বীরভূম: কমিশনকে ফের ‘চ্যালেঞ্জ’ অনুব্রতর। শুধু মুখের কথা নয়, কাজেও তা করে দেখালেন অনুব্রত মণ্ডল। তাঁকে নজরবন্দি করেছে কমিশন। নিজের বিধানসভা কেন্দ্র বোলপুরের বাইরে যেতে পারবেন না, এমন নির্দেশও জারি রয়েছে। কিন্তু কোনও কিছুকেই যে, তিনি কেয়ার করেন না, রবিবার ফের বুঝিয়ে দিলেন অনুব্রত। নজরদারি চালাতে গিয়ে রীতিমতো হিমসিম খেতে হল ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটকে।
অনুব্রত দাপিয়ে বেড়ালেন। আর তাঁকে নজরবন্দির দায়িত্ব যাঁর, সেই ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট তারক মল্লিক বাড়ির বাইরে কাচুমাচু মুখ করে দাঁড়িয়ে রইলেন অসহায়ের মতো! ঘড়ির কাঁটায় সাড়ে ১০টা। বাড়ি থেকে সপার্ষদে মোটরবাইকে চেপে ভোট দিতে বেরোলেন বীরভূমের জেলা তৃণমূল সভাপতি। পিছনের গাড়িতে ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট ও কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা।
কিন্তু, সরু গলি হওয়ায় ভোটকেন্দ্রে ঢুকতেই পারল না ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটের গাড়ি। দাঁড়িয়ে রইলেন ভোটকেন্দ্রের বাইরে। যা নিয়ে আজব সাফাইও খাড়া করলেন ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট! বললেন, এত প্রেসের গাড়ি, ফলো করা সম্ভব হয়নি। এমনকী কখন অনুব্রত মণ্ডল ভোট দিয়ে বুথ থেকে বেরিয়ে বোলপুর পার্টি অফিসে পৌঁছে গিয়েছেন, সেটাও জানতে পারলেন না ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট! নজরদারির এতটাই বহর!
অর্থাৎ, বুথে যাওয়ার ফাঁকে অনুব্রত অন্য কোথাও গেলেন কি না, বা বুথে গিয়ে কী করলেন, কিছুই জানতে পারলেন না ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট! এরই মধ্যে বোলপুরে তৃণমূলের পার্টি অফিসে গিয়ে দেখা গেল, সেখানে বসে রয়েছেন অনুব্রত মণ্ডল। বীরভূমের জেলা তৃণমূল সভাপতিকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, আমি ভোট দিতে গিয়েছিলাম, তারপর কন্ট্রোল রুমে এলাম। তাঁর সদর্প দাবি, আমাকে নজরবন্দি করার ক্ষমতা কারও নেই!
তখন অবশ্য তৃণমূলের পার্টি অফিসের বাইরে দেখা মিলল, অনুব্রতর ওপর নজরদারির দায়িত্বে থাকা ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটের। কিন্ত, তৃণমূল অফিসে সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরা ঢুকতে পারলেও, পারলেন না ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট। জানালেন, পার্টি অফিসে ঢোকার অনুমতি নেই।
কমিশনের নজরদারির এই দশা দেখে, বিরোধীদের কটাক্ষ, দিনভর ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটকে কার্যত নাকানিচোবানি খাওয়ালেন অনুব্রত। কমিশনের নজরবন্দীর সিদ্ধান্ত নিয়ে কার্যত ছেলেখেলা করলেন!