কলকাতা: প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত দু’টি মামলা সরিয়ে নেওয়া হয়েছে তাঁর এজলাস থেকে। কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court)বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে (Justice Abhijit Ganguly) নিয়ে কড়া অবস্থান নিয়েছে দেশের শীর্ষ আদালত। সেই নিয়ে বিভিন্ন মহল থেকে তীব্র প্রতিক্রিয়া সামনে এলেও, বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়কে নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) পর্যবেক্ষণও চোখে পড়ার মতো।


এবিপি আনন্দ-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়কে নিয়ে মুখ খুলেছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। তার পর নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত একটি মামলার শুনানিতে অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্য়ায় এবং কুন্তল ঘোষকে খুব দ্রুত CBI এবং ED-র জিজ্ঞাসাবাদ করা উচিত বলেও মন্তব্য করেন (SSC Case)।


বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন অভিষেক। প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে সৌমেন নন্দী এবং রমেশ মালিকের দুটি মামলার ভিত্তিতে হাইকোর্টের নির্দেশকে সর্বোচ্চ আদালতে চ্য়ালেঞ্জ করেন তিনি।


তাতেই এবিপি আনন্দকে দেওয়া বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের সাক্ষাৎকাররে প্রসঙ্গ ওঠে প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় এবং পিএস নরসিংহের ডিভিশন বেঞ্চে। তাতে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের টেলিভিশন সাক্ষাৎকারের বিষয়টি জানতে পেরে অসন্তুষ্ট হয় শীর্ষ আদালত।


আরও পড়ুন: Justice Abhijit Ganguly: বিচারপতি গঙ্গোপাধ্য়ায়ের এজলাস থেকে সরল মামলা, প্রতিক্রিয়া বিভিন্ন মহলের


নিজেই যেখানে অভিষেককে নিয়ে মামলার শুনানি করছেন, সেখানে সাক্ষাৎকারে তাঁকে নিয়ে মন্তব্য করলেন  কী করে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়, প্রশ্ন তোলে শীর্ষ আদালত। প্রধাব বিচারপতি বলেন, “নিজের এজলাসে যে মামলা রয়েছে, তা নিয়ে কোনও টেলিভিশন চ্যানেল বা কোনও মাধ্যমকেই সাক্ষাৎকার দিতে পারেন না বিচারপতিরা।”


বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় টেলিভিশনে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন জেনে হতবাক হয়ে যান বিচারপতি নরসিংহ। তাঁকে বলতে শোনা যায়, “এ ভাবে সাক্ষাৎকার দিলেন কী করে?” প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়ের বক্তব্য ছিল, “সাক্ষাৎকারে আবেদনকারীকে নিয়ে যে ভাবে কথা বলেছেন বিচারপতি, এই মামলায় আর অংশ নিতে পারেন না তিনি।” তাতে অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল এসভি রাজু জানান, নিয়োগ দুর্নীতি একটি অতি বড় দুর্নীতি। তার পাল্টা শীর্ষ আদালত জানায়, তদন্তে কোও হস্তক্ষেপই করছে না তারা। তা নিয়ে কোনও রায়ও দিচ্ছে না শীর্ষ আদালত। আদালতের বক্তব্য ছিল, “একজন বিচারপতি সাক্ষাৎকার দিচ্ছেন, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকে নিয়ে নিজের মতামত জানাচ্ছেন, এটা নিয়েই প্রশ্ন। হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির উচিত, মামলা অন্য কাউকে দেওয়া। আগেই বলেছিলাম, বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন আমরা।”


প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতির দুটি মামলা থেকে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়কে সরানোর নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। কয়েক মাস আগে প্রাথমিকের দু’টি মামলা ছাড়া, নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত বাকি মামলাগুলি আগেই সরানো হয়েছিল বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর বেঞ্চে। এ বার তাঁর এজলাসে থাকা দু’টি মামলাও সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিল সর্বোচ্চ আদালত।