কলকাতা: গতকাল সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রোলড হতে হয়েছিল তাঁকে। নানা মিম ধেয়ে এসেছিল তাঁর দিকে। নেটদুনিয়ার বাসিন্দারা কটাক্ষ ছুঁড়ে দিয়েছিলেন। খুব কম সময়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্নেহভাজন দেবাংশু টিকিট না পাওয়ায় বিস্ময়প্রকাশ করেছিলেন অনেকেই। যাঁকে ঘিরে এত হইচই, সেই দেবাংশু ভট্টাচার্য্য নাকি রাজনীতি থেকে দূরে সরে যেতে পারেন বলে অনেকে কটাক্ষ করেছিলেন। সত্যিই কি তাই? সত্যিই কি টিকিট না পেয়ে হতাশ দেবাংশু? সোশ্যাল মিডিয়া নানা জল্পনায় যতই হইচই করুক, বিন্দুমাত্র বিচলিত মনে হল না দেবাংশুকে। এবিপি লাইভকে জানালেন, ‘সবটাই গুজব।’


আজই প্রকাশ পেয়েছে বিজেপির প্রার্থীতালিকা। হাইভোল্টেজ নন্দীগ্রাম কেন্দ্রে এবার সম্মুখসমরে মমতা বন্দ্যোপা দেবাংশু ভট্টাচার্য্য নাকি রাজনীতি থেকে দূরে সরে যেতে পারেন বলে অনেকে কটাক্ষ করেছিলেন। সত্যিই কি তাই? সত্যিই কি টিকিট না পেয়ে হতাশ দেবাংশু? সোশ্যাল মিডিয়া নানা জল্পনায় যতই হইচই করুক, বিন্দুমাত্র বিচলিত মনে হল না দেবাংশুকে। এবিপি লাইভকে জানালেন, ‘সবটাই গুজব।’


এবার নির্বাচনে নজরে নন্দীগ্রাম। মুখোমুখি ডুয়েলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও শুভেন্দু অধিকারী। কতটা কঠিন হতে চলেছে সেই লড়াই? দেবাংশু বলছেন, ‘মহিষাসুর যদি মা দুর্গাকে বিরুদ্ধে গণেশকে লড়াই করতে বলেন, সেটা মহিষাসুরের মুর্খামি। গণেশ মা দুর্গারই সৃষ্টি। বিজেপি যদি ভাবে শুভেন্দু অধিকারীকে দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হারানো সম্ভব তাহলে তারা মুর্খের স্বর্গে বাস করছে। আর খারাপ লাগছে শুভেন্দু অধিকারীর কথা ভেবে কারণ ওকে বিজেপি বলির...বানাল। উনি যদি হেরে যান ওনার রাজনৈতিক কেরিয়ার শেষ হয়ে যাবে। বিজেপিও জানে ও জিতবে না। আর শুভেন্দু অধিকারী হেরে গেলেই ওকে দলে রাখার আর কোনও দায় থাকবে না বিজেপির। তারপর নারদা-সারদার কেসগুলো চালাতে পারবে। বিজেপি কী গেম খেলল শুভেন্দু অধিকারী তা বোঝেননি। ভোটের রেজাল্টের পর ক্ষমাপ্রার্থনার চিঠি লিখে শুভেন্দুবাবুকে নবান্ন থেকে কালীঘাট ছুটোছুটি না করতে হয়। ’


পূর্ণাঙ্গ তালিকায় নাম নেই। টিকিট না পেয়ে কি হতাশ দেবাংশু? ‘দল কখনও আমায় টিকিট দেওয়ার কথা দেয়নি।’ স্পষ্ট উত্তর দেবাংশুর। বললেন, ‘সবটাই গুজব। আমি বালির ছেলে। আসলে বৈশাখী ডালমিয়া বিজেপিতে যোগদানের পর খুব সরলীকরণ করে দেওয়া হয়েছিল বিষয়টা। মনে করা হয়েছিল সেই স্থানটা আমি পূরণ করব। কিন্তু দলের অভ্যন্তরে এমন কোনও কথা হয়নি। আমিও কখনও দলের কাছে টিকিট চাইনি। ২০১৯ সালে দলে যোগ দেওয়ার পর আমার কাজই ছিল দলকে একেবারে তৃণমূলস্তর থেকে শক্তিশালী করা। সেইসঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে দিদির কাজের কথা সবার কাছে ছড়িয়ে দেওয়া। টিকিট পাওয়ার কোনও কথা আমার ছিল না। হতাশা নিরাশার কোনও প্রশ্নই নেই।’


সোশ্যাল মিডিয়ায় দেবাংশুর টিকিট না পাওয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে একাধিক রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব।  ‘আমার খারাপ লাগছে বিরোধী দলগুলোর কথা ভেবে যারা সোশ্যাল মিডিয়ায় আমার টিকিট না পাওয়া নিয়ে নেতিবাচক প্রচার চালাচ্ছেন। তৃণমূলের প্রার্থীতালিকা প্রকাশের দিনই সিপিএম-এর প্রার্থীতালিকা প্রকাশ হয়েছে। সেই সমস্ত খবর ছাপিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় শুধু দেবাংশু আর দেবাংশু। আমি নিজেকে সেই জায়গায় নিয়ে যেতে পেরেছি এটাই আমার কাছে ভালোলাগার ব্যাপার। আর ভাবছি, একটা টিকিট না পাওয়া ছেলেকে নিয়ে এত প্রচার, টিকিট পেলে না জানি কী হত..’ হাসতে হাসতে উত্তর দেবাংশুর।


দল নির্বিশেষে সবার মুখে মুখে এখন ফিরছে একটাই স্লোগান, খেলা হবে। সেই স্লোগানের শুরু হয়েছিল দেবাংশুরই হাত ধরে? যুব তৃণমূল নেতা বলছেন, ‘উত্তরবঙ্গে গিয়ে ৬ জানুয়ারি আমি  শ্যুটিং করেছিলাম ‘খেলা হবে’-র। ৭ জানুয়ারী সেটা সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট হয় আর তারপরেই ভাইরাল। খেলা হবে কথাটাকে স্লোগান বানিয়েছিলাম আমিই।রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কবিতা থেকে অনুপ্রেরণা পেয়ে লিখেছিলাম খেলা হবে।


আগামীকাল ব্রিগেডে সভা করতে আসছেন নরেন্দ্র মোদি। একাধিকবার বাংলায় এসে প্রচার চালাচ্ছেন অমিত শাহ। দেবাংশুর, ‘দিল্লি থেকে কালীঘাটের বাড়িতে বাটি হাতে ভিক্ষা করতে আসছেন অমিত শাহ।’


সামনেই হাইভোল্টেড নির্বাচন, তাই আপাতত প্রচারই পাখির চোখ দেবাংশুর। এবিপি আনন্দকে স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন সেই কথাই।