সুনীত হালদার, হাওড়া: বিবাহবিচ্ছেদের (Divorce Case) মামলা চলছিল, তার মধ্যেই স্ত্রীকে (Domjur Wife Murder) খুনের অভিযোগ উঠল স্বামীর বিরুদ্ধে। গত কাল অর্থাৎ রবিবার রাতে ডোমজুড়ে ঝালোয়ারবাড় এলাকায় ঘটনাটি ঘটে। গ্রেফতার করা হয়েছে অভিযুক্ত স্বামীকে।
কী জানা গেল?
তদন্তে নেমে পুলিশ জেনেছে, বছর দেড়েক আগে ডোমজুড়ের শলপ হাজরা পাড়ার বাসিন্দা অনুশ্রী হাজরার সঙ্গে পাশের পাড়ার চন্দন মাঝির বিয়ে হয়। তাঁদের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা ছিল বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। পরে দুই পরিবারের সম্মতিতেই বিয়ে হয় অনুশ্রী ও চন্দনের। অনুশ্রী নাচ করতে ভালোবাসতেন। স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন সে কথা জানতেনও বলে দাবি তরুণীর পরিবারের। কিন্তু অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই তাঁকে নৃত্যানুষ্ঠান করতে বাধা দেওয়া হত। এমনকি এ জন্য বেধড়ক মারধরও করা হয়েছে অনুশ্রীকে, অভিযোগ আরও। নির্যাতন সহ্য না করতে পেরে মাস ছয়েক আগে তিন বাপের বাড়িতে ফিরে এসেছিলেন, জানাচ্ছেন পরিজনেরা। সেখান থেকেই মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভের চাকরি শুরু করেন। পাশাপাশি, ছোটদের নাচও শেখাতেন। গত শনিবার তাঁর জন্মদিন ছিল। সেই উপলক্ষ্যে অনুষ্ঠান করতেই বাড়িতে আত্মীয়-স্বজনদের নিমন্ত্রণ করেছিলেন। কেক এবং বিরিয়ানির ব্যবস্থাও করা হয়। এর মধ্যেই খুনের ঘটনা।
কী ঘটেছিল?
পরিবারের লোকজন জানাচ্ছেন, বন্ধুর বাড়িতে যাওয়ার জন্য অনুশ্রী সাইকেল নিয়ে বের হন। গত কাল রাত আটটা নাগাদ মায়ের সঙ্গে কথা হয়েছিল তাঁর। বাড়িতে ফিরছেন বলে জানান। এর পরই ঝালুয়ারবাড় এলাকায় নির্জন এবং অন্ধকার রাস্তায় মাথায় ধারাল অস্ত্রের কোপে খুন হন অনুশ্রী, এমনই অনুমান পুলিশের। তাঁর রক্তাক্ত দেহ পড়েছিল একসরা রোডে। চোখ বাধা ছিল। দেহের পাশে পড়েছিল একটি ভ্যানিটি ব্যাগ। সেই ব্যাগে পাওয়া আধার কার্ড থেকে মৃতার পরিচয় পায় পুলিশ। ডোমজুড় থানার পুলিশ মৃতার পরিবারকে ফোন করে থানায় ডাকে। সেখানে গিয়েই মর্মান্তিক পরিণতির কথা জানতে পারেন অনুশ্রীর পরিজনেরা। তদন্তে নেমে পুলিশ তাঁর স্বামী চন্দন মাঝিকে গ্রেফতার করে। পুলিশের দাবি, জেরায় চন্দন তাঁর অপরাধের কথা স্বীকার করেছেন। ধৃতের বিরুদ্ধে খুনের মামলা শুরু করেছে পুলিশ। তাঁকে আজ হাওড়া আদালতে তোলার কথা। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, বিবাহবিচ্ছেদ মামলা তুলে নেওয়ার জন্য স্ত্রীর সঙ্গে চন্দনের ঝামেলা চলছিল। তাঁকে তিনি সন্দেহ করতেন। এর জেরেই খুন।