কলকাতা: 'ওএমআর শিট মূল্যায়নকারী সংস্থার প্রতি তৎকালীন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যর এত প্রেম কেন?' অতিরিক্ত প্যানেলের বিষয়ে মানিক ভট্টাচার্যকে জেরার নির্দেশ দিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। ৭ দিনের মধ্যে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। 'অপসারিত সিবিআই আধিকারিক কোনও সরকারি সংস্থায় কাজ করার উপযুক্ত নন'। সিবিআইকে বিভাগীয় তদন্ত শুরু করারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। 'আমাকে তো দেখছি ইংল্যান্ডের তদন্তকারী সংস্থা এমআই ফাইভের উপর ভরসা করতে হবে। মামলার সঙ্গে যুক্ত সব সিবিআই আধিকারিকের ব্যক্তিগত সম্পত্তি খুঁজে বের করার নির্দেশ দেব'। এদিন শুনানিতে এমনই মন্তব্য করেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়।
গত ৩১ জানুয়ারি স্কুলে নিয়োগ দুর্নীতি তদন্ত নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে ফের প্রশ্নের মুখে পড়েছিল CBI. মানিক ভট্টাচার্যকে কেন গ্রেফতার করতে পারেননি?
কেন দেরি হয়েছিল? ভর্ৎসনা করে প্রশ্ন তুললেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। ক্ষোভ প্রকাশ করলেন আরেক বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুও। প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অসন্তোষ প্রকাশ করে, মঙ্গলবার সিবিআই-এর তদন্তকারী অফিসার সোমনাথ বিশ্বাসকে সিট থেকে সরিয়ে দিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্য়ায়। নতুন তদন্তকারী অফিসারের নাম জানাতে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
তাৎপর্যপূর্ণভাবে সিবিআই-এর পরিবর্তে এবার প্রয়োজনে ডিআইজি সিআইডি-কে তদন্তের ভার দেওয়া নিয়েও চিন্তাভাবনার ইঙ্গিত দিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনের নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত একটি মামলার শুনানি ছিল মঙ্গলবার। তখনই ওঠে প্রাথমিকের নিয়োগ দুর্নীতির প্রসঙ্গ। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন,নিয়োগ দুর্নীতির অনেক মামলায় তো সিবিআই তদন্ত করছে।
কিন্তু CBI, মানিক ভট্টাচার্যকে গ্রেফতার করতে পারল না কেন? কেন দেরি করলেন? ওই সময়ে তিনি তো সুপ্রিম কোর্টে চলে গেলেন। সেখান থেকে রক্ষাকবচ নিয়ে নিলেন। এরপরই ক্ষুব্ধ বিচারপতি, সিবিআই-এর সিট থেকে তদন্তকারী অফিসার সোমনাথ বিশ্বাসকে সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন তিনি। সেই সঙ্গে এই নির্দেশও দেন, তদন্তের কোনও কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারবেন না সোমনাথ বিশ্বাস।
মামলকারীর আইনজীবী ফিরদৌস শামিম যুক্তি দেন, সুপ্রিম কোর্টের একাধিক রায়ে বলা হয়েছে সরকারের উপরমহল থেকে কোনও অনিয়ম হলে সিআইডির পরিবর্তে সিবিআইকে সরাসরি তদন্ত করতে দেওয়া যেতে পারে।
পর্যবেক্ষণে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্য়ায় বলেন, সিবিআইয়ের হাতে এখন অনেক মামলা রয়েছে। অফিসারের অভাব রয়েছে। সিআইডিকে তদন্তভার দেওয়া যেতেই পারে। প্রয়োজনে আদালত নজরদারি করবে।
তিনি আরও বলেন, হাইকোর্টের অন্য একটি বেঞ্চ এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি রহস্যভেদে ডিআইজি সিআইডি-কে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। এর আগে গ্রুপ সি - গ্রুপ ডি নিয়োগে দুর্নীতি মামলায় সিবিআই তদন্তের গতিপ্রকৃতি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তখন সিবিআইয়ের বিশেষ তদন্তকারী দল থেকে ২ জনকে বাদ দিয়ে, ৪ অফিসারকে সিটের অন্তর্ভূক্ত করেছেন তিনি।
যদিও এদিন মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনের মামলায় তদন্তভার নিয়ে কোনও নির্দেশ দেয়নি আদালত। দু'সপ্তাহ পর মামলাটি ফের শুনানি রয়েছে। গত বুধবার নতুন তদন্তকারী অফিসার হিসেবে তিনজনের নাম আদালতের কাছে প্রস্তাব করতে পারে সিবিআই।