নয়াদিল্লি: নির্বাচনী আদর্শ আচরণ বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে বিজেপি এবং কংগ্রেসকে নোটিস ধরাল নির্বাচন কমিশন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং রাহুল গাঁধীর বিরুদ্ধে ঘৃণাভাষণ এবং বিভাজনমূলক মন্তব্যের অভিযোগ জমা পড়েছিল কমিশনে কাছে। সেই মতো বৃহস্পতিবার দুই দলকে নোটিস ধরিয়েছে কমিশন। বিজেপি-র সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডা এবং কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গেকে ২৯ এপ্রিল সকাল ১১টার মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে। (Election Commission)
নড্ডাকে পাঠানো চিঠিতে কমিশন জানিয়েথে, তারকা প্রচারকরা সর্বভারতীয় স্তরে উচ্চমানের বার্তা দেবেন বলেই আশা থাকে। কিন্তু নির্বাচনী উত্তাপে কখনও কখনও চ্যুতি-বিচ্যুতি ঘটে যায়। নড্ডাকে কমিশন জানিয়েছে, দলের সমস্ত তারকা প্রচারককে মর্যাদার কথা স্মরণ করাতে হবে। কংগ্রেস, সিপিআই এবং সিপিআই (এমএল)-এর তরফে জমা পড়া অভিযোগের জবাব দিতে বলা হয়েছে নড্ডাকে। (Lok Sabha Elections 2024)
রাজস্থানের বাঁশওয়ারায় সম্প্রতি বিতর্কিত মন্তব্য করতে শোনা যায় মোদিকে। কংগ্রেস ক্ষমতায় এলে মা-বোনেদের সোনাদানা, গলার মঙ্গলসূত্র ছিনিয়ে নিয়ে বেশি সংখ্যক সন্তানের জন্ম দেওয়া সম্প্রদায়ের মধ্যে বিলিয়ে দেবে বলে অভিযোগ করেন তিনি। শুধু তাই নয়, দেশের সম্পদের উপর মুসলিমদের অগ্রাধিকার দেওয়ার পক্ষপাতী কংগ্রেস, এমন দাবিও করেন মোদি।
বিশেষ সম্প্রদায়কে নিশানা করে মোদির এই মন্তব্য শুধুমাত্র বিভাজনমূলকই নয়, তিনি আসলে ঘৃণাভাষণ দিয়েছেন বলে অভিযোগ ওঠে। বিরোধী শিবিরের রাজনৈতিক দলগুলি কমিশনের কাছে দ্বারস্থ হয় যেমন, তেমনই মোদির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করতে কমিশনের কাছে আর্জি জানান হাজার হাজার মানুষ। এখনও পর্যন্ত মোদির বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করেনি কমিশন। বরং সেই নিয়ে নোটিস ধরানো হল নড্ডাকে।
অন্য দিকে, খড়্গেকে ধরানো নোটিসে কমিশন জানিয়েছে, দলের তারকা প্রচারকদেরমর্যাদার কথা স্মরণ করাতে হবে। বিজেপি-র তরফে রাহুলের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ জমা পড়েছিল, নোটিসে সেটিকেও যুক্ত করেছে কমিশন। সম্প্রতি কেরলের কোট্টায়মে নির্বাচনী সভায় বক্তৃতা করেন রাহুল। সেখানে তিনি জানান, কেরলের মানুষ মলয়ালি ভাষাতেই সুখ-দুঃখ ভাগ করে নেন পরস্পরের সঙ্গে। কিন্তু মোদি গোটা দেশে একটি মাত্র ভাষা, একটি মাত্র ধর্ম রাখচে চান। তামিলদের তামিল ভাষায় কথা না বলতে বলা, কেরলের মানুষকে মলয়ালি ভাষায় কথা বলতে না দেওয়ার অধিকার কে দিয়েছে মোদিকে, প্রশ্ন তোলেন রাহুল। সেই নিয়ে রাহুলের বিরুদ্ধে বিভাজনমূলক মন্তব্যের অভিযোগ তোলে বিজেপি। যদিও মোদির বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ এবং রাহুলের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের মধ্যে বিস্তর ফারাক বলে মত কংগ্রেস সমর্থকদের। চাপের মুখে পড়েই মোদির পাশাপাশি রাহুলকে নিয়েও কংগ্রেসকে কমিশন নোটিস পাঠিয়েছে বলে দাবি তাঁদের।