কলকাতা: পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের (Assembly Election 2023) ফলাফল ঘোষণা হবে ৩ ডিসেম্বর। তার আগে, আজ, বৃহস্পতিবার বুথফেরত সমীক্ষার (ABP C Voter Exit Poll 2023) ফলাফল। ভোট বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সমীক্ষা থেকে ৩ ডিসেম্বর কী হতে চলেছে, তার একটা পূর্বাভাস পাওয়া যেতে পারে। তবে একথাও সত্যি যে সব সময় বুথফেরত সমীক্ষার ফলাফল মেলে না। এমনকি সমীক্ষার পূর্বাভাস পুরোপুরি ভুল প্রমাণিত হয়েছে, এমন প্রমাণও অতীত ঘাঁটলে মিলবে। কাজেই মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, ছত্তীসগঢ়, তেলঙ্গানা এবং মিজোরামে বাস্তবে কী হল, সে জন্য ৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত অপেক্ষা করতেই হবে। তবে তার আগে, আজকের এবিপি-সি ভোটারের বুথফেরত সমীক্ষা থেকে ৩ ডিসেম্বরের ছবিটা আন্দাজ করে নেওয়ার চেষ্টা করবেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। 


রাজস্থান...
মরুরাজ্যে এবার কঠিন লড়াইয়ের মুখে অশোক গহলৌতের নেতৃত্বাধীন কংগ্রেস সরকার। যদিও সে কথা মানতে নারাজ কংগ্রেসের বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী। বৃহস্পতিবারও তিনি জানিয়ে দেন, বুথফেরত সমীক্ষা পক্ষে বা বিপক্ষে যে দিকেই যাক না কেন, রাজস্থানে ক্ষমতায় ফিরবে কংগ্রেসই। তাঁর স্পষ্ট দাবি, মরুরাজ্যে কোনও সরকার-বিরোধিতার হাওয়া নেই। দ্বিতীয়ত, যে ভাষায় কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা রাজস্থানে প্রচার সেরেছেন, তা সাধারণ বাসিন্দাদের মোটেও পছন্দ হয়নি। তিন, গহলৌতের মতে, বিজেপি ভোটাররাও একথা মানবেন যে রাজস্থানের উন্নয়নে মুখ্যমন্ত্রী চেষ্টার কোনও ত্রুটি রাখেননি। যদিও রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের প্রশ্ন, মরুরাজ্য়ে গহলৌত বনাম পাইলট দ্বন্দ্বের ফয়দা তোলার কোনও সুযোগ ছাড়বে না বিজেপি। সেই চেষ্টা ভোটবাক্সে কতটা ফলপ্রসূ হয় নাকি কংগ্রেসই ক্ষমতায় ফেরে, সেটাই দেখার।  


মধ্যপ্রদেশ...
বিজেপির শিবরাজ সিংহ চৌহানের মুখ্যমন্ত্রিত্বে মধ্যপ্রদেশে ফের ক্ষমতায় ফেরার আপ্রাণ চেষ্টা চালাবে বিজেপি। বিশেষত, কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গাঁধীর একসময়ের 'বন্ধু' তথা গোয়ালিয়রের রাজ পরিবারের সদস্য জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার কাছে এটি বিজেপিতে নিজের তাৎপর্য প্রতিষ্ঠার লড়াই। অন্য দিকে, ২০১৮ সালে ক্ষমতায় আসার পরও কংগ্রেসকে যে ভাবে কুর্সি হারাতে হয়েছিল, সে স্মৃতি ভোলানোর জন্য গোবলয়ের এই রাজ্যে তাদের জয় অত্যন্ত জরুরি। 


ছত্তীসগঢ়...
সমীক্ষার ফলাফল নিয়ে কিছুটা সংশয় যে থেকেই যায়, সেটা এদিন স্পষ্ট করে দিয়েছেন কংগ্রেসের উপমুখ্যমন্ত্রী টি এস সিংহ দেও। তবে তাঁর ব্যক্তিগত মত, ৯০টি আসনের ৬০টিই পাবে কংগ্রেস। মধ্যপ্রদেশ ও রাজস্থানেও দলের জয় নিয়ে নিশ্চিত তিনি। চিন্তা রয়েছে তেলঙ্গানা নিয়ে।


তেলঙ্গানা...
২০১৮ সালে বিআরএস (তৎকালীন তেলঙ্গানা রাষ্ট্র সমিতি) ১১৯ আসনের মধ্যে ৮৮টা আসন জিতে ক্ষমতায় আসে। তাদের ঝুলিতে গিয়েছিল, ৪৭.৪ শতাংশ ভোট। দ্বিতীয় স্থানে থাকা কংগ্রেস ভোটের শতাংশ ও প্রাপ্ত আসনের নিরিখে তাদের ধারেকাছেও ছিল না। এক দশক ধরে কেসিআরের দলের উপরই আস্থা রেখেছে তেলঙ্গানা। এবার কি সেই ছবি বদলাবে? এর মধ্যে দুর্নীতি মামলায় কেসিআর-কন্যা কে কবিতাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে কেন্দ্রীয় এজেন্সি। সেই ঘটনা-সহ আরও একাধিক অভিযোগে সুর চড়িয়েছিল বিজেপি। শেষমেশ তাতে কতটা লাভ হবে?


মিজোরাম...
এবারের নির্বাচনে দ্বিমুখী লড়াইয়ে পড়তে হয়েছে মুখ্যমন্ত্রী জোরামথাঙ্গার নেতৃত্বাধীন মিজো ন্যাশনাল ফ্রন্টকে। একদিকে ছটি দলের জোট 'জোরাম পিপলস মুভমেন্ট', অন্য দিকে কংগ্রেস। মিজোরামের নির্বাচনে আঞ্চলিক দলগুলির গুরুত্ব অনস্বীকার্য। ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিজেপি-র জোটশরিক এমএনএফ ২৬টি আসনে জয় পেয়েছিল। বিজেপির ভাগ্যে জুটেছিল ১টি আসন। এবার সেই সমীকরণ বদলাতে চাইবে গেরুয়া শিবির। অন্য দিকে কংগ্রেসও ক্ষমতায় ফেরার আপ্রাণ চেষ্টা করবে। শেষ পর্যন্ত কার উপর আস্থা রাখবেন মিজোরামের মানুষ? বলবে সময়। 


আরও পড়ুন:মোদির বিকশিত ভারত সংকল্প যাত্রা, জন ঔষধি কেন্দ্রের সংখ্যা বৃদ্ধির উদ্যোগ