নয়াদিল্লি: 'হ্যাটট্রিক' হল বটে, কিন্তু কণ্টকহীন জয়ের স্বাদ কি পেলেন নরেন্দ্র দামোদরদাস মোদি? ২০১৪, ২০১৯ সালের পর ২০২৪ সালেও বারাণসী থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জিতলেন তিনি। কিন্তু প্রাপ্য ভোটের হারে পতন স্পষ্ট । ২০১৯ সালে যেখানে তাঁর প্রাপ্ত ভোটের হার ছিল ৬৩.৬২ শতাংশ, সেখানে এবার ৫৪.২৪ শতাংশ ভোট পেয়েছেন বিজেপি নেতা।
বিশদ...
২০১৯ সালের পর এবারও তাঁর উল্টো দিকে দাঁড়িয়েছিলেন কংগ্রেস নেতা অজয় রাই। লক্ষণীয় বিষয়, গত বার যেখানে কংগ্রেস প্রার্থীর প্রাপ্ত ভোটের হার ছিল ১৪ শতাংশ, সেটি এবার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪০.৭৪ শতাংশে। পাঁচ বছরের মধ্যে কী ভাবে বদলে গেল ছবিটা? নিজের নির্বাচনী কেন্দ্রেই মোদির প্রাপ্ত ভোটের হারে এমন ধসের কারণ কী? বিশ্বনাথ মন্দিরের করিডোর হোক বা একাধিক সরকারি প্রকল্পের উদ্বোধন, বারাণসীর ব্যাপারে উপুরহস্ত ছিল মোদি-সরকার। তার পরও কেন সাড়া মিলল না? কেউ কেউ বলছেন, সমাজবাদী পার্টি এবং কংগ্রেসের মধ্যে যে আসন সমঝোতা হয়েছে, তারই ফল মিলেছে হাতেনাতে। ওই আসন-সমঝোতার ফলেই বারাণসী থেকে এবার কোনও প্রার্থী দেয়নি সমাজবাদী পার্টি।
তবে সার্বিক ভাবেই এবারের লোকসভা ভোটগণনায় এনডিএ-কে কড়া টক্কর দিয়ে গিয়েছে ইন্ডিয়া। বিশেষত, ২০১৪ এবং ২০১৯ সালের হতাশাজনক ফলাফলের পর এবার সেঞ্চুরির দোরগোড়ায় পৌঁছে যাওয়া কংগ্রেসের পারফরম্যান্স অনেকেরই টনক নড়িয়ে দিয়েছে। গণনা একেবারে শেষ পর্বে দেখা যাচ্ছে, 'ইন্ডিয়া' জোট এগিয়ে রয়েছে ২৩১টি আসনে, ২৯৪টি আসনে এগিয়ে এনডিএ। আলাদা ভাবে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার ধারেপাশে যেতে পারেনি বিজেপি। অল্প কথায় বলতে হলে, এবার মোদি-শাহ ঝড় ধাক্কা খেয়েছে দিকে দিকে। মোদির ডেপুটি গাঁধীনগর থেকে বিপুল ব্যবধানে জিতে ভাবমূর্তির কিছুটা রক্ষা করলেন বটে, কিন্তু স্বয়ং ক্যাপ্টেনের ভোটের হার কমায় বিজেপি যে অস্বস্তির মুখে পড়তে চলেছে সেটা স্পষ্ট।
মোদির এক্স-পোস্ট...
আগের দু-দফার নিরিখে দলের তথা এনডিএ-র পারফরম্যান্স যে লক্ষণীয় ভাবে খারাপ হয়েছে, সে ব্যাপারে অবশ্য একটি শব্দও নিজের এক্স হ্যান্ডেলে উচ্চারণ করেননি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বরং, এনডিএ-র উপর তৃতীয় বার আস্থা রাখার এই ধারাকে ভারতের ইতিহাসের স্মরণীয় মুহূর্ত বলে পোস্ট করেছেন তিনি। শুভেচ্ছা জানিয়েছেন সাধারণ মানুষকে। ভালও কাজ করে যাওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। কিন্তু এত সহজে অস্বস্তির কাঁটা কি ঝেড়ে ফেলতে পারবেন তিনি? উন্নয়নের জোয়ারের যে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল, সাধারণ মানুষ কি তা গ্রহণ করেননি? নাকি গুরুত্বহীন হয়ে গিয়েছে রামমন্দির-ইস্যু?