সোমনাথ দাস, চন্দ্রকোণা: বার বার বলা সত্ত্বেও অনেকে এখনও সতর্ক নন। অথচ ডেঙ্গির বিপদ যে শিয়রে, সে কথা বলাই বাহুল্য। এবার তাই ডেঙ্গির (Dengue) বাহক, মশা (Aedes Aegypti) সেজে সতর্কতামূলক প্রচারের অভিনব পথ বেছে নিলেন চন্দ্রকোণার (Chandrakona) এক যুবক। নাম ত্রিণাঙ্কুর পাল। 


বিশদে...
ঘরে ঘরে এখন জ্বর, সর্দি-কাশি, সঙ্গে গায়ে-হাত-পায়ে ব্যথা। কারও কারও অন্যান্য উপসর্গও রয়েছে। এঁদের মধ্যে কে বা কারা ডেঙ্গি আক্রান্ত, তা সাধারণ মানুষ অনেক সময়ই বুঝতে দেরি করে ফেলছেন। কখনও আবার ডেঙ্গির চিকিৎসায় গাফিলতিরও অভিযোগ উঠেছে। ফল? আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে হুড়মুড়িয়ে, মৃতের তালিকা লম্বা হচ্ছে। কিন্তু সেই অনুপাতে সতর্কতা বাড়ছে কি? সেই ভাবনা থেকেই অভিনব প্রচারের উদ্যোগ পেশায় কৃষক ত্রিণাঙ্কুরের। মনে করেন, সরকারি প্রচার মাধ্যম ছাড়াও প্রত্যেক মানুষের সামাজিক কর্তব্য রয়েছে। গত কাল অর্থাৎ রবিবার সন্ধ্যায় তাই পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ঘাটালের কলেজ মোড় এলাকায় একটি গণেশ পুজোর মণ্ডপের সামনে ডেঙ্গির মশা সেজেই সচেতনতামূলক প্রচারে বেরিয়ে পড়েন তিনি। 


প্রথম নয়... 
করোনা পরিস্থিতি যখন উদ্বেগ বাড়িয়েছিল, তখনও রাস্তায় নেমে প্রচার করেছিলেন তিনি। কখনও বা প্লাস্টিক ব্যবহার বন্ধে এগিয়ে আসেন। কখনও সাইকেল নিয়ে, কখনও আবার পায়ে হেঁটে কয়েক বছর ধরে নানা ধরনের সচেতনতা প্রচারে বেরিয়ে পড়ে ত্রিনাঙ্কুর। জেলা ছাড়িয়ে ভিন জেলাতেও এই কাজ করেছেন তিনি। বর্তমানে ডেঙ্গির ছবিটা উদ্বেগ বাড়াচ্ছে রাজ্যবাসীর, চিন্তায় স্বাস্থ্য দফতরও। এহেন পরিস্থিতিতে তাই ডেঙ্গির মশা সাজার ভাবনা। ঠিক করেছেন, পুজো মরসুমে মণ্ডপগুলিতেও প্রচার চালাবেন। এভাবে, চোখের সামনে ছদ্মবেশি ডেঙ্গির মশা দেখে কিছুটা হলেও হতভম্ব হচ্ছেন অনেকে। পথচলতি মানুষের কাছে তাঁর কয়েকটি সুনির্দিষ্ট বার্তা রয়েছে, 'জল জমতে দেবেন না, রাতে মশারি ব্যবহার করুন। জ্বর হলেই স্বাস্থ্য কেন্দ্রে যোগাযোগ করুন। রক্ত পরীক্ষা করুন।' এই বার্তা নিয়েই হেঁটে চলেছেন ত্রিনাঙ্কুর। তাঁর এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন পথ চলতি প্রত্যেকে। 
এখন যা পরিস্থিতি তাতে এই ধরনের সচেতনতামূলক প্রচারের কার্যকরী হওয়া অত্যন্ত জরুরি। না হলে ডেঙ্গির দাপট নিয়ন্ত্রণে আনতে কালঘাম ছুটবে স্বাস্থ্য প্রশাসনের। জেলার পাশাপাশি খাস মহানগরেও ভয় ধরাচ্ছে ডেঙ্গি। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে ফের পথে নামেন ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ। এদিন যাদবপুরের কাছে কৃষ্ণা গ্লাস ফ্যাক্টরিতে যান কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মীরাও। ১০২ নম্বর ওয়ার্ডে ১২ বিঘা জমির ওপর কৃষ্ণা গ্লাস ফ্যাক্টরি। দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ কারখানায় আগাছার জঙ্গল। পাহাড়-প্রমাণ আবর্জনা জমেছে। ফুটো ছাদ দিয়ে বৃষ্টির জল পড়ে কারখানা চত্বর মশার আঁতুড়ঘরে পরিণত হয়েছে বলে মনে করছে পুরসভা। মশার তেল স্প্রে করার পাশাপাশি, আজ ড্রোন উড়িয়ে খোঁজা হচ্ছে মশার লার্ভা।


আরও পড়ুন:'আগামী দিনে তৃণমূল ছাড়া কোনও দলের পতাকা থাকবে না', বিরোধীদের 'হুঁশিয়ারি' তৃণমূল বিধায়কের