি হয়েছে রাজনৈতিক বিতর্ক। সেই মর্মে গত ১৬ মার্চ প্রত্যেক জেলার জেলাশাসকের কাছে চিঠি পৌঁছয় পশ্চিমবঙ্গ সমগ্র শিক্ষা মিশনের তরফে। তাতে বলা হয়, ‘ক্ষুদ্র, মাঝারি কুটির শিল্প এবং বস্ত্র দফতর’ স্কুল পড়ুয়াদের জন্য নির্দিষ্ট পোশাক তৈরি করে সরবরাহ করবে।
সেই নিয়ে স্কুলশিক্ষা দফতরের প্রধান সচিবকে চিঠি দেন ক্ষুদ্র, মাঝারি কুটির শিল্প এবং বস্ত্র দফতরের প্রধান সচিবও। সেই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, প্রাক প্রাথমিক থেকে অষ্টম শ্রেণির ছাত্রদের দেওয়া হবে সাদা জামা ও নীল রঙের প্যান্ট। প্রাক প্রাথমিক থেকে দ্বিতীয় শ্রেণি পর্যন্ত ছাত্রীদের দেওয়া হবে সাদা জামা ও নীল ফ্রক। তৃতীয় থেকে পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রীদের জন্য বরাদ্দ সাদা জামা ও নীল স্কার্ট। আর ষষ্ঠ থেকে অষ্টম ছাত্রীদের দেওয়া হবে নীল-সাদা সালোয়ার কামিজ ও দোপাট্টা। তাতে বসানো ছাকবে বিশ্ববাংলা লোগোও।
রবিবার বিষয়টি সামনে আসতেই সমালোচনা শুরু হয়েছে। রাজ্য সরকার বাংলার শিক্ষা ও সংস্কৃতির উপর দখলদারি চালাতে চাইছে বলে অভিযোগ করেন বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সহকারী সম্পাদক স্বপন মণ্ডল। বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারও এ নিয়ে রাজ্যকে এক হাত নেন। যদিও রাজ্যের যুক্তি, নীল সাদা রঙ কেন চাপিয়ে দেওয়া হবে, কেন লোগো হবে, নীল-সাদা কারও রঙ নয়।