নয়াদিল্লি: BCCI-এর সচিব হওয়া থেকে, তরতর করে সম্পত্তি বৃদ্ধিতে প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে ছেলেকে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের ব্যক্তিগত সম্পত্তিবৃদ্ধির দিকেও লাগাতার নজর রয়েছে রাজনৈতিক মহলের। সেই আবহেই ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের আগে সম্পত্তির খতিয়ান দিলেন গুজরাতের গাঁধীনগরের বিজেপি প্রার্থী শাহ। গত শুক্রবার নির্বাচন কমিশনের কাছে হলফনামা জমা দেন তিনি, তাতে সম্পত্তির খতিয়ান তুলে ধরেছেন। (Amit Shah Assets Declared)


কমিশনকে দেওয়া হলফনামায় শাহ জানিয়েছেন, স্ত্রী সোনালের সঙ্গে যৌথ ভাবে তাঁর মোট সম্পত্তির পরিমাণ ৬৫ কোটি ৬৭ লক্ষ টাকা। গত পাঁচ বছরে তাঁদের সম্পত্তিবৃদ্ধি হয়েছে ৬২.৮৪ শতাংশ। এর মধ্যে, শাহের একার সম্পত্তির বৃদ্ধি হয়েছে ১৭.৭ শতাংশ এবং স্ত্রীর সম্পত্তির বৃদ্ধি ঘটেছে ২১৫ শতাংশ হারে। স্ত্রীর চাকরি বা ব্যবসা করেন বলে আয়ের উৎসে কিছু লেখা নেই। বরং তিনি গৃহবধূই লেখা রয়েছে। (Amit Shah Affidavit)


নির্বাচনী হলফনামায় নিজেকে কৃষক, সমাজকর্মী হিসেবে উল্লেখ করেছেন শাহ। এই নিয়ে দ্বিতীয় বার গাঁধীনগর লোকসভা আসন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তিনি, আগে যা লালকৃষ্ণ আডবাণীর দখলে ছিল। আগামী ৭ মে, তৃতীয় দফায় ভোটগ্রহণ সেখানে। ২০১৯ সালে শাহের মোট অস্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ ছিল ১৮ কোটি ২৪ লক্ষ ৪৬ হাজার ২২৪ টাকার। ২০২৪ সালে শাহের অস্থাবর সম্পত্তি বেড়ে ২০ কোটি ৩৩ লক্ষ ৮২ হাজার ৪৯৩ টাকার হয়েছে।  


২০১৯ সালে শাহের মোট স্থাবর সম্পত্তি ছিল ১২ কোটি ৮৭ লক্ষ ২৫ হাজার ৯৩ টাকার, যা ২০২৪ সালে বেড়ে হয়েছে ১৬ কোটি ৩১ লক্ষ ৭৪ হাজার ৬০ টাকার। সবমিলিয়ে ২০১৯ সালে নিজের মোট সম্পত্তির পরিমাণ ৩১ কোটি ১১ লক্ষ ৭১ হাজার ৩১৭ কোটি টাকা দেখিয়েছিলেন শাহ। এবার তা বেড়ে ৩৬ কোটি ৬৫ লক্ষ ৫৬ হাজার ৫৫৩ কোটি টাকা হয়েছে বলে জানিয়েছে হলফনামায়।


একনজরে অমিত শাহের সম্পত্তির খতিয়ান-



  • শাহের পেশা-কৃষক, সমাজকর্মী

  • শাহের মোট অস্থাবর সম্পত্তি-২০ কোটি ৩৩ লক্ষ টাকা

  • শাহের মোট স্থাবর সম্পত্তি-১৬ কোটি ৩১ লক্ষ টাকা

  • শাহের মোট সম্পত্তি-৩৬ কোটি ৬৫ লক্ষ টাকা

  • শাহের সম্পত্তি বৃদ্ধির হার-১৭.৭ শতাংশ


সোনাল শাহের সম্পত্তির খতিয়ান-



  • সোনালের পেশা-গৃহবধূ

  • সোনালের মোট অস্থাবর সম্পত্তি-২২ কোটি ৪৬ লক্ষ টাকা

  • সোনালের মোট স্থাবর সম্পত্তি-৬ কোটি ৫৫ লক্ষ টাকা

  • সোনালের মোট সম্পত্তি-২৯ কোটি ১ লক্ষ টাকা

  • সোনালের সম্পত্তিবৃদ্ধির হার-২১৫ শতাংশ


মোট হিসেব-



  • ২০১৯ সালে শাহ-দম্পতির মোট সম্পত্তির পরিমাণ ছিল- ৩০ কোটি ৪৯ লক্ষ টাকা

  • ২০১৪ সালে শাহ-দম্পতির মোট সম্পত্তির পরিমাণ- ৬৫ কোটি ৬৭ লক্ষ টাকা। 


শাহের স্ত্রী সোনালের মোট অস্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ ৫ কোটি ৩০ লক্ষ ৮০ হাজার ২৫২ টাকার বলে দেখানো হয়েছিল ২০১৯ সালে, বর্তমানে তা বেড়ে হয়েছে ২২ কোটি ৪৬ লক্ষ ৪৩ হাজার ৩৪০ টাকার। ২০১৯ সালে সোনালের স্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ ৩ কোটি ৯০ লক্ষ ২৩ হাজার ৭৩৮ টাকার বলে দেখানো হয়, তা বর্তমানে বেড়ে ৬ কোটি ৫৫ লক্ষ ১২ হাজার ৬০৫ টাকার হয়েছে বলে হলফনামায় দেখানো হয়েছে। ২০১৯ সালে সোনালের মোট সম্পত্তির পরিমাণ ছিল ৯ কোটি ২১ লক্ষ ৩ হাজার ৯৯০ টাকার, ২০২৪ সালে তা বেড়ে হয়েছে ২৯ কোটি ১ লক্ষ ৫৫ হাজার ৯৪৫ টাকার। ২০১৯ সালে শাহ-দম্পতির মোট সম্পত্তির পরিমাণ ছিল ৩০ কোটি ৪৯ লক্ষ টাকা, বর্তমানে তা ৬৫ কোটি ৬৭ লক্ষ টাকা। 


শাহের সম্পত্তির খতিয়ানে দেখা গিয়েছে, Western Shipyard Ltd, Suzlon Energy Ltd, NMDC Steel Ltd, Tata Teleservices (Mahindra) Ltd, The South Indian Bank, VIP Industries, Vision Organics, TARC Ltd, Prino Chemicals Ltd-এর মতো বেশ কিছু সংস্থায় ১০ হাজারেরও বেশি শেয়ার রয়েছে তাঁর। স্ত্রীর সঙ্গে যৌথ ভাবে শেয়ার বাজারে ৩৭.৪৭ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছেন তিনি, যা তাঁদের মোট সম্পত্তির ৫৭ শতাংশ। শাহের কাছে রয়েছে ৯০০ গ্রাম সোনা, ৭ ক্যারাট হিরে এবং ২৫ কেজি রুপো, যার অধিকাংশই উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া বলে জানানো হয়েছে।


শেয়ার বাজারে নথিভুক্ত এবং নথিভুক্ত নয়, দুই ধরনের সংস্থাতেই বিনিয়োগ করেছেন শাহ দম্পতি। Karur Vysya Bank Ltd-এ ১ লক্ষ শেয়ার রয়েছে সোনালের। TV18 Broadcast Ltd-এ ৪০ হাজার, কানারা ব্যাঙ্কে ৫০০০০, টাটা স্টিলে ৩০৮৯০, আদিত্য বিড়লা ফ্যাশন অ্যান্ট রিটেল লিমিটেডে ২০০০০, NCC Ltd-এ ৩০০০০, Sun Pharma Advanced Research Company Ltd-এ ১৭০০ শেয়ার রয়েছে তাঁর।Adani Wilmar Limited-, বন্ধন ব্যাঙ্ক, ভারতী এয়ারটেল লিমিটেড, Assam Company India Limited, Gujarat Power And Ispat Limited, Larsen and Turbo, LIC India, Reliance Communications Limited, State Bank of India, Vedanta Limited, Zydus Lifesciences Industries Limited,  JIO Financial Services Limited, Ranbaxy Lab. Ltd সংস্থাতেও শেয়ার রয়েছে তাঁর। সোনালের কাছে সোনা রয়েছে ১৬২০ গ্রাম। ৬২ ক্যারাট হিরেও রয়েছে, যার বাজারমূল্য প্রায় ১.১ কোটি টাকা।


গুজরাতের মেহসানা জেলার ভডনাগরে, আমদাবাদের লীলাপুরেও কৃষিজমি রয়েছে। এর পাশাপাশি, আমদাবাদের শিলাজ, গাঁধীনগরের মানসে জমি রয়েছে। সোলা, মেমনগর, তালতেজ, মানস, গাঁধীনগরের সেক্টর ১ এলাকায় শাহের বাণিজ্যিক এবং আবাসিক সম্পত্তিও রয়েছে। সেই নিরিখে সোনালের স্থাবর সম্পত্তি ৬৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।