কলকাতাকেউ ছেড়েছেন তো কেউ ফিরেছেন। বিধানসভা ভোটের আগে কার্যত দুভাগে ভাগ হয়ে গিয়েছিল টলিউড (Tollywood)। একাংশের তৃণমূলে (TMC) যোগ দেওয়ার হিড়িক, আরেক অংশ নাম লিখিয়েছিল গেরুয়া শিবিরে (BJP)। সেই তালিকায় ছিল টলিউডের প্রথম সারির অভিনেতা-অভিনেত্রী থেকে পরিচালকের নামও। ভোট পর্ব মেটার পর কেউ কেউ বিধায়কের আসনে বসেছেন। কেউ পেয়েছেন সংশ্লিষ্ট দলে কোনও পদ। কেউ আবার ক্ষোভ প্রকাশ করে দল ত্যাগও করেছেন। ফিরে দেখা ২০২১ সালের সেলেবদের দল-নীতি....


রাজ চক্রবর্তী: পরিচালক হিসেবেই পরিচিতি ছিল তাঁর। বিধানসভা ভোটের আগে চলতি বছর ফেব্রুয়ারি মাসে যোগ দেন তৃণমূলে। বিধানসভা ভোটে তাঁকে টিকিটও দেয় তৃণমূল। নির্বাচনে জিতে বর্তমানে তিনি ব্যারাকপুরের বিধায়ক।




কাঞ্চন মল্লিক: রাজ চক্রবর্তীর সঙ্গে একই মঞ্চে দাঁড়িয়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন অভিনেতা কাঞ্চন মল্লিকও। তাঁর হাতে দলীয় পতাকা তুলে দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিধানসভা ভোটে উত্তরপাড়া বিধানসভা কেন্দ্রে তাঁকে প্রার্থী করেছিল তৃণমূল। বর্তমানে তিনি উত্তরপাড়ার বিধায়ক।


রুদ্রনীল ঘোষতাঁর দলবদলের জল্পনা শুরু হয়েছিল আগেই। সেই জল্পনা সত্যি করেই বিজেপিতে যোগ দেন একদা তৃণমূল ঘনিষ্ঠ অভিনেতা রুদ্রনীল ঘোষ। ২০১৪ সালের লোকসভা ভোটের সময় থেকেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ হিসেবে রুদ্রনীল ঘোষকে দেখা গিয়েছিল। দীর্ঘ ৭ বছরের সম্পর্ক কাটিয়ে পদ্ম শিবিরে প্রবেশ করেন অভিনেতা।




সায়নী ঘোষ: বিধানসভা ভোটের আগে হুগলির সাহাগঞ্জের ডানলপ মাঠে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে তৃণমূলের সভায় জোড়াফুল পতাকা হাতে তুলে নেন সায়নী ঘোষ। আসানসোল দক্ষিণে অগ্নিমিত্রা পালের কাছে পরাজিত হন তৃণমূল প্রার্থী সায়নী ঘোষ। চলতি বছর জুন মাসে তৃণমূলের যুব সভাপতি হন সায়নী।


কৌশিক রায়তিনি টেলিভিশনের পরিচিত মুখ। বিধানসভা নির্বাচনের আগে আনুষ্ঠানিকভাবে বিজেপিতে যোগ দেন অভিনেতা কৌশিক রায়। বিজেপির রাজ্য সদর দফতরে কৌশিকের হাতে দলীয় পতাকা তুলে দেন, হাজির ছিলেন সৌমিত্র খাঁসহ অনন্য বিজেপি নেতারা। 


বাবুল সুপ্রিয়কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা থেকে নাম বাদের পরই বেসুরো হন বাবুল সুপ্রিয়। জল্পনা উস্কে শেষমেশ বিজেপি ছাড়েন সঙ্গীতশিল্পী। সেপ্টেম্বরে তৃণমূলেও যোগ দেন তিনি। তবে শুধু গেরুয়া শিবিরই ছাড়েননি আসানসোলের সাংসদ পদ থেকেও ইস্তফা দেন বাবুল।


অদিতি মুন্সিবিধানসভা ভোটের আগে  ৪ মার্চ ঘাসফুল শিবিরে যোগ দেন সঙ্গীতশিল্পী অদিতি মুন্সি।  তৃণমূল ভবনে সৌগত রায়ের হাত থেকে দলীয় পতাকা তুলে নেন অদিতি। রাজারহাট গোপালপুর বিধানসভা কেন্দ্রে জয়ী হন তৃণমূল কংগ্রেসের তারকা প্রার্থী অদিতি মুন্সি।


হিরণ চট্টোপাধ্যায়টলিউড অভিনেতা হিসেবে তাঁর নাম সবারই জানা। তৃণমূল ছেড়ে গেরুয়া শিবিরে নাম লেখানোর তালিকায় রয়েছেন হিরণও। বিজেপির টিকিটে খড়গপুর বিধানসভা কেন্দ্র থেকে ভোটে লড়াই করেন তিনি। বর্তমানে খড়গপুরের বিধায়ক টলি অভিনেতা।


সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়টলিউডের অতি পরিচিত মুখ তিনি। একাধিক ছবিতে মুখ্য ভূমিকায় অভিনয় করেছেন সায়ন্তিকা। মার্চ মাসে তৃণমূলে যোগ দেন সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। বিধানসভা ভোটে তৃণমূলের টিকিটে লড়লেও পরাজিত হন তিনি। বর্তমানে তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক তিনি।


জুন মালিয়াফেব্রুয়ারি মাসে তৃণমূলের সভায় দলে যোগ দেন অভিনেত্রী জুন মালিয়া। ২০২১ বিধানসভা ভোটে তৃণমূল কংগ্রেসের হেভি ওয়েট তারকা প্রার্থীদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন জুন। মেদিনীপুর বিধানসভা কেন্দ্র থেকে জয়ী হন প্রথমবারেই।


তনুশ্রীবিধানসভা ভোটের আগে  বিজেপিতে যোগ দেন অভিনেত্রী তনুশ্রী চক্রবর্তী। বিজেপির তারকা প্রার্থীদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন অভিনেত্রী। হাওড়ার শ্যামপুর থেকে বিধানসভা ভোটে বিজেপির টিকিটে লড়লেও পরাজিত হন তিনি।


শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়বিধানসভা ভোটের আগে দিলীপ ঘোষ, কৈলাস বিজয়বর্গীয় ও স্বপন দাশগুপ্তের উপস্থিতিতে বিজেপিতে যোগ দেন টলিউড অভিনেত্রী। তবে মাসখানেকের মধ্যেই মোহভঙ্গ হয় শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়ের । গত মাসে ট্যুইট করে অভিনেত্রী জানিয়ে দেন, তাঁর সঙ্গে আর বিজেপির কোনওরকম সম্পর্ক নেই।





পায়েল সরকার: চলতি বছর বিধানসভা ভোটের আগে গেরুয়া শিবিরে যোগ দেন পায়েল। বিজেপির তারকা প্রার্থীদের তালিকাতেও ছিলেন অন্যতম। বেহালা পূর্ব বিধানসভা কেন্দ্রে বিজেপির টিকিটে লড়লেও তৃণমূল প্রার্থী রত্না চট্টোপাধ্যায়ের কাছে পরাজিত হন।


কৌশানি মুখোপাধ্য়ায়রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলে যোগ দেন টালিগঞ্জের নতুন প্রজন্মের অভিনেত্রী কৌশানি মুখোপাধ্যায়। টলিউড অভিনেত্রীর সঙ্গে শাসক শিবিরে যোগ দিলেন IMPA- সভাপতি পিয়া সেনগুপ্তও। কৃষ্ণনগর উত্তর বিধানসভা কেন্দ্রে কৌশানি প্রার্থী হলেও শেষ পর্যন্ত পরাজিত হন তিনি।


অনিন্দ্য পুলক বন্দ্যোপাধ্যায়২০১৯-এর লোকসভা ভোটের পর দিল্লি গিয়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন অভিনেতা অনিন্দ্য পুলক। কিন্তু বিধানসভা ভোটে সেই ছবিটা বদলে যায়। নেতৃত্বের বিরুদ্ধে রীতিমতো ক্ষোভ প্রকাশ করে গেরুয়া শিবির ত্যাগ করেন অভিনেতা।