নয়াদিল্লি: বিচারপতি পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে রাজনীতিতে যোগ দিয়েছেন। পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুকে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে প্রার্থী করেছে বিজেপি। এবার তাঁর প্রার্থী হওয়া নিয়ে আপত্তি তুলল কংগ্রেস। এবিপি আনন্দ-কে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে তাঁর মন্তব্যের প্রেক্ষিতেই অভিজিতের প্রার্থিপদ বাতিলের দাবি তুলেছে তারা। (Abhijit Ganguly)
বিচারপতির পদ ছেড়ে বিজেপি-তে যোগদানের সিদ্ধান্তের পরই এবিপি আনন্দের মুখোমুখি হন অভিজিৎ। প্রশ্নোত্তর পর্বে মহাত্মা গাঁধী না নাথুরাম গডসে, কাকে বেছে নেবেন, জানতে চাওয়া হয় তাঁর কাছে। এর প্রেক্ষিতে অভিজিৎ জানান, এই প্রশ্নের উত্তর এখনই দিতে পারবেন না তিনি। ভাবতে হবে তাঁকে। (Congress on Abhijit Ganguly)
গাঁধী না গডসে, কেন দু'জনের মধ্যে কোনও একজনকে বেছে নিতে পারবেন না জানতে চাইলে অভিজিৎ জানান, আইনের পেশায় যুক্ত থাকার দরুণ কাহিনির অন্য দিকটিও বোঝার চেষ্টা করতে হবে আমাকে। ওঁর (নাথুরাম গডসের) লেখালেখিও পড়তে হবে তাঁকে। বুঝতে হবে, কী কারণে গাঁধীকে খুন করতে উদ্বুদ্ধ করে তাঁকে। যত ক্ষণ পর্যন্ত তা না হচ্ছে, তত ক্ষণ পর্যন্ত কাউকে বেছে নিতে পারবেন না তিনি।
আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের আগে অভিজিতের সেই মন্তব্য তুলে ধরেই আক্রমণ শানিয়েছে কংগ্রেস। দলের সাধারণ সম্পাক জয়রাম রমেশ সোশ্য়াল মিডিয়ায় লেখেন, 'শুধু করুণই নয়, এটা অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয় যে কলকাতা হাইকোর্টের একজন বিচারপতি, যিনি প্রধানমন্ত্রীর আশীর্বাদধন্য হয়ে বিজেপি-র প্রার্থী হতে বিচারপতির পদ থেকে ইস্তফা দেন, তিনি গাঁধী এবং গডসের র মধ্যে থেকে কাউকে বেছে নিতে পারছেন না। এটা একেবারেই মেনে নেওয়া যায় না। যাঁরা মহাত্মা গাঁধীর উত্তরাধিকার কব্জা করার কোনও সুযোগই হাতছাড়া করে না, অবিলম্বে ওঁর প্রার্থিপদ প্রত্যাহার করা উচিত তাঁদের'।
সরাসরি নাম না করলেও, অভিজিৎকে প্রার্থী করা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকেও নিশানা করেন তিনি। নির্বাচনী বন্ড ঘিরে বিতর্কের রেশ টেনে জয়রাম লেখেন, 'জাতির জনককে রক্ষা করতে চাঁদার জনক কী করবেন'?
বিচারপতি থাকাকালীন নিয়োগ দুর্নীতির একের পর এক মামলার তদন্তভার কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার হাতে তুলে দেওয়া থেকে বাংলার তৃণমূল সরকারকে আক্রমণ, বরাবরই খবরের শিরোনামে ছিলেন অভিজিৎ। সেই তিনিই রাজনীতিতে যুক্ত হতে বিচারপতির পদ থেকে ইস্তফা দেন। হাতে তুলে নেন গেরুয়া পতাকা। এর পর রবিবার যে প্রার্থিতালিকা প্রকাশ করে বিজেপি, তাতে তমলুকে প্রার্থী করা হয় তাঁকে। বিচারপতি থাকাকালীন যদিও অভিজিতের প্রশংসাই শোনা গিয়েছিল প্রদেশ কগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরীর মুখে। অভিজিতের মতো মানুষ রাজনীতিতে এলে, তিনি লাইন দিয়ে ভোট দেবেন বলে জানিয়েছিলেন। অভিজিৎ বিজেপি-তে যাওয়ার পর যদিও সুর পাল্টে ফেলেন অধীর। বিজেপি প্রার্থী অভিজিতের টিকিট পাওয়া নিয়ে এবার প্রশ্ন তুলল জাতীয় কংগ্রেস।