মনোজ বন্দ্যোপাধ্য়ায়, পশ্চিম বর্ধমান: বিষাক্ত সাপের কামড়ে পড়ুয়ার মৃত্যুর পর আতঙ্কে আবাসিক পড়ুয়ারা। আবাসিক বিদ্যালয় আর আবাসনের হাল ফেরানোর দাবিতে বিদ্যালয়ের মূল প্রবেশদ্বারে তালা দিয়ে চূড়ান্ত আন্দোলনে অভিভাবকরা। পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে নিউ টাউনশিপ থানার পুলিশ। খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস মহকুমা শাসকের।


পরীক্ষা শেষে আবাসিক বিদ্যালয় থেকে দোকান  আর  দোকান থেকে আবার আবাসিক বিদ্যালয় হয়ে আবাসনে ফেরার পথে বিষাক্ত সাপের কামড়ে মৃত্যু কুলটির সিদ্ধান্ত মান্ডি নামের বছর ১৩-র সপ্তম শ্রেণীর পড়ুয়ার। তারপর থেকেই আতঙ্কের মধ্যে অনিশ্চয়তায় আবাসিক পড়ুয়ারা। নিরাপত্তা আর সাফাইয়ের দাবিতে বিদ্যালয়ের ভেতর তালা দিয়ে শিক্ষক শিক্ষিকাদের আটকে রেখে আন্দোলনে অভিভাবকরা। দুর্গাপুরের ফুলঝড়ে রয়েছে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে গড়ে ওঠা পন্ডিত রঘুনাথ মুর্মু আবাসিক বিদ্যালয় আর আবাসন। আর সেই বিদ্যালয়ে রয়েছে ২৭৮ জন পড়ুয়া। সেই পড়ুয়ারা থাকে বিদ্যালয়ের আবাসনে। কিন্তু বিগত কয়েক বছর ধরে এই আবাসিক বিদ্যালয় আর আবাসন আতঙ্কের প্রাণকেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। 


চারিদিকে আগাছায় বাড়ছে বিষাক্ত সাপ আর জীবজন্তুর উপদ্রব। চলতি মাসের ১ তারিখ কুলটির সিদ্ধান্ত মান্ডি নামের সপ্তম শ্রেণীর পড়ুয়া আবাসিক বিদ্যালয়ে পরীক্ষা দেওয়ার পর বাইরের দোকানে গিয়েছিল। তারপর সেখান থেকে আবাসিক বিদ্যালয় হয়ে আবাসনে ফিরছিল। তখনই আবাসিক বিদ্যালয়ের সামনে চন্দ্রবোড়া সাপে কামড় দেয় ছোট্ট সিদ্ধান্তকে। অভিভাবকদের অভিযোগ দীর্ঘ সময় পর তাঁকে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। অবস্থার অবনতি ঘটলে স্থানান্তর করা হয় বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। চলতি মাসের ৬ তারিখ চিকিৎসাধীন অবস্থাতেই মৃত্যু হয় সিদ্ধান্তর।


সিদ্ধান্তকে সাপে কামড়ানোর পর ১০ দিন পেরিয়েছে। কিন্তু আগাছাতেই ঢেকে রয়েছে আবাসন ও বিদ্যালয়। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের ২৭৮ জন আদিবাসী পড়ুয়া এই আবাসিক বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে। এই মৃত্যুর পর মৃত্যু ভয়ে কাঁপছে পড়ুয়ারা। অনেক পড়ুয়াদের ইতিমধ্যেই হোস্টেল থেকে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে গিয়েছে অভিভাবকরা। দ্রুত হাল ফিরুক বিদ্যালয় আর আবাসনের এই দাবি তুলে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের আটকে রেখে আবাসিক বিদ্যালয়ের মূল প্রবেশদ্বারে তালা বন্ধ করে আন্দোলনে নামল অভিভাবকরা।


আরও পড়ুন, 'মানিকের নিয়োগ বেআইনি ছিল..', বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে হলফনামা UGC-র


বিদ্যালয়ে আর আবাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক স্বাবর্নি সেনশর্মা জানান খুবই মর্মান্তিক ঘটনা। একাধিকবার  উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়েছেন কিন্তু তাঁরাও গুরুত্ব সহকারে দেখছে না। দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করুক অনগ্রসর সম্প্রদায় কল্যাণ দফতর চাইছেন তাঁরাও। মহকুমা শাসক সৌরভ চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, স্কুলের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইতিমধ্যেই স্কুলে প্রশাসনের তরফ থেকে গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য দুজনকে পাঠানো হয়েছে ।