পশ্চিমমেদিনীপুর, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া: মুখ্য নির্বাচন কমিশনার নাসিম জাইদি জানিয়েছিলেন, পশ্চিমবঙ্গ অবাধ ও শান্তিপূর্ণ ভোট করতে তাঁরা বদ্ধপরিকর। জাতীয় নির্বাচন কমিশনের এই প্রতিশ্রুতির পরেও রাজ্যে প্রথম দফার ভোটে বুথে বুথে শাসকের দাপাদাপি! চলল ছাপ্পা ও দাদাগিরি। বাঁকুড়ার তালড্যাংরার ৮৬ নম্বর বুথে প্রিসাইডিং অফিসারের উপস্থিতিতেই চলল তৃণমূলকর্মীর অবাধ ছাপ্পা।ছাপ্পার ছবি ক্যামেরাবন্দি করায়, বুথ থেকে বের করে দেওয়া হল সংবাদমাধ্যমকে! এবিপি আনন্দে এই খবর দেখে, বাঁকুড়ার জেলাশাসকের কাছে রিপোর্ট তলব করে নির্বাচন কমিশন। এদিকে, জেলাশাসকের কাছে ওই প্রিসাইডিং অফিসারকে বহিষ্কারের আর্জি জানিয়েছেন কংগ্রেস সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য। বুথে ঢুকে তৃণমূলের দাদাগিরির ছবি ধরা পড়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরের শালবনিতেও! এখানে তো প্রতিবাদ করলে বিরোধী পোলিং এজেন্টদের আঙুল উঁচিয়ে হুমকিও দেওয়া হয়! অভিযোগ, ১৩৩ ও ১৩৪ নম্বর বুথে ঢুকে ভোটারদের প্রভাবিত করছিলেন স্থানীয় তৃণমূলকর্মী নবিউল্লা পাঠান। অন্যের ভোটার স্লিপ কেড়ে নেওয়ারও চেষ্টা করেন তিনি। বিরোধী এজেন্টরা আপত্তি করতেই বাধে বিপত্তি...সেইসময় এক ভোটারকে দলীয় প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার নির্দেশ দেন আরেক তৃণমূলকর্মী! আপত্তি জানান প্রিসাইডিং অফিসার। শুরু হয় বচসা। বুথের মধ্যে এতকিছু ঘটনা ঘটলেও সেখানকার কেন্দ্রীয় বাহিনী কোনও পদক্ষেপই করেনি! বুথের ভিতরে যখন তৃণমূল কর্মীরা দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন জওয়ানরা তখন ব্যস্ত, ভোটারদের লাইন সামলাতে....যা আদতে করার কথা ছিল লাঠিধারী এক পুলিশ কনস্টেবলের! শেষমেষ অভিযুক্ত তৃণমূলকর্মীকে বুথ থেকে বের করে দেন প্রিসাইডিং অফিসার। বাইরে বেরোনোর পর গোটা ঘটনা নিয়ে ডিগবাজি খান শাসক দলের ওই কর্মী! পশ্চিম মেদিনীপুরের নয়াগ্রামের চাঁদাবিলা এসসি হাইস্কুলের বুথে তখন ভোটগ্রহণ চলছিল। আচমকাই বুথের বাইরের জানলা দিয়ে উঁকি ঝুঁকি মারতে দেখা যায় তৃণমূল প্রার্থী দুলাল মুর্মুকে। যদিও এক্ষেত্রে অবশ্য আপত্তি করেন কর্তব্যরত কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ান। বিরোধীদের দাবি, ভোটারদের প্রভাবিত করার চেষ্টা করছিলেন তৃণমূল প্রার্থী। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তিনি। মেদিনীপুর কেন্দ্রের বেলিয়ার একটি বুথে প্রথমে খোলা জানলার পাশে ইভিএম রাখা হয়েছিল। বাইরে থেকে দেখা যাচ্ছিল ভোটদান প্রক্রিয়া। সংবাদমাধ্যম পৌঁছতেই তৎপর হন ভোটকর্মীরা। বন্ধ করে দেওয়া হয় ইভিএমের পাশের জানলা।