প্রকাশ সিন্হা, রানা দাস, সুদীপ চক্রবর্তী, কলকাতা : ভোটের আবহে আরও বিপাকে কালীঘাটের কাকু। সুজয় কৃষ্ণ ভদ্রর কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ নিয়ে দীর্ঘ টানবাহানা চলার পর অবশেষে ৩ জানুয়ারি মধ্যরাতে নাটকীয়ভাবে সুজয়কৃ্ষ্ণর কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ করেছিল ED। আর লোকসভা ভোট শুরুর ঠিক প্রাক্কালে চাঞ্চল্যকর দাবি করল ইডি। সংগৃহীত নমুনা ও সুজয়কৃ্ষ্ণ ভদ্রর কণ্ঠস্বর একেবারে মিলে গিয়েছে। ফরেন্সিক রিপোর্টে মোবাইল ফোন থেকে সংগৃহীত ভয়েস ক্লিপিং-এর সঙ্গে মিলে গিয়েছে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রর কণ্ঠস্বর। ED সূত্রে এমনই দাবি। আর তারপরই আরও একবার নিয়োগ দুর্নীতি ইস্যু ও কালীঘাটের কাকুর যোগ নিয়ে সরব হয়েছে বিজেপি। 


সেন্ট্রাল ফরেন্সিক ল্যাবের সেই রিপোর্ট ইতিমধ্যেই তাদের হাতে পৌঁছেছে।  ED সূত্রে খবর, এই সংক্রান্ত একটি বিস্তারিত রিপোর্ট আদালতে জমা দিতে চলেছে তারা। 


কী আছে এই অডিও ক্লিপে ?


আদালতে দাঁড়িয়ে ইডি-র আইনজীবী দাবি করেছিলেন,  সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রর ফোনের একটি রেকর্ডিং তাঁদের হাতে এসেছে। গ্রেফতারির ঠিক আগে, সেই কথোপকথনে তিনি কাউকে নির্দেশ দিচ্ছিলেন, মোবাইল ফোন থেকে তথ্য় মুছে ফেল। ED আসতে পারে। কালীঘাটের কাকুর ফোন কীভাবে ED ট্য়াপ করল, তা নিয়ে সেদিন আদালতে তীব্র আপত্তি তুলেছিলেন সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রর আইনজীবীরা। কিন্তু, পাল্টা ED-র অফিসাররা নথি দিয়ে দেখান, তাঁরা সমস্ত নিয়ম মেনেই ফোনে নজর রেখেছেন। সেই নথি দেখে বিচারকও সনতুষ্ট হন।  কিন্তু সেই কণ্ঠস্বর কাকুরই কি না, তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য কালীঘাটের কাকুর কণ্ঠস্বরের নমুনার দরকার ছিল। কিন্তু তা নিয়ে বিস্তর টালবাহানা হয়। অবশেষে তা সম্ভব হল। 


ভাইপোর কপালে দুঃখ আছে : শুভেন্দু অধিকারী 


এই নিয়ে আক্রমণ শানিয়েছেন বঙ্গের বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। কটাক্ষ করলেন, 'ভাইপোর কপালে দুঃখ আছে'! পাল্টা বলতে ছাড়লেন না অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও।  'যাঁর সঙ্গে কথা হয়েছিল, তিনি কি গ্রেফতার হয়েছেন?' তিনি আরও বলেন, 'ED যদি কোনওরকম কোনও দাবি করে থাকে, ED জানাবে কোর্টে। আর আমি তো লড়ছি সুপ্রিম কোর্ট, হাইকোর্টে। ED ক্ষমা চেয়েছে সুপ্রিম কোর্টে আমাকে এয়ারপোর্টে আটকেছে বলে। ED-কে ক্ষমা চাইতে হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে, এটা মাথায় রাখবেন।' 


নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে ধরা পড়ার আগেই সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে কালীঘাটের কাকু জানান, 'আমি লিপস অ্য়ান্ড বাউন্ডসে চাকরি করি। আমার সাহেবের নাম অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্য়ায়। ওকে ছুঁতে পারবে না, তাই আমায় ডাকছে' । তারপর থেকেই তদন্তকারীদের নিশানায় কালীঘাটের কাকু ও লিপস অ্যান্ড বাউন্ডস।  এখন, কাকুর কণ্ঠের চাবি দিয়ে, নিয়োগ দুর্নীতির কোন কোন তালা খুলবে, সেটাই দেখার। 


আরও পড়ুন : 


গণতন্ত্রের শ্রেষ্ঠ উৎসবের মঞ্চে প্রথম দফায় ষোলোশোরও বেশি প্রত্যাশীর ভাগ্য নির্ধারণ সাড়ে ষোলো কোটিরও বেশি মানুষের হাতে