ব্রতদীপ ভট্টাচার্য, কলকাতা: রোগীরা তখন সকলে বেরিয়ে গেলেও কাজ করছিলেন হাসপাতাল কর্মীরা। হঠাতই কালো ধোঁয়া। দেখতে দেখতে ভয়ঙ্কর আগুনের খবর ছড়িয়ে পড়ল রাজ্যের অন্যতম সুপার স্পেশ্য়ালিটি হাসপাতাল, এসএসকেএম চত্বরে। কর্মীদের চোখেমুখে আতঙ্কের ছাপ স্পষ্ট। এক জন বললেন, 'প্রায় এক ঘণ্টা হয়ে গিয়েছে আগুন ধরেছে। আমরা ভিতরে ছিলাম। রিপোর্টিং রুমে গিয়ে দেখি কালো ধোঁয়া। দাউদাউ করে আগুন দেখলাম।'


ত্রাসের 'গ্রাস'...
হাসপাতাল কর্মীদের দাবি, ঘটনার সময় ভিতরে কোনও রোগী ছিলেন না। কাজ গোছাচ্ছিলেন কর্মীরাই। হঠাৎ রিপোর্টিং রুমের দিকে যেতেই কালো থিকথিকে ধোঁয়া নজরে আসে তাঁদের। এক কর্মীর কথায়, 'নিজেরাই জল দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করছিলাম। কিন্তু পারিনি। এত দাউদাউ করে আগুন জ্বলছিল, তাতে সকলে বেরিয়ে আসি।' তাঁদের মতে হঠাৎ কী থেকে আগুন এখনও বুঝতে পারেননি। আপাতত, আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার মরিয়া চেষ্টা করছে দমকল। সূত্রের খবর, পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আনাও গিয়েছে। যদিও হাসপাতাল চত্বরের বাইরে ভিড় করা রোগী-পরিবারের উৎকণ্ঠা এখনও কমেনি। 

কী ঘটেছিল?
বৃহস্পতিবার রাত ১০টা নাগাদ এসএসকেএম হাসপাতালে অগ্নিকাণ্ড ঘটে। যেখানে আগুন লেগেছে, সেটি হল, এসএসকেএম-এর এমার্জেন্সি বিল্ডিংয়ের দোতলায় অবস্থিত। সেখানে সিটি স্ক্যান হয়। বেশ কিছু ল্যাবরেটরিও রয়েছে। বিল্ডিংয়ের ভিতরে আগুন ধরেছে। যেখানে আগুন ধরেছে, সেখানে একাধিক শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র রয়েছে। ফলে আগুন সেখান থেকে ছড়িয়েছে কিনা, বা তার কারণে আগুন আরও ছড়াতে পারে কিনা, তা নিয়ে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। তবে এই মুহূর্তে ধোঁয়া বেড়ে চলেছে অনর্গল। দমকলের নয়টি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ফার্স্ট ফ্লোরে নিউ ক্যাজুয়াল্টি ব্লকে ৩০ থেকে ৩৫ জন রোগী ভর্তি ছিলেন। যেহেতু ধোঁয়া বেরোচ্ছে, তাই রোগীদের নিরাপত্তার কারমে নিউ ব্লকের ম্যাকেঞ্জি ওয়ার্ডে এবং ট্রমা কেয়ার সেন্টারে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। বৈদ্যতিক বিভ্রাটে সিটি স্ক্যান মেশিন এবং তার যন্ত্রাংশ থেকেই আগুনের উৎপত্তি বলে জানা গিয়েছে। কারও কোনও ক্ষতি হয়নি। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, এখনও পর্যন্ত আগুনের উৎসস্থলে পৌঁছনো সম্ভব হয়নি। তাই জানলার কাচ ভেঙে আগুন অ্যারেস্ট করার চেষ্টা চলছে, যাতে করিডর হয়ে অন্যত্র আগুন ছড়াতে না পারে। যেখানে আগুন লেগেছে, তার ঠিক উপরেই রোগীদের ওয়ার্ড রয়েছে। তাই আগুন যাতে কোনও ভাবে সেখানে পৌঁছতে না পারে, তা নিশ্চিত করাই এখন প্রধান লক্ষ্য।


আরও পড়ুন:এসএসকেএমে কীভাবে আগুন ? যা বললেন অরূপ...