দীপক ঘোষ, বিজেন্দ্র সিংহ ও সুদীপ্ত আচার্য, কলকাতা: কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাতে নয়া সংযোজন ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো (East West Metro)। প্রকল্পের উদ্বোধনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Mamata Banerjee) না ডাকা নিয়ে একদিকে ফুঁসছে রাজ্য, অন্য দিকে রাজ্যের আচরণ নিয়ে পাল্টা প্রশ্ন তুলেছে বিজেপি। নানা বিষয়ে কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাত এখন কার্যতই নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই আবহে মাসখানেক আগের কামারকুন্ডু রেলব্রিজ (Kamarkundu Rail Bridge) উদ্বোধন ঘিরে টানাপোড়েনের প্রসঙ্গও উঠে আসছে। কেন্দ্র-রাজ্য সমীকরণে সংঘাতই এখনকার সংস্কৃতি হয়ে উঠেছে কিনা, প্রশ্ন উঠছে। 


একের পর এক বিষয়ে সংঘাত চলছেই


মমতা যখন দার্জিলিংয়ে, সেই সময়ই কলকাতায় শিয়ালদা থেকে সেক্টর ফাইভ পর্যন্ত ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর উদ্বোধন করলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি। একেবারে শেষ মুহূর্তে অনুষ্ঠানে মমতাকে আমন্ত্রণ জানানো হয় বলে খবর। কিন্তু উত্তরবঙ্গে পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি থাকায় তিনি যাননি। রাজ্যের তৃণমূল সরকারের কোনও প্রতিনিধিকেও মেট্রোর অনুষ্ঠানে দেখা যায়নি। আমন্ত্রণ পেয়েও আসেননি নয়না দাস, সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, পরেশ পালরা। 


এ নিয়ে কলকাতা উত্তরের সাংসদ সুদীপের বক্তব্য, "আমার হাতে কেউ চিঠি দেয়নি। গতকাল পর্যন্ত কোনও চিঠি পাইনি আমি। কাল বিকেলের বিমানে দিল্লি এসেছি। পরে রাতে বাড়িতে চিঠি পৌঁছে দেওয়া হয় বলে খবর পেয়েছি।"


আরও পড়ুন: Anis Khan Case: ডায়েরি হয়নি, দেওয়া হয়নি নোটিসও, অথচ গভীর রাতে হাজির পুলিশ, আনিসকাণ্ডে অধরা বহু প্রশ্নের উত্তর


বার বার এমন সংঘাত দুই পক্ষের জন্য কতটা সুখকর, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। কারণ মাসখানেক আগেই, কামারকুন্ডু রেল ব্রিজ উদ্বোধন ঘিরেও টানাপোড়েন দেখা দেয়। গত ৩ জুন ওই ব্রিজের উদ্বোধন করেন মমতা। সেখানে রেলের কাউকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি বলে অভিযোগ। রেলের দাবি, রেলমন্ত্রী যাতে সেদিন উদ্বোধনে অংশ নিতে পারেন, তার জন্য জেলাশাসককে চিঠি দেওয়া হয় রেলের তরফে। কিন্তু তাতেও সূচি পাল্টানো হয়নি বলে অভিযোগ। 


এর পর, মমতা সেতু উদ্বোধন করার এক সপ্তাহ পর, ওই সেতু নতুন করে উদ্বোধনের সিদ্ধান্ত নেন রেল কর্তৃপক্ষ। ১০ জুন ভার্চুয়াল মাধ্য়মে ব্রিজের উদ্বোধন করেন রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণো।  তাতে আরামবাগের সাংসদ অপরূপা পোদ্দার এবং বিধায়ক বেচারাম মান্নাকে আমন্ত্রণ জানানো হলেও, তাঁরা এবং তৃণমূলের কেউই অংশ নেননি। 


রাজনৈতিক সৌজন্য আজকের দিনে উধাও!


বার বার এই সংঘাতের জন্য যদিও তৃণমূল সরকারকেই কাঠগড়ায় তুলেছে বিরোধীরা। তাদের দাবি, ২০১১ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকে মমতা যতগুলি প্রশাসনিক বৈঠক করেছেন, কোথাও কোনও বিরোধী দলের জনপ্রতিনিধিদের ডাকা হয়নি। তাই রাজনৈতিক সৌজন্য কি কার্যত উবে যেতে বসেছে, প্রশ্ন উঠছে বিভিন্ন মহলে।