কলকাতা: বঙ্গ বিজেপিকে (BJP) ৩৫ আসনের টার্গেট বেঁধে দিয়ে গিয়েছিলেন অমিত শাহ (Amit Shah)। তবে মোদি (Narendra Modi) এসে সেই টার্গেট আরও বাড়ালেন। ভোটের মুখে নরেন্দ্র মোদি বললেন বিয়াল্লিশে বিয়াল্লিশটি আসনই জিততে হবে। কৃষ্ণনগরের সভা থেকে বাংলায় সব আসনেই জয়ের ডাক দেন প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু এই কাজ কি আদৌ সহজ হবে?
সূত্রের খবর, সভার পর সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Majumdar) ও শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari) সঙ্গে একান্ত বৈঠকে রাজ্য নেতৃত্বের ঐক্যবদ্ধ চেহারা দেখে সন্তোষপ্রকাশ করেছেন মোদি। এ রাজ্যে তৃণমূলের বিরুদ্ধে কীভাবে বিপুল আসনে জিততে পারে বিজেপি সেই রোডম্যাপও কি তৈরি করে দিয়ে গেলেন মোদি। সেই সব প্রশ্নের উত্তর নিয়েই এবিপি আনন্দের মুখোমুখি রাজ্যে বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। এক্সলুসিভ সাক্ষাৎকারে তিনি কী বললেন?
প্রশ্ন: নিজের জয়ের পাশাপাশি এবার টার্গেট ৪২ এ ৪২, ফুল মার্কস কি পাবেন?
সুকান্ত মজুমদার: প্রধানমন্ত্রী আমাদের বলেছেন ৪২ এ ৪২ জয়ের লক্ষ্যে নিতে। আমাদের লক্ষ্য 'বিনা যুদ্ধে নাহি দিব সূচাগ্র মেদিনী'। গোটা পশ্চিমবঙ্গে আগের বার যে আসন পেয়েছিলাম, এবার তার থেকে বেশি আসন পেয়ে প্রধানমন্ত্রীকে উপহার দেবে বঙ্গ বিজেপি।
প্রশ্ন: কোথা থেকে এই আত্মবিশ্বাস পাচ্ছে বিজেপি?
সুকান্ত মজুমদার: বিজেপির বুথের সংখ্যা বেড়েছে অনেকটাই। এর পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে মানুষের উচ্ছ্বাসও চোখে পড়ার মতো। তৃণমূল সরকারের প্রতি মানুষ বীতশ্রদ্ধ। সকলেই দূরে সরে আসছে। আগামী দিনে আরও দূরে সরে যাবে।
প্রশ্ন: কোন কোন ইস্যুকে সামনে রেখে ৪২ আসনের লক্ষ্যে নামবে বিজেপি?
সুকান্ত মজুমদার: দ্বিফলা আক্রমণ। তৃণমূলের দুর্নীতি আর সন্দেশখালির মহিলাদের উপর নির্যাতন। যেভাবে পকেটে পকেটে সন্দেশখালি ও শেখ শাহজাহানদের তৈরি করেছে তৃণমূল। লড়াই এর বিরুদ্ধে চলবে। ১০ বছরে দেশ কোথায় উন্নত হয়েছে, আর রাজ্যের অবস্থা দেখুন। বলা হচ্ছে, মোদিজি না কি বাংলাকে বঞ্চনা করছেন। অথচ গত দু'দিনে কয়েক কোটি টাকা বাংলার একাধিক প্রকল্পের উন্নয়নে ঘোষণা করলেন। এই বিকাশকেই মানুষ দেখবে। এই গ্যারান্টি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। আগামী ৫ বছর বিনামূল্যে রেশন দেওয়ার কথা বলেছেন।
প্রশ্ন: সভা শেষে মোদির সঙ্গে বৈঠক করেন আপনি ও শুভেন্দু অধিকারী, কী ভোকাল টনিক পেলেন প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে?
সুকান্ত মজুমদার: অনেক কিছু নিয়েই আলোচনা হয়েছে যা ক্যামেরার সামনে বলা যাবে না। আমাদের যা উদ্বেগের কারণ ছিল তা প্রধানমন্ত্রীকে জানান হয়েছে। খুব সদর্থক আলোচনা হয়েছে। চোরেদের সাম্রাজ্য কীভাবে আগামীদিনে শেষ করা যায় তা নিয়ে কথা হয়েছে। উনি নিজেও দুর্নীতি খান না, কাউকে খেতেও দেন না। যারা দুর্নীতিতে টাকা নিয়েছেন, আগামী দিনে সেই সব তৃণমূল নেতাদের হাত দিয়েই টাকা ফেরত দেওয়াবে বিজেপি।
প্রশ্ন: তৃণমূলের দাবি সন্দেশখালি তৈরি করেছে বিজেপি, চিত্রনাট্য ভারতীয় জনতা পার্টির?
সুকান্ত মজুমদার: বিজেপি সন্দেশখালিতে ছিলই না। বিজেপির একাধিক পার্টি অফিস ওখানে বন্ধ খোলা যায়নি। বিজেপি ওখানে মহিলাদের সমর্থনে ছিল। আজও আছে। যে নির্যাতন চালিয়েছে তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা তার বিরুদ্ধে বিজেপির লড়াই জারি থাকবে।
প্রশ্ন: ভোট তো আবেগে হয় না সংগঠন দরকার। বিজেপির অন্দরেও নানা ক্ষোভ প্রকাশ্যে এসেছে, টার্গেট পূরণ কঠিন নয়?
সুকান্ত মজুমদার: ২০১৯ এর থেকে এবার বিজেপির সংগঠন অনেক বেশি শক্তিশালী। অনেক বেশি বুথে লড়াই করতে পারব আমরা। প্রার্থী নিয়ে ক্ষোভ বিক্ষোভ আছেই। সেটা সমাধান করছি। তৃণমূলের কোনও স্ট্র্যাকচার নেই। বিজেপি অনেক বেশি শক্তিশালী।