শুভেন্দু ভট্টাচার্য, দিনহাটা : মনোনয়ন পর্বে চরম হিংসার ছবি দেখা গেছে। এবার ভোটের আগে চাপা আতঙ্ক রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে। কারণ, একাধিক জায়গা থেকে উদ্ধার হচ্ছে বোমা। তাহলে, কি হিংসার আরও বাকি ? এই আতঙ্কের মধ্যেই কোচবিহারের দিনহাটায় বাম সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থীর বাড়ির সামনে থেকে উদ্ধার হল বোমা। দিনহাটার পুঁটিমারি ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতে ২৫১ নম্বর বুথে কংগ্রেসের প্রার্থী হয়েছেন আসাদুল মিয়া। আজ সকালে তাঁর বাড়ির সামনে বোমা পড়ে থাকতে দেখা যায়। আতঙ্কিত কংগ্রেস প্রার্থী ও তাঁর পরিবার। ভয় দেখাতেই বাম সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থীর বাড়ির সামনে বোমা রাখা হয় বলে অনুমান। 


পরিসংখ্যান বলছে, কোচবিহারে পঞ্চায়েতের মোট আসন ২ হাজার ৫০৭টি। এর মধ্যে ভোটের আগেই ১৫৭-টিতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছে তৃণমূল। এই ১৫৭টি আসনের মধ্যে ৮০টিই দিনহাটায়। অর্থাৎ তৃণমূল বিধায়ক উদয়ন গুহর দিনহাটায় ৫০ শতাংশের বেশি আসন বিনা যুদ্ধেই দখল করেছে তৃণমূল। এর আগে  ২০১৮-র পঞ্চায়েত নির্বাচনে বাংলায় ৩৪ শতাংশ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয় তৃণমূল। বিনা যুদ্ধে ভোটে জেতার স্বাদ আগেও পেয়েছে তৃণমূল। ২০১৮-র ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছে ২০২৩-এও।


এর মধ্যেই উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহর একটি ফেসবুকে পোস্ট ঘিরে তৈরি হয় নতুন বিতর্ক। নিজের বিধানসভা কেন্দ্রে দিনহাটা ২ নম্বর ব্লকে ১২টি গ্রাম পঞ্চায়েতকেই বিরোধী শূন্য করার ডাক দেন উদয়ন গুহ। বিরোধী শূন্য ব্লক চাই, ফেসবুকে লেখেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী। ইতিমধ্যেই দিনহাটা ২ নম্বর ব্লকের ১২টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে ৪টিতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছে তৃণমূল। বাকি ৮টিও যাতে বিনা যুদ্ধেই দখল করা যায়, ১২ জন অঞ্চল সভাপতির কাছে সেই দাবি জানান তৃণমূল বিধায়ক। ফেসবুক পোস্ট নিয়ে বিতর্ক শুরু হতেই উদয়নের সাফাই, নাতি পরীক্ষা দিলে আমি তো ভাল রেজাল্টই চাইব। বিজেপির কটাক্ষ, এভাবে বিরোধী শূন্য করতে করতে একদিন দিনহাটায় তৃণমূলই শূন্য হয়ে যাবে। 


এদিকে দিনহাটারই ভেটাগুড়িতে নিশীথ প্রামাণিকের এলাকায় বিজেপির বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে দিনকয়েক আগে পথে নামে তৃণমূল। কোচবিহার-দিনহাটা রাজ্য সড়ক অবরোধ করেন শাসকদলের কর্মীরা। অবরোধ হঠাতে গেলে পুলিশের সঙ্গে বচসা বাধে তৃণমূল কর্মীদের। তৃণমূলের অভিযোগ, একাধিক প্রার্থীর বাড়িতে গিয়ে হুমকি দেয় বিজেপি। গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। এক তৃণমূল কর্মীকে অপহরণও করা হয় বলে অভিযোগ। প্রতিবাদে পথ অবরোধ।