কলকাতা: এসআইআর নিয়ে বিজেপি-তৃণমূলের মধ্য়ে চাপানউতোরের মধ্যেই সামনে এল এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। নির্বাচন কমিশনের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, রাজ্যের দু'হাজার দু'শো আটটি পোলিং স্টেশনের থেকে একশো শতাংশ পূরণ করা ফর্ম ফেরত এসেছে! এই তালিকার শীর্ষে রয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা। এতগুলো পোলিং স্টেশনে কোনও মৃত ভোটার, স্থানান্তরিত ভোটার কিংবা ডুপ্লিকেট ভোটার নেই! আদৌ সম্ভব? ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জেলাশাসকদের কাছ থেকে রিপোর্ট তলব করেছিল নির্বাচন কমিশন। 

Continues below advertisement

তবে এবার নির্বাচন কমিশনের কড়া পদক্ষেপের পর, পূরণ করা সব এনুমারেশন ফর্ম ফেরত এসেছে, এমন পোলিং স্টেশনের সংখ্যা আরও কমে গেল। সোমবার নির্বাচন কমিশনের তরফে জানানো হয়, ২ হাজার ২০৮টি পোলিং স্টেশনে। কোনও মৃত স্থানান্তরিত কিংবা ডুপ্লিকেট ভোটারের খোঁজ মেলেনি।তার ফলে পূরণ করা সমস্ত এনুমারেশন ফর্ম ফেরত এসেছে।

এই অবাক করা তথ্য সামনে আসার পরই নড়েচড়ে বসে নির্বাচন কমিশন। রিপোর্ট চায় তারা। এরপরই মঙ্গলবার দেখা যায় সংখ্যাটা একলাফে কমে ২ হাজার ২০৮ থেকে ৪৮০ হয়ে গেছে। বুধবার আরও কমে সংখ্যাটা হল ২৯। কিন্তু প্রশ্ন একটাই, এত ফারাক হল কী করে?কী করে সংখ্য়াটা হু হু করে কমছে? তাহলে আগে এত বেশি দেখানো হয়েছিল কেন?

Continues below advertisement

বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ বলেন, 'এই রাজ্যে ডেটা ট্যাম্পারিং রাজ্য প্রশাসনের দ্বারা কীভাবে করা হয়েছে, সেটা মনে হয় আজ পশ্চিমবঙ্গের মানুষের কাছে একেবারে খুলে গেল এবং সবথেকে আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, এক্ষেত্রেও দক্ষিণ ২৪ পরগনা প্রথম হয়েছে। ফলে এই বুথগুলোতে এই মানুষগুলো কীভাবে অমরত্বের সন্ধান পেলেন, এটা নিয়ে একটা গবেষণা হওয়া দরকার, রিসার্চ পেপার তৈরি হওয়া দরকার এবং তার পাশাপাশি এই যে ১০০ শতাংশ ভোটার থেকে যাওয়া, এর পিছনে যে BLO-রা রয়েছেন, ERO-রা রয়েছেন তাঁদের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনকে নির্দিষ্টভাবে তদন্ত সাপেক্ষে এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।' 

তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র তন্ময় ঘোষ, '২ হাজার ২০৮টি বুথে নাকি কোনও মৃত ভোটার বা ভোটার স্থানান্তরিত হয়েছে, এরকম কোনও ভোটার খুঁজে পাওয়া যায়নি। আমরা প্রথম দিন থেকে যা বলে আসছি, সেটাই তার মানে প্রমাণিত হচ্ছে, যে SIR-টা পুরোপুরি অপরিকল্পিতভাবে করানো হচ্ছে। BLO-দের গান পয়েন্টে রেখে করানো হচ্ছে। এই দায়িত্ব কার? এই দায়িত্ব জাতীয় নির্বাচন কমিশনের, যে নির্ভুল ভোটার লিস্ট তৈরি করা। তারা তো সেই লক্ষ্যে কাজ করছেন না।' 

রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠছে, এমনটা কীভাবে সম্ভব? কোনও গরমিল হয়নি তো? এই সমস্ত পোলিং স্টেশন এখন এখন কমিশনের নজরদারিতে। সূত্রের খবর, এইসব  পোলিং স্টেশনের এনুমারেশন ফর্মের সব তথ্য একাধিকবার করে যাচাই করা হবে।