নন্দীগ্রাম: ভোটের দিন শুভেন্দু অধিকারীর গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ, নোটিস পাঠাল পুলিশ। 'নন্দীগ্রামের নন্দনায়েকবাড় বুথ ছাড়া অন্য কোথাও যেতে পারবেন না। বুথের মধ্যে থাকতে পারবেন না বিরোধী দলনেতার কোনও নিরাপত্তারক্ষী'। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে নোটিস কাঁথি থানার। 


অন্য পঞ্চায়েত ভোটে পূর্ব মেদিনীপুরের ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে। কোথাও অতিরিক্ত বাহিনী প্রয়োজন হলে, তারও ব্যবস্থা করতে হবে। শুভেন্দু অধিকারীর দায়ের করা মামলায় এই নির্দেশ দিলেন হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি। 



পঞ্চায়েত ভোটের কাউন্টডাউন শুরু। চারপাশে খুনোখুনি, বোমা-বারুদের দাপট গুচ্ছ গুচ্ছ অভিযোগ!শাসক-বিরোধী বাগযুদ্ধে মধ্যগগনে রাজনীতির আঁচ! ঠিক এইরকম পরিস্থিতিতে, 
বিরোধী দলনেতার নিজের জেলায় নির্বাচনী সুরক্ষা নিয়ে বড় নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। পূর্ব মেদিনীপুরের ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে।


কোথাও অতিরিক্ত বাহিনী প্রয়োজন হলে, তারও ব্যবস্থা করতে হবে। বিরোধী দলনেতার দায়ের করা মামলায় এই নির্দেশ দিলেন হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি। অর্থাৎ আদালতে মান্যতা পেল বিরোধী দলনেতার দাবি। নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গ-সহ ৪টি অভিযোগের প্রেক্ষিতে হাইকোর্টে মামলা করেন শুভেনদু অধিকারী। বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের শুনানিতে তাঁর আইনজীবী সওয়াল করেন, গত ৬ জুন, সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী বলে একটি কর্মসূচির ঘোষণা করেন মুখ্যসচিব। যা কার্যকর হয়েছে ৮ জুন থেকে। এর আগে দিদিকে বলো নামে একটি কর্মসূচি চালু করেছিল তৃণমূল। সেখানে যে ফোন নম্বর দেওয়া হয়েছিল, সেই একই নম্বর সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী কর্মসূচিতেও দেওয়া হয়েছে। 


বিরোধী দলনেতার আইনজীবীর প্রশ্ন, রাজনৈতিক দলের দেওয়া ফোন নম্বর কীভাবে ব্যবহার করছে রাজ্য সরকার? রাজ্য নির্বাচন কমিশনের আইনজীবী দাবি করেন, ১৫ জুন, সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহার করা হয়েছে। পরের অভিযোগ ছিল পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপারকে নিয়ে। শুভেনদু অধিকারীর আইনজীবী দাবি করেন,১ জুন তৃণমূলের এক সাংসদের সঙ্গে চণ্ডীপুর থেকে নন্দীগ্রাম পর্যন্ত হাঁটেন পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার অমরনাথ কে! কিন্তু, গোটা জেলায় তৃণমূলের মিছিলের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা ছাড়া কি তাঁর আর কোনও কাজ নেই?



পাশাপাশি বিরোধী দলনেতার তরফে এও অভিযোগ করা হয়, পূর্ব মেদিনীপুরে একাধিক বিস্ফোরণের ঘটনায় পুলিশ সুপার কোনও পদক্ষেপ করেননি! অথচ সবকটির সঙ্গেই শাসকদলের যোগসূত্র ছিল। এর প্রেক্ষিতে, কমিশনের আইনজীবী দাবি করেন, কিছুক্ষণ আগে পূর্ব মেদিনীপুর থেকে ৪টি বাস থেকে অস্ত্র-সমেত দুষ্কৃতীদের আটক করা হয়েছে।এদিন বিরোধী দলনেতার আইনজীবী অভিযোগ করেন,কমিশনের অনুমতি ছাড়াই পূর্ব মেদিনীপুর থেকে ১০ জন পুলিশ আধিকারিককে বদলি করা হয়েছে। আদালতে কমিশনের আইনজীবীর দাবি,



২৪ জুন, ১০ পুলিশ আধিকারিকের বদলি সংক্রান্ত নির্দেশিকা প্রত্যাহার করার নির্দেশ রাজ্য সরকারকে দেওয়া হয়েছে। শুনানি চলাকালীন প্রধান বিচারপতি বলেন,পূর্ব মেদিনীপুর জেলাকে স্পর্শকাতর বলে ঘোষণা করা হয়েছে। রাজ্য নির্বাচন কমিশনের আইনজীবী জানান, পূর্ব মেদিনীপুরের সবটা নয়। কিছু জায়গাকে স্পর্শকাতর বলে ঘোষণা করা হয়েছে।এরপরই প্রধান বিচারপতি, পূর্ব মেদিনীপুরে পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করার নির্দেশ দিতে গিয়ে বলেন, কেন্দ্রীয় বাহিনীর নোডাল অফিসার বিএসএফ-এর আইজির সঙ্গে আলোচনা করে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে কমিশনকে। 



বিরোধী দলনেতার তরফে জলপাইগুড়ির তৃণমূল নেতা দীনেশ মজুমদারের বিরুদ্ধে টাকা বিলির অভিযোগ তোলা হয়েছিল। সেই প্রসঙ্গে কমিশন দাবি করে, আমাদের পাওয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, দীনেশ মজুমদার ভিক্ষুকদের আম বিলি করছিলেন। টাকা বিলির অভিযোগ সঠিক নয়।এই প্রেক্ষাপটে প্রধান বিচারপতি মন্তব্য করেন, দীনেশ মজুমদার হয়তো তাঁর নাতনির জন্মদিন উপলক্ষে এটা করছিলেন।