শুভেন্দু ভট্টাচার্য, কোচবিহার: পঞ্চায়েত ভোটে দুরন্ত ফল।  মোট ৩৪টি জেলা পরিষদ আসনের মধ্যে ৩২টিতে জিতেছে তৃণমূল। বিজেপির দখলে এসেছে ২টি আসন। গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরেও কার্যত তৃণমূলের ঝড় বয়েছে। কিন্তু তারপরেও কি কোনও আশঙ্কায় রয়েছে তৃণমূল? কোচবিহারে দলে ভাঙনের ভয় পাচ্ছেন উদয়ন গুহ? বিশেষ করে দিনহাটায়? এই প্রশ্ন উঠছে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী এবং তৃণমূল নেতা উদয়ন গুহের একটি মন্তব্যে। 


কী বলেছেন উদয়ন?
পঞ্চায়েত ভোটে জয়ী তৃণমূল প্রার্থীদের জয়ের শংসাপত্র দলের ব্লক সভাপতির কাছে জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহ। গতকাল কোচবিহারের দিনহাটায় ২১ জুলাইয়ের প্রস্তুতি সভার মঞ্চ থেকেই তৃণমূলের জয়ী প্রার্থীদের উদ্দেশে এই বার্তা দেন উদয়ন। তিনি বলেন, 'দিনহাটা ব্লক ১-এর বীর যাঁরা আছেন, নব নির্বাচিত পঞ্চায়েত সদস্য, তাঁরা তাঁদের সার্টিফিকেটগুলো অনন্তর হাতে জমা দেবেন। আর দিনহাটা ২ নম্বর ব্লকের যাঁরা পঞ্চায়েত মেম্বার এবং পঞ্চায়েত সমিতির মেম্বার তাঁরা তাঁদের সবার সার্টিফিকেট নিজের নিজের অঞ্চল সভাপতির মাধ্যমে দীপক ভট্টাচার্যের কাছে আজকের মধ্যে জমা করবেন।'


এই ঘটনায় তৃণমূলের দিকে কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছে বিজেপি। কোচবিহার জেলা বিজেপি সভাপতি সুকুমার রায়ের কটাক্ষ, 'শাসকদলের এত ভয়? যারা জয়ী প্রার্থী তাদের সার্টিফিকেট নিয়ে নিতে হবে? তৃণমূলের নীচু তলার কর্মীরা কি উদয়ন গুহর কথা শুনছে না? বিরোধীদের ভয়ের কারণ থাকতে পারে, কিন্তু শাসকদলের কীসের ভয়?' বিজেপির কটাক্ষ, তৃণমূলের নিজেদের কর্মীদের উপর বিশ্বাস নেই। দলবদল আটকানোর চেষ্টা বলে তারা কটাক্ষ করেছে। যদিও বিজেপির দাবি উড়িয়ে দিয়েছে তৃণমূল। 


২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে এই জেলায় বিজেপির কাছে কার্যত পর্যুদস্ত হয়েছিল তৃণমূল। ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটেও জেলায় দুরন্ত ফল করেছিল বিজেপি। কড়া টক্কর হয়েছিল দুই ফুলে। জেলার সাংসদ নিশীথ প্রামাণিক কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী। কিন্তু পঞ্চায়েত ভোটে তৃণমূলের ঝড়ের সামনে কার্যত দাঁড়াতেই পারেনি বিজেপি। যদিও তৃণমূলের বিরুদ্ধে বারবার সন্ত্রাসের অভিযোগ এনেছে বিজেপি। পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়ন পর্ব থেকেই বারবার সন্ত্রাসের ঘটনা সামনে এসেছে এই জেলায়। একাধিকবার বিতর্কিত বক্তব্য রেখে শিরোনামে এসেছেন খোদ উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী উদয়ন গুহ। একাধিকবার রাজনৈতিক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে এই জেলায়। হয়েছে প্রাণহানিও। হিংসার ঘটনার পরে এই জেলাতেই এসেছিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। তা নিয়ে কটাক্ষও করেছিল তৃণমূল। 


আরও পড়ুন: উড়ছে চন্দ্রযান ৩! মাঝ আকাশ থেকে ক্যামেরাবন্দি 'ঐতিহাসিক মুহূর্ত'