মনোজ বন্দ্যোপাধ্যায়, পশ্চিম বর্ধমান: লাউদোহার (Laudoha) শীর্ষা গ্রামে ফের ধস। মাস ছয় আগে বেশ কয়েকটি বাড়িতে ফাটল দেখা দেয়। তলিয়ে যায় একটি বাড়ি। তখন ECL -এর আধিকারিকরা এসে স্থানীয় বাসিন্দাদের সাথে কথা বলে ঠিক করেন যে অবিলম্বে পুনর্বাসন দেওয়া হবে। তাদের কিন্তু সেই পুনর্বাসন এখনও  হয়নি।  এরই মধ্যে আবার ধস হয়েছে।আতঙ্কে (Fear) স্থানীয় বাসিন্দারা কলিয়ারির রাস্তা আটকে বিক্ষোভ (Agitation) দেখায়। আটকে পড়ে বেশ কয়েকটি গাড়ি। ECL আধিকারিকরা এলে তাদের ঘিরে বিক্ষোভ দেখায় স্থানীয় বাসিন্দারা। অবশেষে তাঁদের আশ্বাসে বিক্ষোভ কিছুটা শান্ত হয়েছে। ঘটনাস্থলে লাউদোহা থানার পুলিশ।


প্রসঙ্গত, গত অগাস্ট মাসে অন্ডালের বহুলা অঞ্চলে ইসিএলের খোলামুখ খনি-লাগোয়া (coal mine) জনবসতিপূর্ণ এলাকায় ধসের  ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন বাসিন্দারা। পাথর পুকুর এবং বাদ্যকর পাড়ায় কয়েকটি বাড়ির উঠোন ধসের জেরে তলিয়ে যায়। ঘটনাচক্রে সেই সময় পরিবারগুলির কোনও সদস্য বাড়ি ছিলেন না। ফলে হতাহতের কোনও ঘটনা ঘটেনি। কিন্তু বাড়ি ফিরে ওই ছবি দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন তাঁরা। রবিবার সকাল থেকে বিষয়টি নিয়ে তুমুল বিক্ষোভ শুরু করেছিলেন এলাকাবাসী।


 রাষ্ট্রায়ত্ত 'ইস্টার্ন কোলফিল্ড লিমিটেডের' বিরুদ্ধে এমনিতেই ক্ষুব্ধ স্থানীয়দের অনেকে। খোলা মুখ খনি এলাকা থেকে কয়লা তোলার সময় মাটির নিচে বিস্ফোরণ হয় যার জেরে ভূমিধসের ঘটনা ঘটে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, এ ব্যাপারে একাধিকবার ইসিএল আধিকারিকদের জানানো সত্ত্বেও কোন সুরাহা মেলেনি। ECL কর্তৃপক্ষের গাফিলতিতেই ফের এই ভূমিধসের ঘটনা ঘটেছে, সাফ বক্তব্য তাঁদের।  বিক্ষোভ সামলাতে একসময়ে ঘটনাস্থলে আসতে হয় অন্ডাল থানার পুলিশ, স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান-সহ প্রশাসনিক আধিকারিকদের। 


আরও পড়ুন, 'সব দুষ্কৃতী তৃণমূলের ছত্রছায়ায়', নবনীতা-জিতুকে হুমকিকাণ্ডে প্রতিক্রিয়া শমীকের


ইসিএলের খনি এলাকায় ধসের ঘটনা নতুন নয়। যেমন গত বছর সেপ্টেম্বরেই আসানসোলের ডামরায় ইসিএলের খনি এলাকায় ধসের খবর মেলে। তার জেরে ফাটল ধরে রাস্তা থেকে বাড়ির দেওয়াল ও মেঝেতেও। আতঙ্কে এলাকাছাড়া হয় প্রায় ১৫টি পরিবার। পর দিন সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গেলে বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পালকে 'গো ব্যাক' স্লোগান দেন ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা। বিধায়কের সঙ্গে বাদানুবাদও হয়। আসানসোল দক্ষিণের বিধায়ক সে সময় জানিয়েছিলেন, বাম আমলে পুনর্বাসনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু রাজনীতি করার জন্যই এতদিন তা কার্যকর করেনি তৃণমূল। তা ছাড়া খোলামুখ খনি থেকে অবৈধ ভাবে কয়লা তুলতে গিয়ে মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনাও নেহাত কম নয়। গত জানুয়ারিতেই বেআইনিভাবে কয়লা তুলতে গিয়ে মাটি চাপা পড়ে মৃত্যু হয়েছিল একই পরিবারের চার জনের। মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটে দুর্গাপুরের মাধাইপুরে।