মুম্বই: ভোটের লড়াইয়ে না থাকলেও এল কে আডবাণীই বিজেপির সবচেয়ে বড় নেতা। এমনই মন্তব্য করল বিজেপির শরিক শিবসেনা। এবারের লোকসভা নির্বাচনে গুজরাতের গাঁধীনগর কেন্দ্র থেকে দলের সভাপতি অমিত শাহকে প্রার্থী করেছে দল।  এর আগে আডবাণী এই কেন্দ্র থেকে সাংসদ ছিলেন।


আডবাণীর আসনে অমিত শাহকে প্রার্থী ঘোষণার দুদিন পর শিবসেনার মুখপত্র সামনা-য় সম্পাদকীয় নিবন্ধে মন্তব্য করা হয়েছে যে, ভারতীয় রাজনীতিতে রাজনৈতিক দিক থেকে ‘ভীষ্মাচার্য’ হয়ে উঠেছেন আডবাণী। তাঁর আসনে অমিত শাহ প্রার্থী হয়েছেন। এভাবে আডবাণীকে অবসর নিতে ‘বাধ্য’ করা হল বলে সামনা-য় মন্তব্য করা হয়েছে।

নিবন্ধে বলা হয়েছে, ‘ভারতীয় রাজনীতির ভীষ্মাচার্য হিসেবে পরিচিত আডবাণী। কিন্তু বিজেপির লোকসভা ভোটের প্রার্থীতালিকায় তাঁর নাম নেই। এটা একেবারেই বিস্ময়কর নয়’।

শিবসেনা বলেছে, এই ঘটনা বিজেপিতে আডবাণী জমানার ‘অবসানে’র বিষয়টিই তুলে ধরেছে।

সামনা-র নিবন্ধে বলা হয়েছে, ‘গাঁধীনগর থেকে আডবাণী ছয়বার নির্বাচিত হয়েছেন। এবার অমিত শাহ ওই আসনে প্রার্থী হয়েছেন। এর সহজ অর্থ, আডবাণীকে অবসর নিতে বাধ্য করা হল’।

উল্লেখ্য, ৯১ বছরের আডবাণী কেন্দ্রে মন্ত্রী ও উপ-প্রধানমন্ত্রী ছিলেন।

২০১৪-র নির্বাচনে বিজেপির বিপুল জয়ের পর অমিত শাহ দলের সভাপতি হন। মার্গদর্শকমণ্ডলীর সদস্য করা হয় আডবাণীকে।

শিবসেনা বলেছে, ‘আডবাণী বিজেপির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। প্রাক্তন প্রধামন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ীর সঙ্গে তিনি বিজেপির যাত্রা এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু এখন মোদি ও অমিত শাহ তাঁদের জায়গা নিয়ে নিয়েছেন। প্রবীণ সদস্যরা যে এবার আর কোনও দায়িত্ব পাবেন না, তা নিশ্চিত করতে ইতিমধ্যেই দলের অন্দরে একটা পরিবেশ তৈরি করা হয়েছে’।

সামনা-য় আরও বলা হয়েছে, রাজনীতিতে ‘দীর্ঘ ইনিংস’ খেলেছেন আডবাণী এবং বিজেপির ‘সবচেয়ে বড় নেতা’ই থাকবেন।

উল্লেখ্য, আগামী লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির সঙ্গে জোট বেঁধে লড়ছে শিবসেনা।

সামনা-য় নিবন্ধে বলা হয়েছে, সক্রিয় রাজনীতিতে থাকলেই কোনও নেতা তাঁর সর্বোচ্চ স্থান ধরে রাখেন, এ কথা শিবসেনা বিশ্বাস করে না।

উল্লেখ্য, কংগ্রেসও বিজেপিকে খোঁচা দিয়ে বলেছিল, গাঁধীনগর আসন আডবাণীর কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে।

এ ব্যাপারে কংগ্রেসকেও একহাত নিয়েছে শিবসেনা। দলের মুখপাত্রে প্রকাশিত নিবন্ধে বলা হয়েছে, ‘প্রবীণদের প্রতি সম্মান নিয়ে আর যাই হোক কংগ্রেসের বলা সাজে না। তত্কালীন প্রধানমন্ত্রী নরসিমা রাও, যিনি একটা কঠিন সময়ে সরকারের নেতৃত্ব দিয়েছেন, সেই তাঁকে কংগ্রেস এমনকি মৃত্যুর পরও অসম্মান করেছে’।

এই প্রসঙ্গে সীতারাম কেশরীকে সরিয়ে সনিয়া গাঁধীর কংগ্রেস সভানেত্রী হওয়া ও প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ সামনে রাহুল গাঁধীর একটি অধ্যাদেশের প্রতিলিপি ছিঁড়ে ফেলার ঘটনাও সামনা-র নিবন্ধে উল্লেখ করা হয়েছে।

নিবন্ধে বলা হয়েছে, ‘সারা দেশজুড়ে বিজেপির বিস্তারের ক্ষেত্রে আডবাণীর অবদান রয়েছে। ১৯৯০-র দশকে আডবাণীর রথযাত্রার জন্য বিজেপি সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছতে পেরেছে। আডবাণীর পরিশ্রমের সুফল বিজেপি ভোগ করছে বলেও সামনায় মন্তব্য করা হয়েছে’।