রঞ্জিত সাউ, কলকাতা: যাদবপুরের সাংসদ ছিলেন একসময়। তরুণ প্রজন্মকে জায়গা করে দিতে সরে গিয়েছেন এবার। আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে দমদম থেকে সিপিএম-এর প্রার্থী হয়েছেন সুজন চক্রবর্তী (Sujan Chakraborty)। যাদবপুরে বামেরা প্রার্থী করেছে উঠতি নেতা সৃজন ভট্টাচার্যকে (Srijan Bhattacharyya)। এমন পরিস্থিতিতে অনুজপ্রতিম সৃজনকে একা ছাড়লেন না সুজন। যাদবপুরে বাড়ি বাড়ি গিয়ে তরুণ নেতার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিলেন সকলকে। নিজের উত্তরসুরী হিসেবেই কার্যত সুজনের হয়ে প্রচার সারলেন তিনি। (Srijan Bhattacharyya Campaign)


কলকাতায় যে কেন্দ্রের নির্বাচন ঘিরে বাড়তি উৎসাহ থাকে, সেটি হল যাদবপুর। এবার সেখানে সায়নী ঘোষকে প্রার্থী করেছে তৃণমূল। ১০ মার্চ ব্রিগেডে নাম ঘোষণা হওয়ার প্রায় পরমুহূর্ত থেকেই এলাকার ইতিউতি ছেয়ে যায় সায়নীর নামে পোস্টার এবং ব্যানারে। রিকশা, অটোয় মাইক বাজিয়েও জোরকদমে সায়নীর হয়ে প্রচার চলছে। সেই তুলনায় একেবারে অন্য রকম হল বাম শিবিরের প্রচার। (Lok Sabha Elections 2024)


মঙ্গলবার যাদবপুরে বামেদের প্রার্থী, তরুণ মুখ সৃজনের হয়ে প্রচারে নামেন সুজন। প্রচার মিছিলের একেবারে অগ্রভাগেই দেখা যায় তাঁকে। সৃজনকে হাঁটতে দেখা যায় খানিকটা দূরত্ব রেখে, পিছনেই। প্রচারে কার্যতই সৃজনের পথপ্রদর্শকের ভূমিকা পালন করেন সুজন। অলিগলি দিয়ে হাঁটার সময় প্রায় প্রত্যেক বাড়ির সামনেই থমকান সুজন। দরজা খুলে বেরিয়ে আসা বাসিন্দাদের সঙ্গে হাত মেলান। পরিচয় করিয়ে দেন সৃজনের সঙ্গে। 


আরও পড়ুন: Rachana on Locket : 'নিজে কী করছেন, আপনার পার্টি কী করছে ?' রচনার নিশানায় লকেট


যাদবপুরে বামেদের প্রচারের ধরনও এদিন ছিল একেবারে আলাদা। গা-গরম করা স্লোগান নয়, তাঁদের প্রচারবাণী ছিল সম্প্রীতি পক্ষে। সুজন এবং সৃজন যখন একে একে সকলের সঙ্গে পরিচয় সারছেন, পিছন থেকে মাইকে রব ওঠে, "রাম-রহিমকে এক রাখার লড়াই লড়বে কে", "ইনকিলাব জিন্দাবাদ"। ওই স্লোগান মাথায় নিয়েই বৃদ্ধ-বৃদ্ধা, মধ্যবয়সী, স্কুলফেরত বাচ্চাদের কাছে এগিয়ে যান সুজন, এগিয়ে দেন সৃজনকে। 


মঙ্গলে বামেদের এই অন্য রকমের প্রচারের প্রভাবও লক্ষ্য করা যায় স্থানীয়দের মধ্যেও। সুজনকে দেখে রাস্তায় নেমে আসেন বাসিন্দারা। দরজা খুলে চৌকাঠেও দাঁড়িয়েছিলেন অনেকে। কোথাও বাড়িতেই ঢুকে যান সুজন। কোথাও আবার সৃজনকে জয়ের আশ্বাসবাণী দিতে শোনা যায় এক বৃদ্ধাকে। প্রবীণে-নবীন জুটির এই প্রচারে সাড়া মেলায় বাড়তি উৎসাহ লক্ষ্য করা যায় কর্মী-সমর্থকদের মধ্যেও। 


এদিন কালিবাজার থেকে প্রচার শুরু করেন সুজন এবং সৃজন। তরুণ নেতাকে এগিয়ে দিয়ে সুজন বলেন, "যাদবপুরকে সৃজনশীল করে তুলতে সৃজনকে জেতানো প্রয়োজন।" কবীর সুমন, মিমি চক্রবর্তী বা সুগত বসু নন,  প্রয়োজনে মানুষের পাশে থাকবেন, এমন নেতা চান যাদবপুরবাসী, মত সুজনের। জয় নিয়ে এদিন আত্মবিশ্বাস ঝরে পড়ে সৃজনের গলাতেও। বামেদের জন্য যাদবপুরকে তিনি পুনরুদ্ধার করতে পারবেন বলে আশাবাদী তিনি। মহিলাদের শুধুমাত্র ভোটের বোড়ে হিসেবে না দেখে, তাঁদের জন্য প্রকৃত উন্নয়নের কাজ করতে হবে বলে মত তাঁর।