কলকাতা: গরুপাচারকাণ্ডে তিহাড়ে বন্দি অনুব্রত মণ্ডল (Anubrata Mondal)। খাতায় কলমে যদিও এখনও বীরভূমে তৃণমূলের সভাপতি তিনি। তাঁর অনুপস্থিতিতে সেখানে পঞ্চায়েত নির্বাচনে কতটা সুবিধে করতে পারবে তৃণমূল, তা নিয়ে গোড়া থেকেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন অনেকে। দলের অন্দরেও সেই নিয়ে জল্পনা-কল্পনা শোনা গিয়েছিল নানা রকম। কিন্তু বীরভূমে তৃণমূলের জয়ের ধারা অব্য়াহত থাকতে পারে বলে জানা গেল সি ভোটার (Cvoter Exit Poll 2023) সমীক্ষায়। (Exit Poll 2023)
সি ভোটার সমীক্ষার পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বীরভূম জেলা পরিষদের মোট আসন সংখ্যা ৫২। তার মধ্যে তৃণমূলের ঝুলিতে যেতে পারে ৩৪ থেকে ৪৪টি আসন। ৬ থেকে ১২টি আসন পেতে পারে বিজেপি। বাম-কংগ্রেস জয়ী হতে পারে ০ থেকে ৫টি আসনে। এখানে উল্লেখ্য, পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে, ২০২২ সালেই বীরভূমের আসনসংখ্যা বেড়ে ৪২ থেকে ৫২ হয়।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে সেই সনয় রাজ্য নির্বাচন কমিশন যে তালিকা প্রকাশ করে, তাতে বর্ধিত আসনসংখ্যা ৫২ বলেই দেখানো হয়েছিল। জনসংখ্যাবৃদ্ধির নিরিখেই আসনসংখ্যা বৃদ্ধি করা হয় বলে জানানো হয় সেই সময়। এর পাশাপাশি, বীরভূমের ৫০ শতাংশ আসন মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত করার কথাও জানানো হয়েছিল। তফসিলি জাতি এবং উপজাতিদের জন্যও সংরক্ষিত রাখা হয় আসন।
আরও পড়ুন: Cvoter Exit Poll 2023: পুরুলিয়া এবং মুর্শিদাবাদে দৌড়ে এগিয়ে তৃণমূল, বলছে সি-ভোটার সমীক্ষা
এই আসন পুনর্বিন্যাসের আগে পর্যন্ত যদিও বীরভূমে কার্যত একচ্ছত্র আধিপত্য ছিল তৃণমূলের। আর এর মূলে ছিলেন তৃণমূল দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একান্ত অনুগত অনুব্রত। কার্যত একাহাতেই দলের হয়ে বীরভূম আগলে রেখেছিলেন তিনি। বছর বছর পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে 'বিয়াল্লিশে বিয়াল্লিশ' ডাকও শোনা যেত তাঁর গলায়।
কিন্তু সম্প্রতি পরিস্থিতি বদলেছে। গরুপাচার মামলায় গতবছর থেকেই জেলবন্দি অনুব্রত। আসানসোল থেকে তাঁকে মাস কয়েক আগে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় দিল্লির তিহাড় জেলে। অনুব্রতর কন্যা সুকন্যা মণ্ডলও সেখানেই রয়েছেন। পঞ্চায়েত নির্বাচনে অনুব্রতর অনুপস্থিতির মাশুল তৃণমূলকে গুনতে হবে বলে মনে করেছিলেন অনেকেই। যে কারণে বিরোধীদের তরফেও হালফিলে হাঁকডাক বেড়েছে বীরভূমে।
তৃণমূল যদিও আশা ছাড়তে নারাজ। অনুব্রতর অনুপস্থিতিতে নিজের আর এক বিশ্বস্ত, রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকে বীরভূমে প্রচারের দায়িত্বে নিযুক্ত করেন মমতা। দক্ষ হাতে তা সামলেও দিয়েছেন ফিরহাদ। তাতেই নির্বাচনের আগে জেলা নেতৃত্বের একাংশকে বলতে শোনা যায়, অনুব্রত নিজে না থাকলেও, দলের জন্য জায়গা করে দিয়ে গিয়েছেন। তাঁর বোনা বীজেই ফসল তুলবে দল। তবে 'বিয়াল্লিশে বিয়াল্লিশ'-এর মতো 'বাহান্নয় বাহান্ন' করার ডাক তুলতে দেখা যায়নি কাউকে। তা-ও অনুব্রতর অনুপস্থিতির জন্য বলেই মনে করা হচ্ছে। আর তাই অনুব্রতর এই অনুপস্থিতিই বীরভূমে বিরোধীদের জায়গা করে দিতে পারে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। তবে সিভোটারের সমীক্ষা শুধুমাত্রই অনুমানভিত্তিক। ফলাফল বেরোলে তবেই বোঝা সম্ভব বাস্তব সমীকরণ।