সুনীত হালদার, হাওড়া : আর কদিনের মধ্যেই দেশজুড়ে শুরু হচ্ছে ভোট যুদ্ধ।  জাতীয় নির্বাচন কমিশন লোকসভা ভোটের নির্ঘণ্ট প্রকাশ করতেই নড়েচড়ে বসেছে রাজনৈতিক দলগুলি। আর এই ভোটের লড়াইয়ে অন্য এক মাত্রা যোগ করেছে দলগুলির নানা রঙের পতাকা। আর এখন হাওড়ার কারখানাগুলিতে পতাকা তৈরির কারিগরদের ব্যস্ততা তুঙ্গে। কারণ নির্দিষ্ট সময়ে দলগুলির অর্ডার অনুযায়ী সরবরাহ করতে হবে দলীয় পতাকা।


ভোর থেকে রাত পর্যন্ত ঘরঘর শব্দে কারখানায় চলছে সেলাই মেশিন। হাওড়ার উনসানিতে পতাকা তৈরির কারখানাগুলিতে এখন নাওয়া খাওয়ার সময় নেই কারিগরদের। রোজার সময়ে ভোর রাতে খাওয়া দাওয়ার পর সেলাই মেশিনের সামনে বসে পড়ছেন কারিগররা। টানা কাজ করছেন বিকেল পর্যন্ত। নামাজের পর ফের কাজে বসা। তৃণমূল, সিপিএম, কংগ্রেস, বিজেপি এবং আইএসএফ দলের বিভিন্ন সাইজের পতাকা তৈরি করছেন কারিগররা। তবে সবচেয়ে বেশি চাহিদা ২০ ইঞ্চি লম্বা ১৫ ইঞ্চি চওড়া এবং ৩০ ইঞ্চি লম্বা ২০ ইঞ্চি চওড়া সাইজের পতাকার। এছাড়াও ৪২ ইঞ্চি লম্বা এবং ৩০ ইঞ্চি চওড়া সাইজের পতাকাও তৈরি হচ্ছে। হাওড়ার কারখানা থেকে সেইসব পতাকা চলে যাচ্ছে কলকাতা সহ বিভিন্ন জেলায়।


মালদহ, মুর্শিদাবাদ, বীরভূম, হুগলি, হাওড়া, পূর্ব মেদিনীপুর ছাড়াও কলকাতার বড়বাজারে পতাকা যাচ্ছে সবথেকে বেশি। সেখান থেকেই রাজ্যের প্রায় সব প্রান্তেই ছড়িয়ে পড়ছে হাওড়ায় তৈরি রঙিন পতাকা। এখানকার কারিগররা জানালেন, এর আগে পঞ্চায়েত ভোটে তাঁরা ভালো বরাত পেয়েছিলেন। আবার লোকসভা ভোট দিন ঘোষণার পর কাজের চাপ বেড়েছে। ফলে নাওয়া খাওয়ার সময় পাচ্ছেন না। এক কারখানার মালিক রাজু হালদার বলেন,  তার কারখানায় ১৪ জন শ্রমিক কাজ করছেন। সব রাজনৈতিক দল তাদের পতাকা তৈরির বরাত দিয়েছে। তবে তুলনায় তৃণমূলের পতাকা খুবই কম। রাজুর দাবি, এখন তৃণমূল কংগ্রেস বাইরের রাজ্য থেকে পতাকা আনায় বেশি, তাই তাদের বরাত আগের থেকে অনেক কম। তবে অন্য রাজনৈতিক দলগুলির অর্ডার প্রায় একই আছে। 


আরও পড়ুন : 


'আমাদের ঠকতে দেখেই কি এই ভাবনা ওর?' চোখের কোণে জল 'বোকা হতে চাওয়া' ছেলেটার মায়ের


লোকসভা  নির্বাচনের আগে মোটা লাভের মুখ দেখছেন কারখানার মালিকরা। আর কারিগররাও বাড়তি আয়ের আশায় পতাকা সেলাই করে চলেছেন। সামনে ঈদ, হাতে বাড়তি টাকা এলে তারাও ভালভাবে উৎসবে সামিল হতে পারবেন, আশা এটুকুই।  রাজনৈতিক দলগুলির প্রচার কার্যে দলীয় পতাকা তো থাকবেই। তাই ভোটের আগে নানা  রঙের পতাকার চাহিদা তুঙ্গে।  গণতন্ত্রের উৎসবে অন্যভাবে সামিল কারিগররাও।