কলকাতা : ১৭ এপ্রিল হিমোফিলিয়া দিবস ( World Hemophilia Day 2023 ) । হিমোফিলিয়া রক্ত জমাট বাঁধার সমস্যা। এই রোগ কিন্তু খুব একটা সাধারণ নয়। কিন্তু খুবই গুরুতর। যাঁদের শরীরে বাসা বাঁধে, তাঁদের মৃত্যুও ঘটতে পারে। তাই প্রথম থেকেই তিনে রাখা দরকার এই অসুখের লক্ষণগুলি।
কারও শরীরে কোনও আঘাত লাগার পর যখন দেখা যায় রক্ত কিছুতেই থামছে না, তখন নিঃসন্দেহে চিন্তার বিষয়। হিমোফিলিয়া রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির রক্তক্ষরণ অন্যান্যদের তুলনায় অতিরিক্ত বেশি। এর ফলে ঘটতে পারে মৃত্যু!
সব ক্ষেত্রে আবার বাইরের আঘাত নয়, শরীরের ভিতরে রক্তক্ষরণ হতে পারে হিমোফিলিয়ায় । এটি একটি বিরল রোগ। তাই সাধারণের সচেতনতার অভার লক্ষ করা যায়। মোটামুটি দশ হাজারে একজনের হিমোফিলিয়া হতে পারে।
আসলে, হিমোফিলিয়ায় আক্রান্ত হলে, শরীরে রক্ত জমাট বাঁধার প্রক্রিয়া ধীর হয়ে যায়। শরীরের কোনো অংশে আঘাত বা কাটার পর রক্তপাত বন্ধ হতে সময় লাগে। অনেক সময় রক্তক্ষরণের পর সময়মতো চিকিৎসা না করালেঅতি রক্তক্ষরণে মৃত্যু ঘটতে পারে।
সমীক্ষা বলছে, এই রোগটি মহিলাদের তুলনায় পুরুষদের মধ্যে বেশি দেখা যায়। ভারতে প্রতি ৫ হাজার জন পুরুষের মধ্যে একজন হিমোফিলিয়ায় ভুগছেন। প্রতি বছর আমাদের দেশে প্রায় ১৩০০ শিশু হিমোফিলিয়া নিয়ে জন্মগ্রহণ করে।
হিমোফিলিয়া কি?
হিমোফিলিয়া আদতে রক্তক্ষরণ সংক্রান্ত ব্যাধি। রক্তে থ্রমবিন নামক পদার্থের ঘাটতির কারণে এই রোগ হয়। এটি এমন একটি পদার্থ যা রক্তকে দ্রুত জমাট বাঁধার ক্ষমতা রাখে। এটি এক ধরনের জিনগত রোগ, এই সমস্যায় রক্তপাত শুরু হলে জমাট বাঁধে না, থামতে চায় না , কিছু সময় পর মারাত্মক পরিণাম নিয়ে আসে।
এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে ক্লটিং ফ্যাক্টর অর্থাৎ রক্ত জমাট বাঁধা বন্ধ হয়ে যায়। স্বাভাবিক মানুষের ক্ষেত্রে যখন কোনও আঘাত লাগে তখন রক্ত জমাট বাঁধার জন্য প্রয়োজনীয় উপাদানগুলো রক্তে উপস্থিত প্লেটলেটের সঙ্গে মিশে যায় এবং রক্ত জমাট বাঁধতে সাহায্য করে।
হিমোফিলিয়ার লক্ষণ
- ইনজেকশনের পরে রক্তপাত
- ত্বকের নিচে রক্তপাত
- ঘন ঘন নাক দিয়ে রক্ত পড়া
- মাড়ি থেকে রক্তপাত
- সন্তান প্রসবের পর মাথায় রক্তক্ষরণ
- মল বা বমিতে রক্ত
- আঘাতের পর রক্তপাত বন্ধ না হওয়া
হিমোফিলিয়ার প্রকার
হিমোফিলিয়া রোগ সাধারণত দুই ধরনের হয়।
- হিমোফিলিয়া এ ( Hemophilia A )
- হিমোফিলিয়া বি ( Hemophilia B )
হিমোফিলিয়ার চিকিৎসা কি
ক্লটিং ফ্যাক্টর প্রতিস্থাপন করাই হিমোফিলিয়ার চিকিত্সার সর্বোত্তম উপায় হিসাবে বিবেচিত হয়। এই পদ্ধতির সাহায্যে এটি রক্ত জমাট বাঁধার প্রক্রিয়া স্বাভাবিক করতে সাহায্য করে। এই প্রক্রিয়ার অধীনে, কৃত্রিমভাবে প্রস্তুত ক্লটিং ফ্যাক্টরগুলি রোগীর শিরাতে ইনজেকশনের মাধ্যমে প্রবেশ করানো হয়।
ডিসক্লেইমার : কপিতে উল্লেখিত দাবি, পদ্ধতি পরামর্শস্বরূপ। প্রয়োজনীয় চিকিৎসাপদ্ধতি/ডায়েট ফলো করার জন্য অবশ্যই বিশেষজ্ঞ / চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলুন ও সেইমতো নিয়ম মেনে চলুন।