সৌভিক মজুমদার, ব্রতদীপ ভট্টাচার্য ও সঞ্চয়ন মিত্র: প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতির (SSC Case) দুটি মামলা বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের (Justice Abhijit Ganguly) এজলাস থেকে অন্য বিচারপতির এজলাসে পাঠানোর প্রশাসনিক নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। এ নিয়ে কী বলছেন বিশেজ্ঞরা? প্রাক্তন অ্যাডভোকেট জেনারেল থেকে সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি, প্রতিক্রিয়া জানালেন অনেকেই।
নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত দু'টি মামলা অন্য বিচারপতির এজলাসে পাঠানো হল
প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত দু'টি মামলা বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাস থেকে অন্য বিচারপতির এজলাসে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়, যা নিয়ে আইনজ্ঞদের নানা মত রয়েছে।
এ নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি সমরেশ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "হাইকোর্টের হায়ার অথরিটি সুপ্রিম কোর্ট নয়। যদি এটা অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ অর্ডার হয়, অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ হায়ার অথরিটি সুপ্রিম কোর্ট নয়। অভিজিতের বদলে যেই আসুন না কেন, বিচার বিচারের মতোই হবে। প্রভাব পড়বে না। কিছু কিছু লোক আনন্দিত হচ্ছেন, যাঁদের ইন্টিগ্রিটি নিয়ে প্রশ্ন আছে। কিন্তু তাতে কিছু যায় আসে না। কোর্টে বিচার হবে গাঙ্গুলি থাকুন, আর যিনিই থাকুন, বিচার হবেই। কলকাতা হাইকোর্টের একটা ঐতিহ্য রয়েছে।"
আরও পড়ুন: Justice Abhijit Ganguly: পোস্টার-ফ্লেক্স থেক জয়ধ্বনি, ‘ভগবান’ হয়ে উঠেছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়
সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অশোক গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, "কোন মামলা কোন বিচারপতি শুনবেন, তা সুপ্রিম কোর্ট ঠিক করে দিতে পারে না। সেই এক্তিয়ার সর্বোচ্চ আদালতের নেই। তবে বিচারাধীন বিষয় নিয়ে সংবাদমাধ্যমে মুখ খোলা উচিত নয় কোনও বিচারপতির।"
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ নিয়ে প্রাক্তন অ্যাডভোকেট জেনারেল বিমল চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, "চিফ জাস্টিস যেভাবে সরিয়েছেন, আমার ভাল লাগেনি। অভিজিৎ গাঙ্গুলির সম্মাননরক্ষার দায়িত্ব তো চিফ জাস্টিস অফ ইন্ডিয়ারও। কারণ উনি তো ভাল কাজ করছিলেন। ওঁর কাছ থেকে এটা অনভিপ্রেত।"
বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাস থেকে মামলা সরানোয় তীব্র প্রতিক্রিয়া
প্রাক্তন অ্যাডভোকেট জেনারেল জয়ন্ত মিত্রের বক্তব্য়, "সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিয়েছে শুনলাম। দুর্ভাগ্যজনক। প্রভাব পড়বে না। যাদের ঘরেই যাক, কাগজ দেখেই নির্দেশ দেবে।"
বিংশ শতাব্দীর খ্য়াতনামা বিচারপতি লর্ড ডেনিংকে বলা হত, ‘জনগণের বিচারক’। পক্ষপাতহীন বিচার ও জনগণের স্বার্থে তিনি আইনকে ব্যবহার করেছেন। ন্যায়বিচারের তীব্র অনুভূতির জন্য় মাঝেমধ্যেই তিনি বিতর্কে জড়াতেন। তাই বহু আইন বিশেষজ্ঞই বলেন, বিতর্ক যতই হোক না কেন, ন্য়ায় বিচার সবচেয়ে জরুরি।