সোমনাথ দাস, দাসপুর : শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari) অনুগামীদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে নাম রয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুরের (Daspur) দুই তৃণমূল নেতার ! যা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। দুই নেতার সমালোচনায় সরব স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। বিতর্কের মধ্যে পড়ে সাফাই দিয়েছেন দুই শাসক নেতা।


শুভেন্দু অধিকারীর নামে তৈরি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ। গ্রুপের নাম-‘শুভেন্দু প্রেমে আসক্ত আমরা’। যার অ্যাডমিন খোদ বিধানসভার বিরোধী দলনেতা। অথচ সেই গ্রুপে নাম রয়েছে দুই তৃণমূল নেতার ! যা নিয়ে শোরগোল পড়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুরে।


শুভেন্দু অনুগামীদের নিয়ে তৈরি এই গ্রুপেই নাম রয়েছে, তৃণমূল পরিচালিত বাসুদেবপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান ও দাসপুর ১ নম্বর ব্লক তৃণমূলের সাধরণ সম্পাদক কাজল সামন্ত এবং দাসপুরের যুব তৃণমূল নেতা কৌশিক কুলভির। যিনি আবার তমলুক-ঘাটাল কো অপারেটিভ ব্যাঙ্কের পরিচালন কমিটির সম্পাদক।


শুভেন্দুর হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে ২ তৃণমূল নেতা ! তৃণমূলের অন্দরেই সমালোচনার সুর। বাসুদেবপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান ও তৃণমূল নেত্রী সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, দলে থেকে বিজেপির হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে থাকা, যেখানে খোদ বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী রয়েছেন, এটা বাঞ্ছনীয় নয়।


দাসপুর ১ তৃণমূল সংখ্যালঘু সেলের ব্লক সভাপতি শেখ গোলাম মোর্তাজা বলেন, উপপ্রধান কাজল সামন্ত ও কৌশিক কুলভি দু’জনেই সবদিনই বিজেপি ও শুভেন্দুর সাথে যুক্ত, তলে তলে ওরা বিজেপি করে।


সূত্রের খবর, শুভেন্দু অধিকারীর অনুগামীদের নিয়ে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপটি তৈরি হয় ২০১৯-এ। তখন শাসকদলে ছিলেন শুভেন্দু। পরে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন তিনি। তখন তৃণমূল নেতারা ওই গ্রুপ ত্যাগ করলেও কাজল সামন্ত ও কৌশিক কুলভি থেকে যান। বিষয়টি নিয়ে জলঘোলা হতেই সাফাই দিয়েছেন দুই শাসক নেতা।


বাসুদেবপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান ও তৃণমূল নেতা কাজল সামন্ত বলেন, আগে শুভেন্দু অধিকারীর সাথে যোগাযোগ থাকলেও বর্তমানে কোনও সম্পর্কই নেই। আর গ্রুপে থাকলেও আমি কোনও ম্যাসেজ করিনি, আগে হয়তো ওই হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে রয়ে গিয়েছিলাম জানতাম না। জানলাম, বেরিয়ে যাব।


দাসপুর যুব তৃণমূল নেতা কৌশিক কুলভি বলেন, যখন শুভেন্দু তৃণমূলে ছিল তখন ছিলাম। রাজনীতি করার জন্য এমন করছে, আমি গ্রুপে নেই।


এই ইস্যুতে ঘাটালের বিজেপি বিধায়ক শীতল কপাট বলেন, তৃণমুলের অনেকেই বিজেপির সাথে যোগাযোগ করে চলছে, তবে দু নৌকায় পা দিয়ে চললে হবে না, ভালো সংগঠক হলে তাদের স্বাগত।


পশ্চিম মেদিনীপুরের তৃণমূল কংগ্রেসের কোঅর্ডিনেটর অজিত মাইতি বলেন, কে কোন গ্রুপে আছে মাথাব্যথা নেই। কেউ বিজেপিতে যাবে না। বিজেপির অনেক বিধায়কই আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন তৃণমূলে আসার জন্য।


সব মিলিয়ে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপকে কেন্দ্র করে সরগরম এলাকা।