সোমনাথ দাস, সৌমেন চক্রবর্তী, পশ্চিম মেদিনীপুর : ' আরও খুশি হতাম ওই জুতোটা যদি ওনার টাকে লাগত।' ক্ষোভে ফেটে পড়ে জোকা ESI হাসপাতালে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের দিকে চটি ছুড়েছেন, আমতলার বাসিন্দা শুভ্রা ঘোড়ুই। তারপর থেকেই বাংলার রোয়াক থেকে অন্দরমহল, আড্ডার ঠেক থেকে রাজনীতির আঙিনা, সব জায়গায় ঘুরে ফিরে আসছে তাঁর নাম। যদিও পরদিন সেই জোশে অনেকটাই রাশ টেনে আবেগভরা গলায় বলেন, উত্তেজনার বশে ঘটিয়ে ফেলেছেন কাজটা। তবে তাঁর পাশে এখন অনেক মানুষ, এমনকী তৃণমূল কর্মীদেরও কেউ কেউ। এই যেমন, শ্যামাপদ কুণ্ডু। 


CPM নেতাকে জুতো 
দিনটা ছিল, ২০১২-র ৬ মার্চ। বেনাচাপড়া কঙ্কালকাণ্ডে ধৃত প্রাক্তন মন্ত্রী ও সিপিএম নেতা সুশান্ত ঘোষ, মেদিনীপুর জেলা ও দায়রা আদালত থেকে বেরনোর সময়, তাঁকে জুতো দিয়ে মেরেছিলেন তৃণমূলকর্মী শ্যামাপদ কুণ্ডু। সেই তিনিই এখন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের দিকে চটি ছুড়ে মারার ঘটনায় শুভ্রা ঘোড়ুইয়ের পাশে দাঁড়াচ্ছেন। ' শুভ্রা পার্থকে মেরেছে, বেশ করেছে। ' বলছেন পার্থর দলের কর্মীই। 


ওর পুজোর উপহার : শুভ্রা 
শুভ্রা ঘোড়ুইও ইতিমধ্যেই বুঝিয়ে দিয়েছেন, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের দিকে চটি ছুড়ে তিনি বিন্দুমাত্র অনুতপ্ত নন। পরদিন গলা নরম হলেও তিনি বলেন, ওকে মারা চটি কেন নেব? ওর পুজোর উপহার । একইভাবে ১০ বছর আগের ঘটনার জন্য অনুতপ্ত নন শ্যামাপদও। তিনি আজও বলেন, ' অনুতপ্ত নই, তৃণমূল করতাম আমার উপর অত্যাচার করত, ব্যবসা করতে দেয়নি। আবার দেখা হলে আবার মারব। ক্ষমা চাওয়ার প্রশ্ন নেই। একটা খুনিকে মেরেছি। ' 
যদিও, সেদিন শুভ্রার জুতো পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের গায়ে লাগেনি। গাড়িতে লেগে পড়ে যায়। দক্ষিণ ২৪ পরগনার আমতলার বাসিন্দা এই মহিলা মঙ্গলবার দাবি করেন,  তিনি স্কুল শিক্ষিকার চাকরির জন্য চেষ্টা করেও পাননি। তিনি বলেন,  ' আমি ওনাকে জুতো মারতে এসেছি, জুতো মেরে খালি পায়ে বাড়ি যাচ্ছি। জন সাধারণের কত গরিব মানুষের টাকা নিয়ে, কোটি কোটি টাকা, ফ্ল্যাট কিনে রেখে দিয়েছেন, আবার বলেন কেন? ওনাকে এসি গাড়ি চড়িয়ে, ওনাকে গলায় দড়ি দিয়ে টানতে টানতে নিয়ে আসবেন। '


সব মিলিয়ে জুতো বিতর্ক জোরাল বঙ্গে।