কৃষ্ণেন্দু অধিকারী, নিউটাউন: কলকাতা লাগোয়া বর্ধিষ্ণু এলাকা। আর সেখানেই, পঞ্চায়েতে ভোট না দিতে পারার আক্ষেপ বাসিন্দাদের মধ্যে। জ্যাংড়া হাতিয়ারা ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের ৯০ শতাংশ ভোটারই এবারের পঞ্চায়েতে ভোট দিতে পারেননি বলে দাবি বাসিন্দাদের।
সারি সারি বহুতল, ঝাঁ চকচকে রাস্তা, শপিং মল, কর্পোরেট অফিস। এসব নিয়েই নিউটাউন! যেখানকার অধিকাংশ বাসিন্দাই বিত্তবান! কিন্তু, গোটা রাজ্য জুড়ে যে ভোটে যে সন্ত্রাসের অভিযোগ উঠেছে। নিউটাউনেও একই ছবি ধরা পড়েছে। পঞ্চায়েত ভোট দিতে না পেরে ক্ষোভ ছড়িয়েছে বাসিন্দাদের গলায়। পঞ্চায়েত ভোট হয়ে গিয়েছে,ফলও বেরিয়ে গিয়েছে। কিন্তু এখনও ভোট দিতে না পারার আক্ষেপ কুঁড়ে কুঁড়ে খাচ্ছে ওই এলাকার বাসিন্দাদের।
জায়গাটি জ্যাংড়া হাতিয়ারা ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত। ৮ জুলাই ভোট হয়েছে এখানেও। স্থানীয় একটি কলেজে ছিল ভোটের বুথ। কিন্তু অভিযোগ, এলাকার একটি বড় অংশ ভোটই দিতে পারেননি। কেমন ছিল ভোটের দিনের অভিজ্ঞতা? কেন্দ্রীয় সরকারের প্রাক্তন টেলিকমিউনিকেশন অফিসার শ্রীদাম ঘোষ থেকে ব্যাঙ্কের অবসরপ্রাপ্ত আধিকারিক সন্তুপদ মজুমদার। দুজনেই ১০ বছর ধরে এই এলাকার বাসিন্দা। ভোটের দিনের অভিজ্ঞতার নিরিখে দুজনেই একই জায়গায় দাঁড়িয়ে। দুজনেরই অভিযোগ, বহিরাগতদের দাপটে তাঁরা বুথমুখো হতে পারেননি সেদিন। জ্যাংড়ার হাতিয়ারা (২)-এর ভোটার শ্রীদাম ঘোষ বলছেন, 'যেতেই দিল না বুথ অবধি। সব অপরিচিত মুখ।' এর আগেও কী এমন অভিজ্ঞতা হয়েছে? ওই এলাকার ভোটার সন্তপদ মজুমদার বলেন, '১৩ সাল থেকে আছি। এই প্রথম ২ বার গিয়ে ঘাড় ধাক্কা খেয়ে ফিরে এসেছি।' একই অভিজ্ঞতা, লেখক পুষ্পল মুখোপাধ্যায় এবং ব্যবসায়ী স্বপন সাহারও। বুথে গিয়েও ভোট দিতে পারেননি। অভিযোগ সেই তৃণমূলের বিরুদ্ধেই। পুষ্পল মুখোপাধ্যায় বলেন, 'উন্নয়ন দাঁড়িয়ে আছে নিউটাউনে। এই লুম্পেন তৃণমূলের জন্য ভোট দিতে পারলাম না।'
ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ুয়া অগ্নিশ ব্রহ্ম। এখনও, ভোটার তালিকায় নাম ওঠেনি তাঁর। কিন্তু, বাবা ভোট দিতে পারেননি তাঁর বাবা। অগ্নিশ বলেন, 'বাবা ভোট দিতে পারেনি। তৃণমূলের গুণ্ডারা এসে বলল বাড়িতে ঢুকে যান। বেরোতে দেওয়া হয়নি।' কলকাতার উপকন্ঠেই এমন ভোট হওয়ায় ফের ভোট করানোর বাসিন্দা জানিয়েছেন তাঁরা।
তৃণমূল বিধায়ক সব্যসাচী দত্ত বলেন, 'নিউটাউনে যাঁরা বড় বড় বাড়িতে থাকেন তাঁরাই বলেছেন আমরা এত বড় বড় বাড়িতে থাকি আমরা কেন পঞ্চায়েত হব। তাঁরাই তো ভোট বয়কট করেছেন।' তৃণমূল সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদার বলেন, 'মুখ থাকলে কথা বলতেই পারে। সাংবিধানিক অধিকার। ওঁরা যথাযথ ভাবে অভিযোগ করুন না।'
আরও পড়ুন: সরকারি চাকরির প্রস্তুতি নিচ্ছেন? চলতি সপ্তাহে কোন কোন চাকরির দিকে নজর রাখবেন?