রাজীব চৌধুরী, বহরমপুর : ১৩ মে, চতুর্থ দফায় বহরমপুরে ভোট। অধীর চৌধুরীর গড় বহরমপুরে চমক দিয়েছে তৃণমূল। গুজরাতের বরোদার বাসিন্দা প্রাক্তন ক্রিকেটার ইউসুফ পাঠানকে প্রার্থী করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে নিজের গড়ে তিনি যে  কতটা কাছের মানুষ, তার প্রমাণ পাওয়া গেল রবিবার। রবিবার নিজের গড়ে প্রচারে নামেন অধীর চৌধুরী। ভোটের দিন সন্ত্রাস রোখার প্রতিশ্রুতি দেন বহরমপুরের ভোটারদের। আর এদিনই ঘটল একটি অভিনব ঘটনা। 


লোকসভা ভোট। বিরাট খরচ। দেশজুড়ে যখন নির্বাচনী বন্ড থেকে কোন দল কত টাকা পেয়েছে, আর কারা টাকা ঢেলেছে তাই নিয়ে বিতর্ক তুঙ্গে, তখন অধীর চৌধুরীর কাছে 'নির্বাচনী বন্ড' হলেন বহরমপুরের মা-বোনেরা। অধীর চৌধুরীর লোকসভা ভোটের খরচ খরচার জন্য বাড়িয়ে দিলেন সাহায্যের হাত। নিজেদের সামান্য ক্ষমতাতেই  অর্থ সাহায্য করলেন গ্রামের মহিলারা।


রবিবার কান্দির রণগ্রাম থেকে ১১ জন মহিলা তাঁদের সংসার খরচ থেকে একটু একটু করে জমানো জমির ফসল, ছাগল বিক্রির টাকা তুলে দিলেন প্রিয় 'দাদা'র হাতে। কেউ আবার স্বামীর এক দিনের রোজগার তুলে দিলেন কংগ্রেস প্রার্থীর হাতে। গ্রামের মহিলারা তাঁদের সঞ্চয়ের মোট ১১০০০ টাকা তুলে দিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরীর হাতে।



তাঁরা মনে করছেন 'দাদা'র লোকসভা নির্বাচনে কাজে অর্থের প্রয়োজন, সেই জন্যই এই টাকাটুকু দরকার। রণগ্রাম থেকে ১১ জন মহিলাই মূলত রয়েছেন এই উদ্যোগের পিছনে।  তাঁরা প্রত্যেকেই হাজার টাকা করে দেন । এই টাকা হাতে পেয়ে আপ্লুত ও আবেগে ভাসেন অধীর রঞ্জন চৌধুরী। বলেন, 'এটা আমার জীবনের অনেক বড় পাওনা। আমি এসব মা-বোনেদের কথা সারা জীবন মনে রাখব। আমি নিজেকে ধন্য মনে করছি। এটা আমার কল্পনারও বাইরে ছিল। আপনাদের দেওয়া এই দান আমার কাছে চরণামৃত.. কোনও রাজনৈতিক নেতার এই ধরনের সৌভাগ্য হয়েছে কিনা আমার জানা নেই। এটা আমার চরম সৌভাগ্য।'


এদিন প্রচারে নেমে  সন্ত্রাস রোখার আশ্বাস দেন অধীর চৌধুরী। ভোটের দিন সন্ত্রাস রোখার প্রতিশ্রুতি দেন বহরমপুরের ভোটারদের।  এরপরই এদিন বহরমপুর লোকসভা কেন্দ্রের দৌলতাবাদে বোমা বিস্ফোরণে হাত ওড়ে একজনের, যা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'এবারের নির্বাচনে মুর্শিদাবাদের মানুষকে একটা কথা দিয়েছি যে, কোথাও কোনওভাবে বোমা দেখিয়ে, পিস্তল দেখিয়ে বুথ লুঠ করা যাবে না, যাবে না, যাবে না। করতে দেব না।' 


১৯৯৯ সালে প্রথমবার বহরমপুর থেকে জেতেন অধীর চৌধুরী। তারপর থেকেই বহরমপুর তাঁর হাত শক্ত করে রেখেছে। এখন অপেক্ষা ৪ জুনের জন্য । এদিনই জানা যাবে বহরমপুরের মানুষ তাঁদের 'দাদা'র ওপর ভরসা রাখতে পারছে কি না।  


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।