কলকাতা: পঞ্চায়েত ভোট (Panchayat Election) ঘিরে লাগামছাড়া সন্ত্রাসে বড়সড় প্রশ্নের মুখে পড়েছেন রাজ্য় নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিন্হা (Rajib Sinha)! এবার তাঁর সমালোচনায় সরব হলেন স্বয়ং রাজ্য় নির্বাচন কমিশনেরই প্রাক্তন আইনজীবী! ২০১৩ সালের পঞ্চায়েত ভোট ও তৎকালীন রাজ্য নির্বাচন কমিশনার মীরা পাণ্ডের (Meera Pandey) কড়া মনোভাবের প্রসঙ্গও স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন প্রাক্তন অ্যাডভোকেট জেনারেল জয়ন্ত মিত্র।


আগেই প্রাক্তন অ্যাডভোকেট জেনারেল জয়ন্ত মিত্র বলেছেন, 'যদি খামতি না থাকত, তাহলে এত রক্তক্ষয় হতো না। উনি যদি সমস্তটা জিনিস প্রপারলি অর্গানাইজ করতেন তাহলে এই জিনিসটা হত না।' পঞ্চায়েত ভোট ঘিরে এরাজ্য়ে যে হিংসা, হানাহানি এবং মৃত্য়ুর ছবি দেখা গেছে। তাতে বড়সড় প্রশ্নের মুখে পড়েছেন রাজ্য় নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিন্হা।'


পঞ্চায়েত ভোটের দিন ঘোষণার পর থেকে একের পর এক মামলা হয়েছে কলকাতা হাইকোর্টে। শুভেন্দু অধিকারীর দায়ের করা জনস্বার্থ মামলায়, রাজ্য নির্বাচন কমিশনের হয়ে সওয়াল করেছেন প্রাক্তন অ্যাডভোকেট জেনারেল জয়ন্ত মিত্র। এবার সেই তিনিই রাজ্য় নির্বাচন কমিশনারের ভূমিকা নিয়ে সরব হলেন। তিনি আরও বলেছেন, 'আমি পরে সরে গিয়েছিলাম ওখান থেকে। আমি অ্যাপেয়ার করেছিলাম ইলেকশন কমিশনের হয়ে, আমার পক্ষে বিশেষ কিছু বলা উচিত নয়। আমার মতে এই জিনিসটা এড়ানো যেত।'


২০১৩ সালের পঞ্চায়েত ভোট ও তৎকালীন রাজ্য নির্বাচন কমিশনার মীরা পাণ্ডের কড়া মনোভাবের প্রসঙ্গও স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন প্রাক্তন অ্যাডভোকেট জেনারেল জয়ন্ত মিত্র। তিনি বলেন, 'আমাদের রাজ্যে যেটা ঘটছে তার জন্য আমাদের মাথা লজ্জায় হেঁট হয়ে যাচ্ছে। মীরা পান্ডে সুস্থ পরিবেশে ইলেকশন করার জন্য যা করার প্রয়োজন সেটা তিনি করেছিলেন, যখন তিনি দেখলেন তিনি বাধা পাচ্ছেন তিনি আদালতের দ্বারস্থ হন। আদালতের নির্দেশ কেউ অমান্য করতে পারবে না, আদালত অবমাননার ভয়ে, সেজন্য কেউ করতে পারেনি। কিন্তু এটা যদি এই নির্বাচনে হত তাহলে এত রক্ত ক্ষয় হত না। প্রথমত কেন্দ্রীয় বাহিনী অনেক আগে আনা উচিত ছিল। নির্বাচন কমিশনের গলায় কেউ বেড়ি পরিয়ে রাখতে পারবে না। আজ যা পরিস্থিতি এটা অনেক দিনের কর্মফল।'


মাত্র এক দফায় পঞ্চায়েত ভোট ঘোষণা থেকে শুরু করে। কেন্দ্রীয় বাহিনী ঠেকাতে আদালতে আদালতে মামলা নিয়ে রাজ্য় নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিন্হার নিন্দায় সরব হয়েছে বিভিন্ন মহল। একই সুর শোনা গেছে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি রঞ্জিতকুমার বাগের মুখেও। আগেরদিনই তিনি বলেছেন, 'আমাদের নির্বাচন কমিশনার সিভিল সার্ভিসের লোক। তিনি যদি শাসকদলের হয়ে কাজ করে আর একজন সিভিল সার্ভেন্ট যিনি আইন মেনে কাজ করবেন, তাদের কাজের মধ্যে পার্থক্য হবে এটাই স্বাভাবিক।'


পঞ্চায়েত ভোট-হিংসায় ৩৯ দিনে প্রাণ চলে গেছে ৫৫ জনের। এতগুলো মানুষের প্রাণের দায় কে নেবে? এখন সেই প্রশ্ন তুলছে স্বজনহারা পরিবারগুলো।


আরও পড়ুন: ভোট দিতে গিয়ে 'গলাধাক্কা', নিউটাউনেই এমন অভিজ্ঞতা! ক্ষোভ বাসিন্দাদের