বিশ্বজিৎ দাস, মেদিনীপুর: রোগীভর্তির ব্যবস্থা থাকলেও, এখন সব বন্ধ। অল্প সময়ের জন্য খোলে আউটডোর। স্টাফ কোয়ার্টার্স আগাছায় ঢেকেছে। অভিযোগ, প্রশাসনিক উদাসীনতায় পশ্চিম মেদিনীপুরের খেমাশুলি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের এমনই দুর্দশা। স্বাস্থ্যকেন্দ্র পুরোদমে চালুর দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
ঢিল ছোড়া দূরত্বে জাতীয় সড়ক। দু'পা এগোলেই স্টেশন। এত ভাল যোগাযোগ ব্যবস্থার পরও, ধুঁকছে পশ্চিম মেদিনীপুরের খেমাশুলি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র।
৫০ বছর আগে রাজ্যের তৎকালীন স্বাস্থ্যমন্ত্রী অজিত পাঁজা এই হাসপাতালের উদ্বোধন করেন। কিন্তু, গত তিরিশ বছর ধরে এই প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বন্ধ রোগী ভর্তি।
আউটডোর খুললেও, মাত্র তিন ঘণ্টা মেলে পরিষেবা। এর ফলে ছোটখাটো কিছু ঘটলেও, খেমাশুলি এলাকার কয়েকশো মানুষকে ছুটতে হয় ঝাড়গ্রাম, মেদিনীপুর কিংবা খড়গপুরে।
খেমাশুলির এক বাসিন্দা তপন মাহাতো বললেন, আমরা এখানে ঠিকমতো চিকিৎসাই পাইনা। বেড তো দূরের কথা। এখানে এলে আমরা কিছু ওষুধ পাই, আবার কিছু ওষুধ পাই না।
আরেক বাসিন্দা তিমিরবরণ মাহাতো বলেন, অ্যাক্সিডেন্ট হলে পরিষেবা আমরা পায় না। প্রাথমিক চিকিৎসাও সেইভাবে হয় না। তাড়াতাড়ি পরিষেবা না পাওয়ার জন্য দুর্ঘটনা ঘটলে প্রাণহানি হয় বেশিরভাগ ক্ষেত্রে।
অভিযোগ, চিকিত্সা পরিষেবা যেমন মেলে না, তেমনই অবস্থা রক্ষণাবেক্ষণেরও। এলাকাবাসীর দাবি, প্রশাসনিক গাফিলতির ফলে, হাসপাতালের স্টাফ কোয়ার্টার্স ঢেকেছে আগাছায়।
পশ্চিম মেদিনীপুর মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ভুবনচন্দ্র হাঁসদা বলেন, স্টাফ কোয়ার্টারের অস্তিত্ব নেই, শুধুমাত্র আউটডোর চলে, ইনডোরের পরিকাঠামো নেই, এই মুহূর্তে লোকবলও নেই, চাহিদা থাকলে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরকে জানাব।
সরকারি হাসপাতালের বেহাল দশা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। খেমাশুলির বাসিন্দাদের তরজায় অবশ্য আগ্রহ নেই, তাঁরা চান স্বাস্থ্য ফিরুক হাসপাতালের।
জেলার আরেকটি হাসপাতালের অবস্থাও করুণ। অ্যানাস্থিটিস্ট না থাকায় দু’বছর ধরে কোনওরকম অস্ত্রোপচার হচ্ছে না পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোণা গ্রামীণ হাসপাতালে। ফলে দুর্ভোগে পড়েছেন রোগী ও তাঁদের পরিজনরা।
অস্ত্রোপচার বন্ধ থাকায় রোগীদের হয় ঘাটাল মহকুমা হাসপাতাল, নয়তো মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যেতে হচ্ছে। রোগীদের দুর্ভোগের কথা মেনে নিয়েছেন ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকও।